কয়েক শতাব্দী ধরে খোনসারের কাসবে বড় জ্ঞানী এবং ব্যাক্তিত্বকে সমাজের জন্য নিযুক্ত করেছেন। মৃত আয়াতুল্লাহ আগা জামাল খোনসারী ( রা.হ ) , মারহুম আয়াতুল্লাহুল উযমাহ সৈয়দ মহাম্মাদ তাকী খনসারী ( রা.হ ) , মারহুম আয়াতুল্লাহুল উযমাহ সৈয়দ আহমাদ খোনসারী ( রা.হ ) এবং আরো কয়েক হজার বড় বড় মওলানা যা ইরানের এই অঞ্চল হতে ছিল। উস্তাদ হুসাইন আনসারিয়ান ও এই শহরেই ১৮ আবান ১৩২৩ শামসীয়ে কামারীতে জন্ম গ্রহণ করেন। উনার পিতা হাজ শেখের বংশ হতে ছিলো। এই বংশ একটি প্রসিদ্ধ এবং দীনের খেদমত কারীর মধ্যে হতে আছে। অনেক প্রসিদ্ধ উলামা ( মওলানা ) এই বংশে দেখা যায়। মারহুম আয়াতুল্লাহুল উযমাহ শেখ মুসা আনসারিয়ান (খোনসারী) ( রা.হ )ও এই বংশ হতে ছিল। যার জ্ঞান এবং মাযহাবী ব্যাক্তিত্ব হওয়া কার কাছে গোপন নাই। মারহুম আয়াতুল্লাহুল উযমাহ ইমাম খোমেনী ( রা.হ) বলতেনঃ শিয়া মাযহাবে সর্ব উত্তম বই নামাযের সম্পর্কে (শিয়া ফিকেহ কিতাবে সালাত ) , মারহুম আয়াতুল্লাহ আনসারিয়ান লিখেছেন। উনি আরো বই লিখেছিলেন যার তার মধ্যে একটি বই মানিয়াতুত তালেব যা আয়াতুল্লাহ নায়েনীর সঙ্কলন বক্তৃতা। নাযাফের কাতেবাহতে উলামাদের বিশ্বাস ছিলো যে মারহুম আয়াতুল্লাহুল উযমাহ ইস্ফাহানীর মৃত্যুর পর উনার তাকলিদ করা যাবে কিন্তু জিবন তার সাথ দিলো না এবং উনি মারহুম আয়াতুল্লাহুল উযমাহ ইস্ফাহানীর পূর্বেই মৃত্যু বরন করেন। উস্তাদ মাতা একই শহরের সৈয়দ মোস্তফায়ী বংশ থেকে ছিলেন। উস্তাদের নানা এই শহরের প্রসিদ্ধ ব্যক্তি এবং আমানতদারী প্রখ্যাত ছিল এবং যখনি কোন উলামা নাজাফ অথবা কুম থেকে খোনসারে গেলে উনার বাড়ীতে ও যেতেন। উস্তাদ নিজের তিন বৎসরের ঘটনা সরণ করে বলেনঃ একবার মারহুম আয়াতুল্লাহুল উযমাহ সৈয়দ মহাম্মাদ তাকী খোনসারী ( রা.হ ) আমার নানার বাড়ীতে এসেছিলেন। আমি রুমে প্রবেশ করে সোজা মারহুম আয়াতুল্লাহ খোনসারীর কোলে বসে গেলাম, আমার নানা উঠে এলেন আমাকে নিয়ে ভিতরে মহিলাদের মধ্যে যাবেন তখন মারহুম আয়াতুল্লাহ খোনসারী উনাকে নিষেধ করলেন এবং আমাকে নিজের কোলে বসিয়ে নিলেন এবং আদর করতে লাগলেন এবং উনি আমার থেকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ বড় হয়ে কি করবা ? আমি উত্তর বল্লামঃ আমি চায় আপনার মতন হতে , উনি সেই সমাই আমার জন্য দোয়া করলেন। যখনি ঐ ঘটনা আমার সরণ পরে উনার নুরানি চেহরা এবং উনার দোয়া আমার সরণে চলে আসে তো আমার জিবনের উত্তম সমই ফিরে আসে। উস্তাদ আনসারিয়ান যখন তিন বৎসরের ছিলেন তখন উনার পিতা মাতা তেহরানে শিফট হয়ে গেছিলেন , এবং তিনি একটি মাযহাবী এলাকায় যার নাম খিয়াবানে খোরাসান ছিল। ঐ সমায় সেইখান কার জ্ঞানী ব্যাক্তি মারহুম আয়াতুল্লাহ হাজ শেখ আলী আকবর বুরহানী ( রা.হ ) ছিলেন। উস্তাদ শিশু কাল থেকেই উনার জ্ঞান হতে লাভবান হয়েছেন। উস্তাদ কয়েক বার তার সম্পর্কে বলেছেনঃ " মলানাদের মধ্যে হতে উনার মতন কোন মলানা এখন পর্যন্ত আমি দেখিনি। আয়াতুল্লাহ বুরহান এক জন জ্ঞানী আলেম ও মজতাহিদ ছিলেন সেই সমাই তিনি লুরের মসজিদের ইমামে জামাত ছিলেন তিনি মসজিদকে এমন ভাবে শৃঙ্খলাই নিয়ে এসেছিলেন যে বৃদ্ধ ও যুবক সবাই মসজিদে আসতে পছন্দ করত এবং তিনি এই কাসাবাই একটি মাদরাসা বানালেন এবং ছাত্ররা প্রথম কেলাস হতে উনার আন্ডারে তারবিয়াত পেলো। আয়াতুল্লাহ আনসারিয়ান মারহুম আয়াতুল্লাহ বুরহান সম্পর্কে এইরূপ বলেন আমি কয়েকবার কেলাসে এবং মেম্বারের মাধ্যমে উনার থেকে শুনেছি যে উনি কখন তেহরানে যাওয়া পছন্দ করেন না এবং তেহরানে উনাকে দাফন করা হোক , এবং এই বিষয়টি উনার জন্যে দোয়ার অংশ হয়েগেছিল এবং তিনি শবে ক্বাদরের রাত্রেও এই দোয়া করতেন । ১৩৩৭ শা. তখন আমি ১৪ বসরের ছিলাম উনি হজ করতে গেছিলেন এবং জাদ্দার রাস্তায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন আর উনাকে মা হযরত হাওয়ার মাযারের নিকতে দাফন করা হল। উনার নুরানি চেহরা এবং উনার জীবনের ধরন ও তরিকা উস্তাদের জিবনে অনেক প্রভাব রাখে যে এখন পর্যন্ত উনার না হওয়ার উস্তাদ নিজের ভিতরে অনুভাব করেন। শিশু কাল থেকেই আয়াতুল্লাহ আনসারিয়ান মহান ব্যাক্তিত্বদের সাথে অন্তরঙ্গ ছিল। উস্তাদ আয়াতুল্লাহ আনসারিয়ান দুইটি দীনি মাদ্রাসায় ( তেহরান ও কুমে ) পড়াশুনা করেছেন এবং আরাবি গ্রামার শেষ করার পর হযরত আয়াতুল্লাহ মির্জা আলী ফালসাফির নিকটে আসলেন এবং তিনি সেই সমায় আয়াতুল্লাহ বুরহানির পরে লুর মসজিদের পেশ ইমাম ছিলেন, এবং উনার থেকে অনুরোধ করলাম আমাকে মুয়ালেমুল উসুল প্রাইভেটে পড়ানোর জন্যে। উস্তাদ সেখানে লোমাতায়ন শেষ করার পর। কুমে পড়ার জন্যে উনার থেকে অনুমতি চায়লেন আয়াতুল্লাহ মির্জা আলী ফালসাফিও উস্তাদকে অনুমতি দিলেন কুমে পড়ার জন্যে। উস্তাদ আয়াতুল্লাহ আনসারিয়ান উনাকে নসিহত করার জন্যে বললেন তখন তিনি মহানবী ( সা.) এর হাদিস বর্ণনা করলেনঃ ( من کان للہِ کان اللہُ لہُ ) উস্তাদ আয়াতুল্লাহ আনসারিয়ান বলেনঃ সেই দিনের পরে আমি সর্বদা চেষ্টা করি আল্লাহ্র সাথে থাকতে এবং মহান আল্লাহ্ও আমার সাথে থাকুক , যে কেউ আল্লাহ্র সাথে হবে মহান আল্লাহ্ও তার সাথে হবেন। উস্তাদ আয়াতুল্লাহ আনসারিয়ান কুমের হাওযাতেও তেহরানের মতন বড় উলামাদের সাথে সম্পর্কিত ছিলেন । এই কারনে মারহুম আয়াতুল্লাহ হজ আব্বাস তেহরানী ( রা.হ ) উনার সাথে দেখা করলেন এবং উনার থেকে উপকারিত হন । এইভাবে মারহুম হজ জনাব হুসাইনে ফাতেমী ( রা.হ ) আখলাকের ক্লাসেও উপস্থিত হন এবং সেই সম্পর্কে বলেনঃ আয়াতুল্লাহ ফাতেমী প্রায় আখলাকের ক্লাসে নিজেও ক্রন্দন করতেন এবং উনার ছাত্ররাও ক্রন্দন করত । উচ্চ পরিমানের পড়াশোনা শেষ করার পর ইস্তেম্বাতে ফিকহ ও উসুলের পরে দারসে খারিজ পড়া শুরু করলেন পড়ার এই অংশয় বিভিন্য মারজায়ে দিনীর নিকট যেমন মারহুম আয়াতুল্লাহ সৈয়দ মুহাম্মাদ মহাক্কিকে দামাদ ( রা.হ ) আয়াতুল্লাহ মুন্তাযারী , মারহুম আয়াতুল্লাহ হজ শেখ আবুল ফাযল নাজাফী খোনসারী ( রা.হ ) , এবং বিশেষ করে কয়েক বছর মারহুম আয়াতুল্লাহ উযমাহ হজ মির্জা বাশিম আমেলী ( রা.হ ) হতে উপকারিত হন । এই সমস্ত জ্ঞান অর্জন করার ফল হচ্ছে তিনি মারহুম আয়াতুল্লাহ হজ মির্জা বাশিম আমেলী ( রা.হ ) মূল্যবান বক্তৃতাকে একটি বইয়ের আঁকারে বের করেন । উনি হিকমত বিষয়কে আয়াতুল্লাহ গিলানীর নিকটে এবং মুয়ানীয়ে বিয়ান ও বাদিয়কে হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমীন জাওয়াদী নিকতে অর্জন করেন । মারহুম আয়াতুল্লাহুল উযমাহ মিলানী ( রা.হ ) , মারহুম আয়াতুল্লাহুল উযমাহ আখুন্দ হামাদানি ( রা.হ ) , মারহুম আয়াতুল্লাহ কামরেহয়ী ( রা.হ ) মারহুম আয়াতুল্লাহুল উযমাহ গুলপায়গানী ( রা.হ ) , মারহুম আয়াতুল্লাহুল উযমাহ সৈয়দ আহমাদ খোনসারী ( রা.হ ) , মারহুম আয়াতুল্লাহুল উযমাহ মারাশী নাজাফী ( রা.হ ) এবং মারহুম আয়াতুল্লাহুল উযমাহ ইমাম খুমাইনী ( রা.হ ) এই সমস্ত মারজাদের নিকতে জ্ঞান অর্জন করেছেন। উস্তাদ সমস্ত দ্বিনী ও হাওযায়ী জ্ঞানকে এবং সমস্ত উস্তাদের নিকট হতে জ্ঞান অর্জন করে নিজের আসল উদ্দেশ যা ইসলামী ও দ্বিনী জ্ঞান অর্জন কারির উপর জরুরী যে ইসলামী তাবলীগকে শুরু করা অনেক অসিবিধার সাথে কুম থেকে তেহরানে এসেছেন এবং এখনও তিরিশ বছরেরও বেশি তিনি ইসলামের তবলীগে ব্যাস্ত আছেন যা এলাহি ওয়াজিফার মধ্যে হতে একটি ওয়াজিফাহ (দায়িত্ব) চার হাজার মজলিসের ক্যাসেট বিনা পুনরাবৃত্তি এবং চল্লিশেরও বেশি বই যা প্রায় আশি খন্দ আছে । বইয়ের সূচীপত্র ফার্সি বই ১- কুরআনের অনুবাদ ২- নাহজুল বালাগাহর অনুবাদ ৩- সাহিফায়ে সাজ্জাদিয়ার অনুবাদ ৪- মাফাতিহুল জিনান অনুবাদ ৫- শারহে দোয়া –ই- কোমাইল ৬- আহলে বাইত আরশিয়ান ফারশ নাশিন ৭- মুয়াশেরাত ৮- জেলয়েহাই রহমতে ইলাহি ৯- ফারহানগে মেহরোরুযী ১০- ইবরাত আমুয ১১- চরিত্রর সন্দ্রয ১২- তওবা আগুশে রাহমাত
চলবে...