আবনা ডেস্ক: ইরানের কাশান অঞ্চলের অদূরে আমিরুল মু’মিনিন হযরত আলী (আ)’র এক পুত্রের মাজারে এসে এক চীনা যুবক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। কাশানের ‘অরান ও বিদগেল’ নামক শহরে কয়েক দিন আগে এই ঘটনা ঘটেছে।
শুদুশন নামের ওই চীনা যুবক ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে পরিচিতি অর্জনের পর হযরত মুহাম্মাদ হেলাল বিন আলীর পবিত্র মাজারে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর নিজের অনুভূতির কথা জানাতে গিয়ে ওই চীনা পর্যটক বলেছেন, এখন আমার জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু হল।
শুদুশন কিছুকাল আগে ইরানের ইস্পাহান প্রদেশ এবং অরান ও বিদগেল শহর সফর করেন। তিনি অরান ও বিদগেল শহরে এসে হেলাল বিন আলী (আ)’র পবিত্র মাজারে স্থানীয় জনগণের ধর্মীয় রীতি-নীতি পর্যবেক্ষণ করেন
২৩ বছর বয়স্ক এই নওমুসলিম চীনা যুবক নিজের নতুন নাম রেখেছেন মুহাম্মাদ আলী ।
মহান আল্লাহ’র ওপর ভরসা করার বিষয় ও বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা)’র পবিত্র আহলে বাইতের প্রতি এ অঞ্চলের জনগণের গভীর ভালোবাসা এবং মহানবীর (সা)’র পবিত্র বংশধরদের ওয়াসিলা ধরে মুনাজাত করার বিষয়গুলো তাকে মুগ্ধ করেছে। চীনে ফিরে যাওয়ার সময় তিনি নিজ পরিবারের জন্য সবচেয়ে ভালো উপহার হিসেবে পবিত্র কুরআনের একটি কপি সংগ্রহ করেছেন।
[মুহাম্মাদ আওসাত (মধ্যম মুহাম্মাদ) তথা হেলাল বিন আলী ছিলেন বিশ্বনবী (সা)’র মেয়ের ঘরের নাতনীর পুত্র। অন্যদিকে তিনি সরাসরি হযরত আলী (আ)’র পুত্র। তিনি হেলালে আলী বা মুহাম্মাদ হেলাল নামেও খ্যাত ছিলেন। (হেলাল শব্দের অর্থ নতুন চাঁদ)। তার মা ছিলেন হযরত আলী (আ)’র স্ত্রী ইমামা বিনতে জাইনাব। ইমামা বিনতে জাইনাব ছিলেন রাসুলের (সা) মেয়ে হযরত জাইনাবের (স্বামী আবুল আ’স বিন রাবি’ইর) কন্যা। হযরত ফাতিমা জাহরা (সা)’র ওসিয়ত অনুযায়ী তাঁর মৃত্যুর পর ইমামা বিনতে জাইনাবকে বিয়ে করেন হযরত আলী (আ)। হেলালের জন্ম হয়েছিল পয়লা রমজান ১৪ হিজরি। মারা যান ৬৪ হিজরির ২৮ রমজান।
কথিত আছে, কারবালার ঘটনার সময় তিনি তায়েফে ছিলেন। পরে ভাই ইমাম হুসাইন (আ) ও তাঁর মহান সঙ্গীদের শাহাদতের খবর শুনে কারবালায় আসেন। সেখানে কিছুকাল শোক প্রকাশের পর হিজরত করে ইরানের তুসে আসেন। কিন্তু বিশ্বনবীর (আ) আহলে বাইতের বিদ্বেষী উমাইয়া শাসকগোষ্ঠী তাকে এবং আহলে বাইতপন্থীদের দমনের উদ্যোগ নেয়। এ অবস্থায় তার এক ভাই শাসকগোষ্ঠীর চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধে শহীদ হন এবং তিনি ইরানের নানা স্থানে আশ্রয়ের সন্ধানে ঘুরতে ঘুরতে অরান ও বিদগেল অঞ্চলে আসেন। এ অঞ্চলের এক এলাকায় বিশ্বনবীর (সা) একজন সাহাবি (যিনি ২০০ বছর হায়াত পেয়েছিলেন) হেলাল বিন আলীকে অতিথি হিসেবে সমাদর করেন। হযরত আলীর (আ) অনুসারী এই সাহাবির নাম ছিল বাবা ইয়াকুব (রা)। এ অঞ্চলে তিন বছর ধরে ধর্ম প্রচারের পর মারা যান হেলাল বিন আলী।] #