বাঙ্গালী
Sunday 22nd of December 2024
0
نفر 0

ইমাম হুসাইন (আ.)-এর রক্তরঞ্জিত শাহাদাত : প্রেক্ষিত,উদ্দেশ্য ও প্রভাব (শেষ অংশ)

ইমাম হুসাইন (আ.)-এর রক্তরঞ্জিত শাহাদাত : প্রেক্ষিত,উদ্দেশ্য ও প্রভাব (শেষ অংশ)

ইমাম হুসাইন (আ.)-এর প্রতিবাদ

ইমাম হুসাইন (আ.) বেশ কিছু কাল ধরে উমাইয়্যাদের চিন্তাধারার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছিলেন। প্রায়ই তিনি বিপদ সংকেত ঘোষণা করতেন এবং বলতেন : ‘নিজের নীরবতার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।’ কেননা,ইমাম জানতেন যে,কুরআন ও ইসলামের টিকে থাকা নির্ভর করছে তাঁর আত্মত্যাগ ও শাহাদাতের ওপর। কারণ,বনি উমাইয়্যা ইসলাম বলতে রাজত্ব ও ক্ষমতা ছাড়া আর কিছুই বুঝেনি। তাদের যাবতীয় শত্রুতা ও মিত্রতা ছিল দুনিয়াকে পাওয়ার লক্ষ্যে এবং অনেক বক্র চিন্তার লোকের মতই তারাও মনে করত যে,শরীয়ত প্রবর্তনকারীরা ধর্মকে নেতৃত্ব ও রাজত্ব করার মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করেছেন।

ইয়াযীদ যেমন অন্তরে ধর্মের প্রতি বিশ্বাস রাখত না,তেমনি বাহ্যিকভাবেও তা মেনে চলত না। কিন্তু ইমাম হুসাইন (আ.) ছিলেন ঈমান ও হাকীকতের বাস্তব প্রতীক এবং দীনের প্রতি গভীর বিশ্বাস তাঁর সমস্ত শিরা-উপশিরায় বেগবান রক্তের মত ঢেউ খেলে যেত। তিনি ভাল করেই মু‘আবিয়ার দুরভিসন্ধি বুঝলেন এবং এক অগ্নিঝরা ভাষণের মাধ্যমে তাঁর নীল নকশাকে প্রকাশ করে দিলেন। তিনি তাঁর ভাষণে বলেন :

‘হে মু‘আবিয়া! ... সত্যিই কি তুমি জনগণকে ইয়াযীদের বিষয় নিয়ে বিভ্রান্তির মধ্যে নিক্ষেপ করতে চাও? যখন তার চরিত্রই তার উত্তম পরিচয়। তার চিন্তাচেতনা ও অভিমত তার কাজেই প্রকাশিত। তুমি ইয়াযীদ সম্পর্কে এবং আলে মুহাম্মাদ (সা.)- এর ওপর তার কর্তৃত্বের ব্যাপারে যা ঘোষণা করেছ,তা আমি শুনেছি! তাহলে আস,এ ইয়াযীদকে কুকুর,বানর,কবুতর,নারী-আসক্তি ও ফূর্তিবাজি সম্পর্কে পরীক্ষা করে দেখ...।

হে মু‘আবিয়া! শুনেছি যে,তুমি আমাদের প্রতিও ইশারা করেছ। আল্লাহর কসম করে বলছি,মহানবী (সা.) তাঁর বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো আমাদের জন্যই উত্তরাধিকার হিসাবে রেখে গেছেন।

হে মু‘আবিয়া! কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড-যেখানে যোগ্যতম লোকদের থাকা দরকার,সেখানে তাদেরকে বর্জন করছ এবং একজন পাপাচারী ও সম্ভোগে বুঁদ হয়ে থাকা লোককে অগ্রগণ্য করছ?’

মু‘আবিয়ার মৃত্যুর পর ইয়াযীদ খলিফা হলে ইমাম হুসাইন (আ.) এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে তার হাতে বাইয়াত করতে অস্বীকার করার মাধ্যমে নিজেকে একজন আত্মত্যাগী বীরের বেশে মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলেন। কারণ,তিনি ভাল করেই জানতেন যে,ইসলামের যে চারাগাছ আজ শুকিয়ে মুষড়ে পড়েছে,তা কেবল তাঁরই পবিত্র রক্তের অমিয় সিঞ্চনে পুনরায় সতেজ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এ আত্মোৎসর্গ বিশ্বে হক ও বাতিলের মধ্যকার এক অবিশ্রান্ত সংগ্রাম হিসাবেই প্রতিফলিত হতে হবে। যাতে মুসলিম রাজ্যে শাসনকর্তাদের জুলুম-অত্যাচার ও জনগণকে গোলামে পরিণত করার চক্রান্তের মূলোৎপাটন করা সম্ভব হয়। ফলে,আরও একবার মুসলমান জনপদে পরহেযগার,খোদাভীরু,লড়াকু সৈনিকদের শক্তিমত্তা-যা উমাইয়্যা অত্যাচারের ঘূর্ণিপাকে আটকা পড়েছিল-তা উজ্জীবিত হয়ে উঠবে।

ঘটনা বাস্তবে এমনই ঘটেছিল। ইমাম হুসাইন (আ.) নিজের চোখে দেখে যেতে পারেননি,কিন্তু অচিরেই তাঁর এ আত্মদান এমনভাবে ফলবান হয়ে বিদ্যুৎগতিতে নগরে প্রান্তরে ছড়িয়ে পড়েছিল যে,খোদ ইয়াযীদের দারুল খোলাফাও তা থেকে নিস্তার পায়নি। এ কারণে তারই পুত্র উমাইয়্যা গোত্রের শত্রুতাপূর্ণ কর্মকাণ্ডের কারণে স্বীয় পদ থেকে ইস্তফা দেয় এবং বলে : ‘আমি কখনই খেলাফতকে তার আহল (হকদার) থেকে বাধা দেব না।’

প্রস্তুত ইমাম হুসাইন (আ.)

ইসলাম জিহাদ তথা বিদ্রোহের অনুমতি দেয় কয়েকটি শর্ত ও প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে। এসব শর্ত হল :

১. সকল অভিজ্ঞ ব্যক্তি,বিশেষ করে বিদ্রোহকারী ব্যক্তির কাছে নিশ্চিত হতে হবে যে,আল্লাহর হুকুম প্রকাশ্যে লঙ্ঘন করা হচ্ছে এবং জুলুম,অন্যায় ও অত্যাচার সর্বত্র ছেয়ে গেছে।

২. সাধারণ জনগণের সমর্থন বিদ্রোহ ও জিহাদের নেতৃতদানকারীদের অনুকূলে থাকবে,যদিও তাদের হাত-পা বাঁধা থাকে এবং তাদের মত প্রকাশের অধিকার বুকের ভেতরেই চাপা পড়ে যায়।

৩. ইবনে খালদুনের মতানুসারে যে ব্যক্তি বিদ্রোহ ও জিহাদের নেতৃত্ব প্রদান করবে তাকে সে যোগ্যতার অধিকারী হতে হবে।

৪. জুলুম ও খোদাদ্রোহিতা প্রতিরোধের জন্য যুদ্ধ ও আত্মদান ছাড়া বিকল্প পথ না থাকা।

আমরা মনে করি যে,ইমাম হুসাইন (আ.) এর উত্তর দিয়েছেন স্বয়ং তাঁর নানা রাসূলের ভাষ্য থেকেই। পরিস্থিতির মূল্যায়ন এবং কর্তব্য নির্ধারণের ব্যাপারে তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে এ বাণীটি উল্লেখ করেছিলেন :

‘হে জনগণ! নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : যে ব্যক্তি কোন স্বৈরাচারী শাসককে দেখে,যে আল্লাহর হারামগুলোকে হালাল করে এবং তাঁর হালালগুলোকে হারাম করে,আল্লাহর সাথে ওয়াদাগুলো ভঙ্গ করে এবং রাসূলের সুন্নাহ অগ্রাহ্য করে এবং জাতি ও প্রজাদের সাথে পাপাচার ও অত্যাচারপূর্ণ আচরণ করে,অথচ তাকে নিজ কথা কিম্বা কর্ম দ্বারা পরিবর্তন করে দেয় না,তার বিরুদ্ধে আল্লাহর ন্যায্য অধিকার হল সেখানে তাকে নিক্ষেপ করবেন,যেখানে উক্ত স্বৈরাচারকে নিক্ষেপ করবেন। তোমরা কি দেখছ না যে,এরা (বনি উমাইয়্যা) শয়তানের আনুগত্যে লিপ্ত হয়েছে,আল্লাহর অনুগত্যকে বর্জন করেছে,আর ফাসাদকে প্রকাশ্য রূপ দিয়েছে এবং আল্লাহর বিধি-বিধানগুলো অকেজো করে রেখেছে। আর জনগণের বাইতুল মাল নিয়ে ফূর্তি ও বিলাসব্যসনে মগ্ন হয়েছে। এরা আল্লাহর হারামকে হালাল করেছে এবং তাঁর হালালকে হারাম করেছে। (জেনে রাখ) এদের প্রতিরোধ করার জন্য এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর এ নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য আমি অন্যদের চেয়ে বেশি উপযুক্ত ও যোগ্য।’

তবে প্রশ্ন উঠতে পারে এ বিষয়ে যে,ইমাম হুসাইন (আ.) কেন মু‘আবিয়ার আমলেই বিদ্রোহ করলেন না? আর ইয়াযীদের আমলে কেনই বা মু‘আবিয়ার আমলের মত নীরব থাকলেন না? এর উত্তর হল,ইমাম হুসাইন (আ.) দূরদর্শিতার কারণেই মু‘আবিয়ার শাসনামলে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েননি। এর অন্যতম কারণ ছিল মু‘আবিয়ার অভূতপূর্ব চাতুর্যপূর্ণ শাসন-কৌশল। তিনি আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)-এর বিরুদ্ধে রাজ্যময় অভিসম্পাত বর্ষণের প্রথা চালু করলেও এ কৌশলে কোন ভুল করেননি যে,ইমাম হুসাইন (আ.)-এর কাছ থেকে বাইয়াত আদায়ে কড়াকড়ি করে নিজের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করবেন। কেননা,তাঁর আশপাশে ছিল আমর ইবনে আস ও মুগীরা ইবনে শুবার ন্যায় ধুরন্ধর কুটকৌশলীরা। যারা কাগজ ও কুরআনের মলাট উঁচু করে সিফফিনের পরিণতি ঘুরিয়ে দিতে দ্বিধা করেনি। কিন্তু আজ ইয়াযীদের চারপাশে কজন রোমান গোলাম ছাড়া রাজনীতিক ব্যক্তিত্ব কাউকে পাওয়া যায় না। এ কারণে তার পিতা যে ভুল করেননি,আনাড়ী ও ক্ষমতার মোহে অন্ধ ইয়াযীদ খেলাফতের মসনদ হাতে পেয়ে প্রথমেই সে ভুলে পা দেয়। নবী (সা.)- এর সন্তান হযরত ইমাম হুসাইন (আ.)-কে হয় আনুগত্য করতে হবে,নয়ত তাঁকে হত্যা করা হবে- এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।

ইমাম হুসাইন (আ.) ইয়াযীদের নিকৃষ্ট পরিচয় এবং নিজের পূত-পবিত্র উৎকৃষ্ট পরিচয় উপস্থাপনপূর্বক সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন : مثلی لا یبایع مثل یزید ‘আমার মত ব্যক্তি ইয়াযীদের মত ব্যক্তির হাতে বাইয়াত করতে পারে না।’

যে হুসাইন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কোলে-পিঠে এবং মা ফাতেমার পবিত্র আঁচলে বড় হয়েছেন,তাঁর পক্ষে এরূপ পরিস্থিতিতে শান্ত হয়ে বসে থাকা কি সম্ভব ছিল? যখন তিনি দেখতে পাচ্ছেন,যে ইসলামকে প্রচার করার জন্য তাঁর নানা ও পিতা শরীরের রক্ত পানি করেছেন,সে ইসলাম একদল অধঃপতিত,বিচ্যুত ও সম্পূর্ণরূপে দুনিয়াপূজারী লোকের হাতে জিম্মী হয়ে পড়বে। যদি রুখে দেওয়া না হয় তাহলে যেসব উমাইয়্যা কুকর্ম ও অনাচার সমাজে রীতি হিসাবে চালু করা হয়েছে,অচিরেই সেগুলো কুরআন ও সুন্নাহর স্থান দখল করে নেবে এবং সেগুলোই নিখাদ ধর্মাচার বলে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। ইমাম হুসাইন দেখতে পাচ্ছেন জুলুমবাজ ও মুনাফিক লোকেরা ইসলামের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করছে ও অপরাধ সংঘটিত করে উমাইয়্যা দরবারে আশ্রয় নিচ্ছে। তিনি লক্ষ্য করলেন,যে কঠিন বিচ্যুতি উমাইয়্যা শাসকদের ঘাড়ে চেপে বসেছে,তা ওয়াজ-নসিহতে অপসারিত হবে না। চোখের সামনেই ইমাম দেখছেন ধর্মভীরু পুণ্যবান লোকেরা উমাইয়্যা কুকর্মের বিরোধিতা করার ফলে একে একে কবরবাসী হচ্ছেন। বাইতুল মাল জনগণের কল্যাণে ব্যয় না হয়ে দরবারের লোকদের কামনা মেটানোর জন্য দাসী খরিদ করতে খরচ করা হচ্ছে। ওদিকে অনাহার-অর্ধাহারে হাজার হাজার মুসলমান মৃত্যমুখে পতিত হচ্ছে।

ইমাম দেখছেন যে,গোত্রপতিরা অনেকেই ভোগ-বিলাসে ডুবে আছে। আর যাদের মধ্যে এখনও এক চিলতে ঈমান অবশিষ্ট রয়েছে,তারা ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মুখপানে চেয়ে রয়েছে। তাদের বক্তব্য,যদি হুসাইন (আ.) বিদ্রোহ না করেন,তাহলে আমরা কেন ধ্বংস হব? আর যদি আমর বিল মারুফ ওয়া নাহি আনিল মুনকারের কাজ ওয়াজিব হয় তাহলে প্রথমে হুসাইন (আ.)-কেই তা পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।

উমাইয়্যা গোত্রের অগণিত পাপাচার এ সত্যকে সবার সামনে স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে,তারা কেবল মুহাম্মাদ (সা.)-এরই শত্রু নয়;বরং জাহেলী যুগের বিদ্বেষ মোতাবেক এমনকি নবীবংশের একটা শিশুকেও জীবিত রাখবে না।

কর্তব্যের শহীদ ইমাম হুসাইন (আ.)

ইসলামের ভিত গড়ে উঠেছে কয়েকটি মূল জিনিসের ওপর,যার অন্যতম হল জিহাদ ও আত্মত্যাগ। কিন্তু ইমাম হুসাইন (আ.) দেখলেন,একমাত্র নবীর পরিবার ছাড়া আরবের সকল মুসলমানের মধ্য থেকে দীনের দরদ উবে গেছে। এদিকে ইয়াযীদও কুকর্মের কিছুই বাকি রাখেনি। আর ইমাম হুসাইন লক্ষ্য করলেন যে,নীরব থাকার কোনই সুযোগ নেই। এ কথার প্রমাণ মেলে স্বয়ং ইমাম (আ.)-এর দোয়ায়ে আরাফা’র উক্তি থেকে। দোয়ার ভাষায় তিনি বলেন : فقتلت مقهورا অর্থাৎ পরিস্থিতি এমন দাঁড়াল যে,হুসাইন ইসলাম রক্ষায় কুরবানী হলেন অনন্যোপায় হয়ে। ইমাম হুসাইন বাতিলের নিকষ অন্ধকারের বিপরীতে সত্যের আলোকোদ্ভাসিত চেহারা নিয়ে দাঁড়ালেন স্বীয় কর্তব্য পালন করতে। এ তো সর্বস্ব কুফরের বিরুদ্ধে সর্বস্ব ঈমানের আবির্ভাব;আর বিস্মৃতির অতলে ডুবে যাওয়া মুহাম্মাদী শিক্ষার সগৌরব প্রত্যাবর্তন। নানার দীনকে হায়েনার কবল থেকে রক্ষায় তিনি রুখে দাঁড়ালেন,শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে নিজের কথা রাখলেন এবং এ পথে তাঁর বুকের রক্ত কীভাবে বয়ে গেছে তা স্বচক্ষে অবলোকন করেছেন। দোয়ার ভাষায় তাই মাসূম ইমামগণ নিঃসঙ্কোচে ঘোষণা করেছেন :

 بذل مهجه لیستنقذ عبادک من الضلالة

অর্থাৎ (হে আল্লাহ্!) তিনি (হুসাইন) তো তোমার রাহে স্বীয় বুকের রক্ত অকাতরে ঢেলে দিয়েছেন,যাতে তোমার বান্দারা গোমরাহী থেকে রক্ষা পায়।

ইমাম হুসাইন (আ.) বিদ্যমান ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন যে,আত্মোৎসর্গই তাঁর কর্তব্য। তাঁর এ কর্তব্য পালনের কথা আমরা আশুরার রাতে ইমাম ও তাঁর সঙ্গীবৃন্দের কথোপকথন থেকে সন্দেহাতীতভাবে বুঝতে পারি। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও তাঁরা সারারাত ধরে নিশ্চিন্তে ও পরম প্রশস্তি সহকারে কুরআন তেলাওয়াত আর নামায ও মোনাজাতে অতিবাহিত করেন। শাহাদাতের সুমধুর ঘ্রাণ তাঁরা স্পষ্টভাবে অনুভব করছিলেন। যখন ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁদেরকে বললেন : তোমরা চলে যেতে পার। তাঁরা বলে উঠলেন : কোথায় যাব? আল্লাহর কসম,যদি হাজার বার নিহত হই,পুনরায় আমাদের জীবিত করে হত্যা করা হয়,তবুও আপনার সাথে জীবন উৎসর্গ করাকে বেঁচে থাকার ওপরে স্থান দেব।

এ সময় মুসলমানদের অন্য সকল নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শাহাদাতের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বেখবর ছিল। আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর মনে করতেন,ইরাক হল তাঁর জায়গা। এ কারণে তিনি প্রহর গুণতে থাকেন হুসাইন হেজাজ থেকে কখন চলে যান,যাতে তাঁর পথ পরিষ্কার হয়ে যায়। আর ইবনে আব্বাস,ইবনে জাফর,ইবনে ওমর এ ভাবনায় ছিলেন যে,তিনি কেবল হেজাজের জন্যই। তাই তাঁরা বলছিলেন,হুসাইনের হেজাজে থাকা উচিত যাতে তাঁর প্রস্থানের মাধ্যমে ইবনে যুবাইয়েরের চোখ উজ্জ্বল না হয়।

এদিকে ইবনে যিয়াদ মনে করছিল,ইমাম বুঝি কুফায় গোলযোগ সৃষ্টিকারীদের সাথে জড়িত। তাই তার ধারণা ছিল তাঁকে হত্যা করার মাধ্যমে কুফার সত্যপন্থীদের অন্তরে ভালবাসার প্রদীপ নিভিয়ে দিতে পারবে।

আফসোস! কীসব সংকীর্ণ ভাবনা হুসাইনকে নিয়ে! আশ্চর্যের বিষয় হল এরা কেউই জানে না যে,হুসাইন এমন এক বিশাল ব্যক্তিত্বের নাম,কোন নির্দিষ্ট স্থান,কাল বা পাত্রের সাধ্য নেই তাঁকে ধারণ করার।

তবে কেন ক্রন্দন

ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সপরিবারে শাহাদাত বরণের জন্য শোক ও মাতম করার মূল প্রোথিত রয়েছে ইতিহাসের গভীরে। মহান আম্বিয়ায়ে কেরাম,এমনকি আসমানের ফেরেশতাকুলও নিজ নিজ পন্থায় এ শহীদ ইমামের জন্যে আযাদারী করেছেন। রেওয়ায়েত অনুযায়ী আশুরার ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরে চারদিকে আঁধার নেমে আসে এবং কারবালার আকাশ কালো ধুলোয় ভরে যায়। আর সেখানকার নুড়ি পাথরগুলো,এমনকি জলের মাছগুলো চল্লিশ দিন ধরে ইমামের শোকে ক্রন্দন করতে থাকে।

ﹰانّ السماء بکی علی مصاب الحسین اربعین صباحا

‘ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মুসিবতে আকাশ চল্লিশ দিন ধরে ক্রন্দন করে।’

ইমাম হুসাইন (আ.) এর জন্য আযাদারী পালন একটি প্রাচীন রীতি এবং আল্লাহ ও রাসূল (সা.)-এর পক্ষ থেকে প্রবর্তিত বিষয়। যেমন রাসূলুল্লাহ (সা.) ইমাম হুসাইনের ঠোঁটে এবং গলায় চুম্বন দিতেন এবং কাঁদতে কাঁদতে বলতেন :

انّی اقبل مواضع السّیوف

‘আমি তলোয়ারের জায়গাগুলোতে চুম্বন করছি।’

 

হযরত ফাতিমা যাহরাকে হুসাইনের জন্য আযাদারী পালনের গুরুত্বের ব্যাপারে তিনি বলতেন :

یا فاطمة کلّ عین باکیه یوم القیامة الاعین بکت عن مصاب الحسین فإنّها ضاحکه مستبشره بنعیم الجنّة

‘হে ফাতিমা! কিয়ামতের দিন প্রত্যেক চক্ষুই কাঁদতে থাকবে,কেবল সে চোখ ব্যতীত,যে হুসাইনের মুসিবতে ক্রন্দন করেছে। জান্নাতের নেয়ামতে পূর্ণ হয়ে সে আনন্দিত ও হাসিমুখে থাকবে।

হযরত আলী ইবনে আবি তালিবও আযাদারী ও ক্রন্দন করেছেন। এর সবচেয়ে প্রসিদ্ধ দৃষ্টান্ত হল সিফফিনে যাওয়ার পথে সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে আমীরুল মুমিনীন আলী (আ.) যখন নাইনাওয়া (কারবালা) ভূমিতে পৌঁছেন,তখন ক্ষণিক যাত্রা বিরতি করে বিশ্রাম গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। তিনিও অবতরণ করলেন। এরপর দু’হাত কারবালার উত্তপ্ত বালির ওপর রাখলেন এবং ক্রন্দন করলেন। সঙ্গীরা যখন ইমামের কাছে এর কারণ জানতে চাইলেন তখন তিনি বললেন :

ههنا مناخ رکابهم و مسفک دمائهم و محط رحالهم

‘এ স্থানই তাদের বহনকারী জন্তুগুলোর থামার জায়গা এবং এখানেই তাদের রক্ত মাটিতে মিশবার জায়গা এবং তাদের মালামাল নামানোর জায়গা।’১০

এছাড়া ফাতিমা যাহরা (আ.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট থেকে শিক্ষা নিয়ে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর দোলনা দোলানোর সময় থেকে নিজের শাহাদাতের মুহূর্ত পর্যন্ত সবসময় হুসাইনের মজলুম হওয়া ও নির্মমভাবে শহীদ হবার কথা স্মরণ করে ক্রন্দন করতেন। আর কন্যা যায়নাবকে উপদেশ দিতেন যেন এ দুঃসময়ে তাঁর ভাইয়ের সঙ্গী হন।

স্বয়ং ইমাম হুসাইনও একাধিকবার কারবালার পথ অতিক্রম করার সময় মহা বিপদ সংঘটিত হওয়া মর্মে তাঁর প্রিয় নানা ও পিতার ভবিষ্যদ্বাণীর আলামতসমূহ প্রত্যক্ষ করে ক্রন্দন করেন। যেমন,যখন উবায়দুল্লাহর চিঠি দেখেন এবং হযরত মুসলিম ও হানির শাহাদাতের খবর পান এবং সেনাপতি হুরের দ্বারা যখন তাঁর পথ আটকে ধরা হয়। বর্ণিত হয়েছে যে,এসব ঘটনায় ইমাম হুসাইন (আ.) আয়াতে ইস্তিরজা (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহহি রাজেউন) পাঠ করেন। আর আশুরার রাতে সঙ্গী-সাথী ও পরিবারবর্গের মাঝে আযাদারী অনুষ্ঠান করেন,সন্তানদের থেকে বিদায় গ্রহণ করেন এবং এক বর্ণনা অনুযায়ী তিনি বনি হাশিমের একেক জন যুবকের মুখের দিকে তাকাচ্ছিলেন এবং ক্রন্দন করছিলেন।ساعة فنظر الیهم ثمّ بکی ‘তিনি তাঁদের দিকে তাকালেন। তারপর কিছুক্ষণ ধরে ক্রন্দন করলেন।’১১ তিনি পবিরারবর্গকেও বলেন তাঁর জন্য ক্রন্দন করতে। বিশেষ করে বোন যায়নাব ও প্রাণপ্রিয় পুত্র যায়নুল আবেদীন (আ.)-কে নির্দেশ দেন তাঁর শাহাদাতের পর যেন বন্দী অবস্থায় চলার পথে যেখানেই যাত্রাবিরতি করা হবে,সেখানে তাঁর মজলুম হওয়ার কথা বর্ণনা করা হয় এবং জনগণের বিশেষ করে শামের জনগণের কানে তা পৌঁছানো হয়। এছাড়াও তিনি তাঁর অনুসারীদের আশুরার শোক পালন ও আযাদারী অনুষ্ঠান করার মাধ্যমে তা ভবিষ্যতের মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার নির্দেশ দেন। শোকাশ্রু বিসর্জন করা এবং আশুরার দিনে তাঁর মুসিবতের কথা স্মরণ করে আযাদারী পালন করার মধ্যে যে বার্তা নিহিত রয়েছে,সেটা বুঝাতে তিনি বলেছেন :

انا قتیل العبره قتلت مکروبا فلا یذکرنی مؤمن الاّ بکی

‘আমি অশ্রুর শহীদ,আমি নিহত হয়েছি চরম কষ্ট স্বীকার করে,তাই কোন মুমিন আমাকে স্মরণ করলে ক্রন্দন না করে পারে না।’১২

সুতরাং,ইমাম হুসাইন (আ.)-এর জন্য ক্রন্দন ও আযাদারীর শিকড় প্রোথিত রয়েছে আমাদের দীন ও আকীদার অভ্যন্তরে এবং বিভিন্ন রেওয়ায়েত মোতাবেক এর অশেষ প্রভাব ও বরকত রয়েছে। তার মধ্যে উৎকৃষ্টতম প্রভাব হল তা আমাদের অন্তরসমূহের মরিচা বিদূরিত করে,আমাদের জীবনকে উন্নত করে এবং সত্যের পথে অকুতোভয় ও বাতিলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার দুর্নিবার মানসিকতা দান করে। ফলে আল্লাহর রহমত সকলের ওপরে অবারিত করে দেয়। শোকের এ শক্তি কত জালিমকে উৎখাত করেছে,কত মজলুমের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে,ইসলামকে কতবার যে ধ্বংসের কবল থেকে উদ্ধার করেছে তা কেবল ইতিহাসই বলতে পারে।

তাই তো ইমাম যায়নুল আবেদীন (আ.) তাঁর পিতার শাহাদাতের পর ইবনে যিয়াদের নিকট যেসব দাবি তুলে ধরেন তার অন্যতম ছিল,একজন বিশ্বাসভাজন লোককে কাফেলার সাথে পাঠাও যাতে পথিমধ্যে যেসব জায়গায় যাত্রা বিরতি করা হবে,সেখানে আযাদারী অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করে দেয়। আল্লাহর ইচ্ছায় সেদিন দুশমন এ শর্তটি মেনেও নেয় এবং নোমান ইবনে বাশীরকে কাফেলার সাথে পাঠায়। কাফেলা যেখানেই যাত্রাবিরতি করছিল,নোমান সেখানেই তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবশে তৈরি করে দিচ্ছিল যাতে ইমাম পরিবার আযাদারীর অনুষ্ঠান করতে পারে। সেখানে ইমাম হুসাইনসহ কারবালার শহীদদের কঠিন বিপদ ও দুর্দশার কথা বর্ণনার মাধ্যমে একদিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ইমাম পরিবার সম্পর্কে সহানুভূতি সৃষ্টি,অপরদিকে জালেম ইয়াযীদ ও তার দোসরদের মুখোশ খুলে দিতে সক্ষম হন। স্বয়ং নোমান ইবনে বাশীর,যে নিজে ইমাম পরিবারকে মনেপ্রাণে ভালবাসত,দীর্ঘ এ যাত্রাপথে ইমাম যায়নুল আবেদীন ও হযরত যায়নাবের বয়ান শুনে এমনভাবে প্রভাবিত হয় যে,উচ্চৈঃস্বরে ক্রন্দন করতে থাকে।

অতঃপর কাফেলা যখন মদীনায় পৌঁছে,তখন নোমান সবার আগে ছুটে গিয়ে মদীনায় প্রবেশ করে এবং প্রচণ্ডভাবে ক্রন্দন করতে করতে একটি কাসিদার মাধ্যমে আহলে বাইতের মুসিবতের কথা মদীনার জনগণের কাছে বর্ণনা করে। কাসিদাটির অংশবিশেষ নিম্নরূপ :

یا اهل یثرب لا مقام لکم                             قتل الحسین فارمعی مدرار

الجسم منه بکربلا مضرّج                 و الرأس منه علی الدار یدارا

‘হে মদীনাবাসী! তোমাদের জন্য আর কোন থাকার জায়গা রইল না। কারণ,হুসাইন কতল হয়েছেন। গায়ের জামাগুলো ছিঁড়ে ফেল,কেননা,তাঁর পবিত্র দেহ কারবালার ময়দানে টুকরো টুকরো হয়েছে। আর তাঁর কাটা মস্তক এখন বর্শার মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়ানো হচ্ছে।’

মদীনার জনগণ এ খবর শুনে বেহাল ও বেকারার হয়ে পড়ে এবং নিজ নিজ ঘর ছেড়ে ছুটে বের হয়ে আসে। সবাই একাকার হয়ে উচ্চৈঃস্বরে ক্রন্দন করতে থাকে এবং মদীনার আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে এমন এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয় যা মদীনা কোনদিন দেখেনি। সকলে পাগলপারা হয়ে নবী পরিবারের কাফেলার দিকে ছুটে যায়। এ খবর আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়লো সর্বত্র। মুমিনের ঘরে ঘরে আযাদারী,শোক,মাতম এবং কান্নার রোল পড়ে গেল। একটি খিমা নির্মিত হল ইমাম যায়নুল আবেদীন (আ.)-এর জন্য। শোকার্ত মানুষ তাঁকে ঘিরে রেখেছিল,সান্তনা প্রদান করছিল এবং তাঁর হাতে-পায়ে ভক্তিভরে চুম্বন করছিল। পুরুষরা উচ্চৈঃস্বরে ক্রন্দন করছিল ও ফরিয়াদ তুলছিল। আর নারীরা তাদের মুখ,বুক চাপড়াচ্ছিল। কাফেলা যখন শহরে প্রবেশ করে,তখন ইমাম হুসাইন (আ.)-এর ইয়াতিম বাচ্চাগুলোকে মদীনার নারীরা বুকে টেনে নিয়েছিল। আর পুরুষরা ইমাম যায়নুল আবেদীনকে সান্তনা দিয়েছিল।

ইমাম হুসাইনের শাহাদাতের পর বিখ্যাত সাহাবী হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ্ আল আনসারী কারবালা প্রান্তরে যান। সেখানে তাঁর বুকফাটা ক্রন্দন এবং সাইয়্যেদুশ শুহাদা হযরত ইমাম হুসাইনের কবরপার্শ্বে তাঁর আকুলতার ভাষাগুলো যে কোন মুমিনের অন্তরে শোকের আগুন জ্বালিয়ে দেয়। বৃদ্ধ বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারানো এ মহান সাহাবী তাঁর বন্ধু ইমাম হুসাইনের কবরে আছড়ে পড়েন এবং তিনবার ইয়া হুসাইন বলে ডাক দেন। অতঃপর তিনি পরম ভক্তির সাথে হুসাইন (আ.)-এর স্মৃতিসমূহ স্মরণ করতে থাকেন। আর এ ঘটনার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণীসমূহ উচ্চারণ করতে থাকেন।

এভাবে আযাদারীর মজলিসের বিস্তার ঘটতে ঘটতে গোটা দুনিয়া জুড়ে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর স্মরণে শোক ও মাতম এক আদর্শে রূপ নেয়। ইসলামের রাহে শহীদ সম্রাট ইমাম হুসাইন (আ.) ও তাঁর একনিষ্ঠ সঙ্গীসাথীবৃন্দের শোকে মুহ্যমান মুমিনদের সে ঢল আজও অব্যাহত আছে,শত সহস্রগুণ বেশি ভক্তকুল সব বাঁধা অতিক্রম করে এ যিয়ারতের মিছিলে অংশগ্রহণ করে থাকে। এ শোক পালনের মধ্যে হক সবসময় সমহিমায় উদ্ভাসিত হওয়ার এবং বাতিল উৎপাটিত হওয়ার দরজা উন্মুক্ত হয়েছে। যার প্রভাবে ধর্মদ্রোহী উমাইয়্যারা ও ইয়াযীদরা ধর্মব্রতী সেজে আর ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। পাশাপাশি হুসাইনী হয়ে বেঁচে থাকার প্রবল আকুতি নিয়ে অনুষ্ঠিত এসব আযাদারী অনুষ্ঠান এমন সব অসাধ্য সাধন করার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে যে,স্বীকার করতে হবে,ইসলামের ইতিহাসে অনেক নজীরবিহীন বীরত্বগাথা মহাকাব্যের জন্ম হয়েছে এখান থেকেই। মুমীনদের আত্ম পরিচয় খুঁজে পাওয়ার এবং উন্নত মনোবৃত্তির সকল শিক্ষা নিহিত রাখা হয়েছে আশুরার শোক মাতমের মধ্যে। যতদিন এ মহান ইমামের মহান আত্মত্যাগের স্মরণে অন্তরে ভক্তি ও ভালবাসা থাকবে,আর জিহ্বায় থাকবে তার সাহসী প্রকাশ,ততদিন এ রক্তাক্ত শাহাদাতের বাণী সমুন্নত ও চিরন্তন থাকবে,পৌঁছে যাবে পরবর্তী বংশধরদের কাছে।

তথ্যসূত্র :

১.তুহাফুল উকুল

২.নাসেখুত তাওয়ারিখ গ্রন্থের বর্ণনা থেকে সংক্ষিপ্ত ও উৎকলিত করা হয়েছে।

৩.মুরুজুয যাহাব,মাসউদী,৩য় খণ্ড,পৃ. ৭৩,বৈরুত থেকে মূদ্রিত।

৪.সিয়াসাতুল হুসাইনিয়া,আল্লামা কাশেফুল গেতা

৫.লুহুফ,সাইয়্যেদ ইবনে তাউস,পৃ. ১৩

৬.নাসেখুত তাওয়ারীখ

৭.তারীখে ইবনে আসীর,৩য় খণ্ড,পৃ. ২৮৮

৮.লুহুফ,সাইয়্যেদ ইবনে তাউস,পৃ. ৩৫;তাযকিরাহ,পৃ. ২৫০

৯.প্রাগুক্ত,পৃ. ২৮;কামেলুয যিয়ারাত,পৃ. ৭৫

১০.তারীখে ইবনে আসীর,৩য় খণ্ড,পৃ. ২৮৮

১১.বিহারুল আনওয়ার,৪৪তম খণ্ড,পৃ. ২৯৩

১২.কামেলুয যিয়ারাত,পৃ. ১০৯

(সূত্র: প্রত্যাশা, বর্ষ ১,সংখ্যা ৩)

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

দুই নামাজ একসাথে পড়ার শরয়ী দললি
ইমাম হাসান (আ.) এর শাহাদাত
হযরত ফাতেমার দানশীলতা ও বদান্যতা
হযরত আলী (আ.) এর পবিত্র ...
আল্লাহ সর্বশক্তিমান
পবিত্র গাদীর দিবসের মুস্তাহাব ...
আবতার কে বা কা’রা?
কারবালার মহাবীর হযরত আবুল ফজল ...
ইমাম হোসাইন (আ.)
কুরআন ও ইমামত সম্পর্কে ইমাম জাফর ...

 
user comment