বাঙ্গালী
Sunday 24th of November 2024
0
نفر 0

দানবীর হাজি মুহাম্মদ মহসিনের অতুলনীয় অবদান

দানবীর হাজি মুহাম্মদ মহসিনের অতুলনীয় অবদান

আবনা ডেস্ক: দানবীর হাজি মুহাম্মদ মহসিনের নাম আমরা কে না শুনেছি। দানশীলতার কারণে তিনি আজও কিংবদন্তিতে এবং বর্তমানেও দানের ক্ষেত্রে তুলনা অর্থে তাঁর দৃষ্টান্তই ব্যবহার হয়ে থাকে। প্রায় তিনশত বছর পরও যার অবদান আমাদের সামনে দৃশ্যমান রয়েছে, চট্টগ্রামের হাজি মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, হুগলির মহসিন কলেজসহ আজও তাঁর দানের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
সেই দানবীর হাজি মুহাম্মদ মহসিনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৮১২ সালের ২৯ নভেম্বর মৃত্যু বরণ করেছিলেন উপমহাদেশের এই দানবীর।
উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, মুহাম্মদ মহসিন ১৭৩২ সালে হুগলিতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা হাজি ফয়জুল্লাহ ও মা জয়নাব খানম। ফয়জুল্লাহ ছিলেন একজন ধনী জায়গিরদার। তিনি ইরান থেকে বাংলায় এসেছিলেন। জয়নব ছিলেন ফয়জুল্লাহর দ্বিতীয় স্ত্রী। জয়নবেরও পূর্বে বিয়ে হয়েছিল। মন্নুজান খানম নামে তার ও তার সাবেক স্বামী আগা মোতাহারের একটি মেয়ে ছিল। আগা মোতাহারও বিপুল সম্পদের মালিক ছিলেন। হুগলি, যশোর, মুর্শিদাবাদ ও নদীয়ায় তার জায়গির ছিল। আগা মোতাহারের সম্পত্তি তার মেয়ে মন্নুজান উত্তরাধিকার সূত্রে অর্জন করেছিলেন। ১৮০৩ সালে মন্নুজানের মৃত্যুর পর মহসিন তার উত্তরাধিকারী হিসেবে সম্পদের মালিক হন।
গৃহশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে মহসিন ও তার সৎ বোন মন্নুজান শিক্ষার্জন করেছেন। পরবর্তীতে উচ্চ শিক্ষার জন্য রাজধানী মুর্শিদাবাদ যান। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি দেশভ্রমণে বের হন। সফরকালে তিনি হজ পালন করেন। এ সময় তিনি মক্কা, মদিনা, কুফা, কারবালাসহ ইরান, ইরাক, আরব, তুরস্কসহ নানা স্থান সফর করেছেন। সফর শেষে দীর্ঘ ২৭ বছর পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফেরার পর তিনি তার বিধবা বোনের সম্পদ দেখাশোনা শুরু করেন।
বোনের মৃত্যুতে তার সম্পদের মালিক হন মহসিন । কিন্তু একজন ধার্মিক এবং সহজ-সরল জীবনের অধিকারী মহসিন সেই সম্পদ নিজে ভোগ করলেন না। সিদ্ধান্ত নিলেন মানুষ এবং মানবতার কল্যাণে ব্যয় করার। তাছাড়া তিনি ছিলেন চিরকুমার। তাই বংশধরদের জন্যও তার কোনো ভাবনা ছিল না।
১৭৬৯-৭০ সালের দুর্ভিক্ষের সময় তিনি অনেক লঙ্গরখানা স্থাপন করেন এবং সরকারি তহবিলে অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। ১৮০৬ সালে তিনি মহসিন ফান্ড নামক তহবিল প্রতিষ্ঠা করে তাতে দুইজন মোতাওয়াল্লি নিয়োগ করেন। ব্যয়নির্বাহের জন্য সম্পত্তিকে নয়ভাগে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে তিনটি ভাগ ধর্মীয় কর্মকাণ্ড, চারটি ভাগ পেনশন, বৃত্তি ও দাতব্য কর্মকাণ্ড এবং দুইটি ভাগ মোতাওয়াল্লিদের পারিশ্রমিকের জন্য বরাদ্দ করা হয়।
হুগলির হুগলি মহসিন কলেজ ও চট্টগ্রামের সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় মহসিনের ওয়াকফকৃত অর্থ ব্যবহৃত হয়, তার পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠে দৌলতপুর মুহসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এছাড়াও মহসিন ফান্ডের অর্থে অসংখ্য দরিদ্র ছাত্রদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে এখনও। ঢাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঘাঁটির নাম বিএনএস হাজি মহসিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হলের নামও তাঁর স্মরণেই রাখা হয়েছে।
হাজি মুহাম্মদ মহসিন ১৮১২ সালে হুগলিতে ইন্তেকাল করেন। তাকে হুগলি ইমামবাড়ায় দাফন করা হয়।

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

গাজা উপত্যকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ...
অবশেষে গ্রিসের রাজধানীতে মসজিদ ...
ইরান-পাকিস্তান গ্যাস পাইপ লাইন ...
শিয়া মাযহাব গ্রহণ করলেন ...
পরীক্ষার খাতায় মায়ের গল্প লিখে ...
মিশরের ইখওয়ানুল মুসলিমিনের ...
দানবীর হাজি মুহাম্মদ মহসিনের ...
বিশ্ব কুদস দিবস উপলক্ষে ঢাকায় ...
ইসলাম বিদ্বেষীরা শিয়া-সুন্নি ...
প্রাণভিক্ষার আলোচনা করতে ছেলেকে ...

 
user comment