‘উম্মী’শব্দের তিনটি সম্ভাব্য অর্থ প্রসিদ্ধ। প্রথম অর্থ যে কারো নিকট পাঠ শিক্ষা করে নি,দ্বিতীয় অর্থ যে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেছে এবং সেখান হতে উত্থিত হয়েছে। তৃতীয় অর্থ হলো যে সাধারণ এক জাতির মধ্য হতে কিয়াম করেছে। যদিও ‘উম্মী’শব্দের উপরোক্ত তিন অর্থই গ্রহণীয় তদুপরি প্রথম অর্থটি অধিকতর মানানসই ও প্রসিদ্ধ। কারণ নবী (সা.) কোন কিছু লিখতেন না বা পড়তেন না যা পবিত্র কোরআনের সূরা আনকাবুতের ৪৮ নং আয়াতে উল্লিখিত হয়েছে-وَمَا كُنتَ تَتْلُو مِن قَبْلِهِ مِن كِتَابٍ وَلَا تَخُطُّهُ بِيَمِينِكَ ۖ إِذًا لَّارْتَابَ الْمُبْطِلُونَ “আপনি তো এর পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করেন নি এবং স্বীয় দক্ষিণ হস্ত দ্বারা কোন কিতাব লিখেন নি। এরূপ হলে মিথ্যাবাদীরা অবশ্যই সন্দেহ পোষণ করত।”
তৎকালীন আরবে অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন লোকের সংখ্যা খুব কমই ছিল। তাই নবী যদি কোন শিক্ষকের কাছে লিখন ও পঠন শিক্ষা লাভ করতেন তাহলে সকলেই তা জানত। এ কারণেই এ বিষয়টি তাঁর ‘উম্মী’হবার পক্ষে প্রমাণ।
এ আয়াতটি নবুওয়াতের পূর্বের কথা বললেও ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত যে,নবী (সা.) নবুওয়াতের পরও কারো নিকটেই লিখন ও পঠন শিক্ষা লাভ করেন নি।
অনেকে লিখন ও পঠন শিক্ষা লাভ না করার সঙ্গে অশিক্ষিত হবার বিষয়টি গুলিয়ে ফেলেন ও ‘উম্মী’শব্দটির অর্থ করে থাকেন ‘অশিক্ষিত’। কিন্তু এ দু’য়ের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে।
হতে পারে নবী (সা.) ঐশীভাবে লিখতে ও পড়তে জানতেন। কারণ এরূপ জ্ঞান নিঃসন্দেহে তাঁর নবুওয়াতের অন্যতম পূর্ণতা বলে বিবেচিত হবে। আমাদের ইমামদের হতে এ সম্পর্কিত যথেষ্ট হাদীস বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু তাঁর নবুওয়াতের বিষয়ে যেন কোন সন্দেহের সৃষ্টি না হয় এজন্য তা করতেন না। (জ্যোতি ১ম বর্ষ,৪র্থ সংখ্যা)