আবনা ডেস্ক: নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিয়ে এবার শোলাকিয়ায় ঈদুল আযহার নামাজে নেয়া হচ্ছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা। এবার সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত করা হচ্ছে বিজিবি’কে। ঈদুল আযহার ১৮৯তম জামাতের জন্য কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। গত ঈদে মাঠের কাছে জঙ্গি হামলার কারণেই এবার বাড়তি সর্তকতা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
ঈদ জামাতকে নিরাপদ-নির্বিঘ্ন রাখতে বিজিবি’র পাশাপাশি র্যাব-পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীও ঈদগাহ’র চার পাশে মোতায়েন থাকবে। শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস ও পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, এবার মাঠে কাউকে কোনো ধরণের ব্যাগ বা পোটলা-পাটলি নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
গত ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়া মাঠের পাশে জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিত এবার নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা আরো জোরদার ও কঠোর করা হচ্ছে বলে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান। এবার ঈদের জামাতে ইমামতি করবেন মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ। জামাত শুরু হবে সকাল ৯টায়।
প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, শোলাকিয়ায় মূলত ঈদুল ফিতরের জামাতে তিন থেকে চার লাখ মুসল্লির সমাগম হয়। কিন্তু ঈদুল আযহার জামাতে এর অনেক কম মুসল্লি মাঠে নামাজ আদায় করতে আসেন। ফলে এবার নিরাপত্তা নিয়ে বড় ধরণের কোনো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে না বলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনে করে।
আজ রবিবার দুপুরে শোলাকিয়া মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, পুলিশ বাহিনীর লোকজন এরই মধ্যে মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ঈদ জামাতের জন্য শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে শ্রমিকরা।
পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান জানান, সবকিছু মাথায় রেখে এবার শোলাকিয়ায় নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যক বিজিবি, র্যাব-পুলিশ, এপিবিএন ও আনসার সদস্য থাকবে। তাছাড়া সাদা পোশাকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা মাঠের ভেতর ও বাইরে কাজ করবে। ঈদের দিন মাঠের তিন দিকের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হবে। মাঠের সামনের দুটি গেট দিয়ে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে দেহ তল্লাশির পর মুসল্লিদের মাঠে ঢুকতে দেওয়া হবে। মাঠ ঘিরে থাকবে সিসি ক্যামেরার নজরদারি।
তিনি আরো জানান, পুলিশ তার সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চটাই করবে। এখানে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
জেলা প্রশাসক বলেন, গত ঈদে অপ্রত্যাশিত জঙ্গি হামলার বিষয়টি মাথায় রেখেই এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও ঢেলে সাজানো হয়েছে। ঈদকে ঘিরে সব প্রস্তুতি শেষের দিকে রয়েছে। তিনি এ সময় নিরাপত্তার প্রশ্নে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে জনসাধারণকে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
গত ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন সকালে শোলাকিয়ার ঈদগাহের পাশে আজিমুদ্দিন স্কুলের সামনে জঙ্গিরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলা ও চাপাতির কোপে নিহত হন পুলিশের দুই সদস্য জহিরুল ইসলাম ও আনসারুল হক। পরে পুলিশের সঙ্গে জঙ্গিদের প্রচণ্ড গোলাগুলি হয়। এতে নিজের ঘরে থাকা ঝর্ণা রাণী সূত্রধর নামে এক গৃহবধূ নিহত হন। পুলিশের গুলিতে নিহত হয় আবির রহমান নামে এক জঙ্গি। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ধরা পড়ে শফিউল ইসলাম নামের এক জঙ্গি। কিছুদিন পর ময়মনসিংহের নান্দাইলে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় শফিউল।
source : abna24