বাঙ্গালী
Friday 26th of April 2024
0
نفر 0

রমজান: খোদা-প্রেমের অসীম সাগর-১৮

মহান আল্লাহর অশেষ প্রশংসা এবং বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর পবিত্র আহলে বাইত ও ন্যায়পরায়ণ সাহাবিদের শানে অশেষ দরুদ আর সালাম পেশের মাধ্যমে শুরু করছি আজকের আলোচনা।
রমজান: খোদা-প্রেমের অসীম সাগর-১৮

মহান আল্লাহর অশেষ প্রশংসা এবং বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর পবিত্র আহলে বাইত ও ন্যায়পরায়ণ সাহাবিদের শানে অশেষ দরুদ আর সালাম পেশের মাধ্যমে শুরু করছি আজকের আলোচনা।
 

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন, সব কিছুরই একটি ভিত্তি রয়েছে, আর ইসলামের ভিত্তি হচ্ছে আমাদের প্রতি তথা আমার পবিত্র বংশধরদের (আহলে বাইতের) প্রতি ভালবাসা।
 

তিনি আরও বলেছেন, 'প্রত্যেক বিষয়েরই রয়েছে জাকাত। আর শরীর বা দেহের জাকাত হচ্ছে রোজা।'
 

ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য রিজিক হালাল হওয়া খুবই জরুরি। হালাল রিজিকের প্রভাব শুধু নিজের দুনিয়া ও আখিরাতের সৌভাগ্যের জন্যই যে জরুরি তা নয়, নিজের সন্তানের ওপরও এর প্রভাব থাকে। রুজি-রোজগারের মধ্যে খুব সামান্য ও এমনকি বিন্দু পরিমাণ হারাম এবং সুদের প্রভাব সন্তানের মধ্যে প্রকাশ পায়। এ সংক্রান্ত অনেক ঘটনা ধর্মীয় সাহিত্যে স্থান পেয়েছে।
 

একবার প্রাচীন যুগের একজন বিশ্বখ্যাত আলেম তার শিশু পুত্র সন্তানকে মসজিদে নিয়ে আসেন। ওই শিশুকে অজুখানার কাছে বসিয়ে তিনি নামাজ আদায় করতে মসজিদে যান। ফিরে এসে দেখেন যে তার শিশু-পুত্র মুসল্লিদের ওজুর পানি তোলার পাত্রটি পেরেক জাতীয় কোনো কিছু দিয়ে ফুটো করে দিয়েছে। ওই আলেম দুঃখিত ও বিস্মিত হয়ে ভাবতে লাগলেন কেনো এমন হল? ঘরে ফিরে স্ত্রীকে এই ঘটনা জানালে তিনি জানান, আমি বুঝতে পেরেছি যে কেনো এই মন্দ কাজটি আমাদের পুত্র করেছে। এ জন্য আসলে আমিই দায়ী। ও যখন আমার গর্ভে ছিল তখন আমি অনুমতি না নিয়ে এক ব্যক্তির বাগানের একটি ডালিমের মধ্যে সুঁই দিয়ে খোঁচা দিয়েছিলাম এবং সুঁইয়ে লেগে-থাকা ডালিমের রস জিভে লাগিয়েছিলাম!
 
 
 

ইমাম হুসাইন (আ.) একজন নিষ্পাপ ইমাম এবং বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরিপূর্ণ মহামানব হওয়া সত্ত্বেও কারবালায় তাঁর যুক্তিপূর্ণ আহ্বান ও বক্তব্যে মুসলমান নামধারী ইয়াজিদ বাহিনীর মন বিন্দুমাত্র গলেনি। ইমামের মতে, এর কারণ ছিল হারাম খাদ্যের প্রভাব।
আমাদের জীবনে যদি এ জাতীয় ঘটনা ঘটে থাকে যে আমরা কেউ অন্যের এক পয়সা মূল্যেরও কিছু ভোগ করেছি বিনা অনুমতিতে এবং এ জন্য পরে মালিকের সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করিনি তাহলে অবিলম্বে ক্ষমা বা সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্যোগ নেয়া উচিত। যদি মালিক মারা গিয়ে থাকেন তাহলে তার সন্তানদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। যদি তাদের কাউকেই পাওয়া সম্ভব না হয় তাহলে তাদের নামে সদকা দেয়া উচিত।
 
 
 

আজ ১৮ রমজান শেষ হয়ে ১৯ তম রমজান শুরু হতে যাচ্ছে। আজ হতে ১৩৯৬ চন্দ্র-বছর আগে ৪০ হিজরির এই দিনে তথা ১৮ ই রমজানের দিন শেষে ১৯ রমজানের ভোর বেলায় ইবনে মোলজেম নামের এক ধর্মান্ধ খারেজি ফজরের নামাজে সেজদারত আমীরুল মু'মিনিন হযরত আলী (আঃ)'র মাথায় বিষ-মাখানো তরবারি দিয়ে আঘাত হানায় দুই দিন পর তিনি শাহাদত বরণ করেন। এ ঘটনা ঘটেছিল কুফার গ্র্যান্ড মসজিদে।
 

আলী (আ.) সর্বত্র প্রকৃত ইসলাম ও ন্যায়-বিচার কায়েমের তথা সংস্কারের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বলেই সুবিধাবাদী, মুনাফিক এবং স্বল্প-জ্ঞানী ধর্মান্ধ ও বিভ্রান্ত শ্রেণীগুলো তাঁর শত্রুতে পরিণত হয়েছিল। যেমন, তিনি খিলাফত লাভের পর সব সাহাবির জন্য সরকার-প্রদত্ত ভাতা সমান করে দিয়ে রাসূল (সা.) সুন্নাত পুন:প্রবর্তন করেছিলেন। ফলে অনেকেই তাঁর শত্রুতে পরিণত হয়।
 
 
 
হযরত আলী (আ.) জানতেন সত্যের পথে অবিচল থাকলে অনেক ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও নেতা তাঁকে ত্যাগ করবেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি ন্যায়-বিচারের পথ ত্যাগ করেননি। ফলে শাহাদতের উচ্চ মর্যাদা অর্জন করেছিলেন হযরত আলী (আ.)। মুয়াবিয়া যখন বায়তুল মালের সম্পদ অবাধে ব্যবহার করে নিজের পক্ষে সুযোগ সন্ধানী লোকদের টেনে দল ভারী করতো, তখন মুয়াবিয়ার বিদ্রোহের সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও হযরত আলী (আঃ) তাঁর গভর্নরদের মাধ্যমে ব্যবহৃত বায়তুল মালের সম্পদের প্রতিটি পয়সার হিসেব নিতেন।
 
 
 
আলী (আ.)-এর জীবনের শেষ রমজান মাস ছিল অন্য এক রকম রমজান। এ মাস ভিন্ন এক পবিত্রতা নিয়ে বিরাজ করছিল। হযরত আলী(আ.) বলেছেন,‘ মানুষ কি ভেবে নিয়েছে আমরা ঈমান এনেছি এ কথা বললেই তাদের ছেড়ে দেয়া হবে এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না- এই আয়াত (আনকাবুত ১-২) যখন নাযিল হলো তখন বুঝতে পারলাম রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মৃত্যুর পর এ উম্মতের জন্য ফিতনা ও কঠিন পরীক্ষা আসবে। তখন রাসূলকে প্রশ্ন করলাম : হে রাসূলাল্লাহ্! এ আয়াতে আল্লাহ যে ফিতনার কথা বলছেন সেটা কি? তিনি বললেন : ‘হে আলী! আমার পর আমার উম্মত পরীক্ষার সম্মুখীন হবে।’ যখন আলী শুনলেন রাসূল মৃত্যুবরণ করবেন এবং তাঁর পরে কঠিন পরীক্ষা আসবে তখন ওহুদের যুদ্ধের কথা স্মরণ করে বললেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ্! ওহুদের দিনে যারা শহীদ হওয়ার তাঁরা শহীদ হলেন, আমি শাহাদাত থেকে বঞ্চিত হলাম এবং খুবই দুঃখ পেয়ে আপনাকে প্রশ্ন করলাম, কেন এ মর্যাদা আমার হলো না। আপনি বলেছিলেন, যদিও এখানে শহীদ হওনি কিন্তু অবশেষে শাহাদাত তোমার ভাগ্যে ঘটবে।’ আলী(আ.) এ সময় পঁচিশ বছরের যুবক ছিলেন এবং এক বছর হলো হযরত ফাতিমা যাহরা (সা.)-কে বিবাহ করেছেন ও এক সন্তানের জনক। এ বয়সের যুবক যখন জীবনকে সুন্দরভাবে সাজানোর স্বপ্ন দেখে তখন থেকেই আলী(আ.) ছিলেন শাহাদাতের প্রত্যাশী!
 
 
 
শাবান মাসের শেষ শুক্রবারে রমজানের ফজিলত সম্পর্কে বলতে গিয়ে বিশ্বনবী (সা.) ভাষণের শেষ পর্যায়ে কাঁদতে থাকেন। তা দেখে হযরত আলী (আ.) এর কারণ জানতে চান। জবাবে মহানবী বহু বছর পর রমজান মাসে আলী (আ.)'র মর্মান্তিক শাহাদতের ভবিষ্যদ্বাণীর কথা উল্লেখ করলেন। তিনি বললেন,"হে আলী, এই মাসে তোমার ওপর যা নেমে আসবে সে জন্য আমি কাঁদছি। আমি নিজেকে কল্পনা করছি তোমার স্থানে যখন তুমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছ এবং সামুদ জাতির কাছে পাঠানো খোদায়ী উটের পা কর্তনকারী লোকটির মতই মানব ইতিহাসের সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তিটি তোমার মাথার ওপর আঘাত হানবে এবং তোমার দাড়ি তাতে (রক্তে) রঞ্জিত হবে।"
 
 
 
নিজের শাহাদতের ভবিষ্যদ্বাণীর কথা শুনে সব কিছুর আগে হযরত আলী (আ.)'র মনে যে চিন্তাটির উদয় হয়েছিল তা এই বস্তু-জগত সম্পর্কিত ছিল না, বরং তা ছিল নিজের ঈমান সম্পর্কিত। তাই তিনি প্রশ্ন করলেন: " হে আল্লাহর রাসূল! সে সময় আমি কী ঈমানের ওপর অবিচল থাকব? "রাসূল (সা.) বললেন: " হ্যাঁ, সে সময় তোমার ঈমান নিরাপদ থাকবে।"
 
 
 
বিশ্বনবী (সা.) আরো বলতে লাগলেন,
 
 
 
"হে আলী, যে তোমাকে হত্যা করে সে (বাস্তবে) আমাকে হত্যা করল, যে তোমাকে বিরক্ত করে সে আমাকে বিরক্ত করল এবং যে তোমার অবমাননা করল সে আমার অবমাননা করল, কারণ তুমি আমার আত্মা বা প্রাণের সমতুল্য। তোমার ও আমার মানসিকতা এবং স্বভাব অভিন্ন। নিঃসন্দেহে প্রশংসিত ও গৌরবান্বিত আল্লাহ প্রথমে আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং এরপর সৃষ্টি করেছেন তোমাকে,তিনি প্রথমে বেছে নিয়েছেন আমাকে এবং এরপর বেছে নিয়েছেন তোমাকে। আল্লাহ আমাকে নবুওতের জন্য মনোনীত করেছেন, আর তোমাকে মনোনীত করেছেন ইমামতের জন্য। আর যে তোমার ইমামতকে অস্বীকার করবে সে (কার্যত) আমার নবুওতকে প্রত্যাখ্যান করল। হে আলী, তুমি আমার উত্তরাধিকারী, আমার সন্তানদের তথা নাতী-নাতনীর পিতা এবং আমার কন্যার স্বামী আর আমার উম্মতের জন্য আমার জীবদ্দশায় ও আমার মৃত্যুর পর আমার প্রতিনিধি বা খলিফা। তোমার নির্দেশ হল আমারই নির্দেশ, তোমার নিষেধাজ্ঞা হল আমারই নিষেধাজ্ঞা। সেই শক্তির শপথ করে বলছি যেই শক্তি আমাকে নবুওত দান করেছেন এবং আমাকে শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হিসেবে তৈরি করেছেন, তুমি হচ্ছ সৃষ্টিকুলের জন্য হুজ্জাতুল্লাহ বা আল্লাহর নিদর্শন এবং তাঁর রহস্যগুলোর আমানতদার বা ট্রাস্টি ও সৃষ্টিকুলের ওপর আল্লাহর খলিফা।"
 
 
 
আলী (আ.) জিহাদ থেকে ফিরে আসলে মহানবী (সা.) তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে যেতেন এবং তাঁর মুখের ঘাম মুছে দিতেন নিজ হাতে। তাঁকে জিহাদ বা সফরের সময় বিদায় দিতে গিয়ে তাঁর বিজয়ের জন্য দোয়া করতেন এবং বলতেন: হে আল্লাহ, আলীর সঙ্গে এটাই যেন আমার শেষ দেখা না হয় কিংবা বলেছেন: হে আল্লাহ, আমার মৃত্যুর আগে আলীকে যেন আরো একবার দেখতে পারি ।
 
 
 

আলী (আ.) বলেছেন, উট-শাবক যেমন মায়ের পিছে পিছে থেকে সব সময় মাকে অনুসরণ করে আমিও শৈশব থেকেই রাসূল (সা.)-কে সেভাবে অনুসরণ করতাম। রাসূল শৈশবে আমাকে কোলে নিতেন, খাইয়ে দিতেন, ঘুম পাড়িয়ে দিতেন ও বুকে চেপে ধরতেন। রাসূলের (সা.) কাছে ওহি নাজিল হওয়ার সময় আমিও দেখতে পেতাম ফেরেশতাদের। মহানবী (সা.) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন আলী (আ.)'র কোলে মাথা রেখেই এবং তাকে গোসলও দেন তিনি।
 
 
 

হযরত আলী (আ.)’র বিরুদ্ধে সিরিয়ায় বিদ্রোহ শুরু করার পেছনে মুয়াবিয়ার অজুহাত ছিল তৃতীয় খলিফার হত্যাকাণ্ডের বিচার। এটা যে নিছক অজুহাতই ছিল তার প্রমাণ হল হযরত আলী (আ.)’র শাহাদতের পর মুসলিম বিশ্বের সব অঞ্চল ছলে বলে কৌশলে করায়ত্ত করা সত্ত্বেও এই উমাইয়া শাসক আর কখনও তৃতীয় খলিফার হত্যাকারীদের বিচারের কথা মুখেও উচ্চারণ করেনি। দ্বিতীয় খলিফার শাসনামল থেকেই সিরিয়ায় প্রায় স্বাধীন রাষ্ট্র প্রধানের মত চালচলনে অভ্যস্ত মুয়াবিয়া জানত যে হযরত আলী (আ.)’র মত কঠোর ন্যায়-বিচারক শাসক তাকে কখনও ছোট বা বড় কোনো পদই দেবেন না। তাই আলী (আ.) খলিফা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্য অনেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার মত মুয়াবিয়াকেও পদচ্যুত করলে ইসলামের ইতিহাসে রাজতন্ত্র প্রবর্তনকারী মুয়াবিয়া সিরিয়ায় বিদ্রোহের পতাকা উত্তোলন করে।
 
 
 
 মুয়াবিয়া সিরিয়াতে বহু বছর ধরে গভর্নর ছিল। সেখানে আলী (আ.) ও তাঁর পরিবার এবং বংশধরদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের কুৎসা রটনা ও গালি দেয়ার প্রচলন শুরু করেছিল মুয়াবিয়া। এই নোংরা প্রথাটি বন্ধ করেছিল ইতিহাস-খ্যাত দ্বিতীয় ওমর। বিশ্বনবী (সা.)'র আহলে বাইত ও আলী-পরিবারের বিরুদ্ধে বিষাক্ত প্রচারণার প্রভাবে সিরিয়ার জনগণ এতটাই বিভ্রান্ত হয়েছিল যে, আলী (আ.) কুফার মসজিদে শহীদ হয়েছেন শুনে দামেস্কের অনেকেই প্রশ্ন করেছিল: আলী মসজিদে মারা গেল কিভাবে! সে কি নামাজ পড়ত?!
 
 
 
বিশ্বনবী (সা.)'র পবিত্র আহলে বাইতের বিরুদ্ধে মুয়াবিয়াসহ উমাইয়া শাসকদের কূটকৌশল, ষড়যন্ত্র আর মিথ্যা প্রচার প্রসঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম লিখেছেন:
 
এই ধূর্ত ও ভোগীরাই তলোয়ারে বেঁধে কোরআন,
আলী'র সেনারে করেছে সদাই বিব্রত পেরেশান !
এই এজিদের সেনাদল শয়তানের প্ররোচনায়
হাসানে হোসেনে গালি দিতে যেত মক্কা ও মদিনায়।.....
বিশ্বনবী (সা.) তাঁর ভবিষ্যদ্বাণীতে বলেছিলেন, আমার পরে তোমারা নাকিতুন, কাসিতুন ও মারিকুনদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। যারা জামাল যুদ্ধে হযরত আলী (আ.)'র বিপক্ষে লড়াই করেছিল আলী (আঃ) তাদেরকে নাকিতুন বা আনুগত্য ভঙ্গকারী, সিফফিনের যুদ্ধে বিপক্ষীয়দেরকে তিনি কাসিতুন বা বিপথগামী এবং নাহরাওয়ানের যুদ্ধে বিপক্ষীয় খারেজীদেরকে তিনি মারিকুন বা ধর্মের সত্য উপলব্ধিতে ব্যর্থ বলে মন্তব্য করেছিলেন। খারেজীদের দেখা পেলে রাসূল-সাঃ তাদের ধ্বংস করে দিতেন বলে মন্তব্য করেছিলেন।
 

বিশ্বনবী (সা.) একবার সাহাবি যুবাইরকে বলেছিলেন, তুমি কী আলীকে ভালবাস? বিস্মিত যুবাইর বলেছিল, আলীর মত ভালো মানুষকে আমি ভালবাসবো না, এটা কী করে সম্ভব, তা ছাড়া তিনি তো আমার আত্মীয়!! এবার মহানবী (সা.) বললেন, কিন্তু মনে রেখ, একদিন তুমি আলীর বিরুদ্ধে অন্যায় যুদ্ধে লিপ্ত হবে!! আলী (আ.) যুবাইরকে জামাল যুদ্ধের সময় মহানবীর (সা.) এ কথাটি স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি লজ্জিত হয়ে যুদ্ধ ক্ষেত্র ত্যাগ করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু এ সময় তিনি নিহত হন।
 

আলী (আ.)'র বিরুদ্ধে সংঘটিত সিফফিনের যুদ্ধও যে ছিল অন্যায় যুদ্ধ সে প্রসঙ্গেও মহানবী (সা.) বলেছিলেন, বিদ্রোহীর দল আম্মার ইবনে ইয়াসিরকে হত্যা করবে। সে মানুষকে ডাকবে সত্যের দিকে, অথচ তার প্রতিপক্ষ মানুষকে ডাকবে মিথ্যার দিকে।... আম্মার ইবনে ইয়াসির সিফফিনের যুদ্ধে আলী (আ.)'র পক্ষে লড়াই করতে গিয়ে মুয়াবিয়ার বাহিনীর হামলায় শহীদ হয়েছিলেন!
 

৪০ হিজরির ১৯ শে রমজানে যখন মানব ইতিহাসের সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষটি সিজদারত আলী (আ.) মাথায় বিষ-মাখানো তরবারির আঘাত হানে তখনই তিনি বলে ওঠেন, কাবার প্রভুর শপথ, আমি সফল!
 

দুধের শিশুরা যেমন মায়ের স্তনকে ভালবাসে শাহাদত ছিল তার কাছে আরও বেশি প্রিয়। ২১ রমজানের রাতে শাহাদতের কিছুক্ষণ আগেও তিনি বলেন, 'আল্লাহর শপথ! শাহাদত আমার কাছে এমন কিছু নয় যে তার সম্মুখীন হতে আমি অসন্তুষ্ট হব, বরং তা যেন আমার কাছে নিজের হারানো অস্তিত্বকে ফিরে পাবার মত আনন্দদায়ক, কিংবা আমি যেন রাতের অন্ধকারে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় পানি খুঁজছিলাম, আর হঠাৎ তা পেয়ে গেলাম, আল্লাহর কাছে যা আছে সৎকর্মশীলদের জন্য সেটাই তো উত্তম।'
 
 
 
এবারে পড়া যাক অর্থসহ ১৮ রমজানের রোজার দোয়া:
 
 
 

اليوم الثّامن عشر : اَللّـهُمَّ نَبِّهْني فيهِ لِبَرَكاتِ اَسْحارِهِ، وَنَوِّرْ فيهِ قَلْبي بِضياءِ اَنْوارِهِ، وَخُذْ بِكُلِّ اَعْضائي اِلَى اتِّباعِ آثارِهِ، بِنُورِكَ يا مُنَوِّرَ قُلُوبِ الْعارِفينَ .
হে আল্লাহ ! এ দিনে আমাকে সেহরীর বরকতের উসিলায় সচেতন ও জাগ্রত করে তোল। সেহরীর নূরের ঔজ্জ্বল্যে আমার অন্তরকে আলোকিত করে দাও। তোমার নূরের উসিলায় আমার প্রত্যেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গে তোমার নূরের প্রভাব বিকশিত কর। হে সাধকদের অন্তর আলোকিতকারী !#


source : irib.ir
0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

মহানবী (স.) হতে বর্ণিত ৪০টি হাদীস (২)
যদি কেউ দাড়ি না রাখে তাহলে সে কি ...
পবিত্র ঈদে গাদীর
দাওয়াতে দ্বীনের গুরুত্ব ও ...
কারবালা ও ইমাম হোসাইন (আ.)- ১ম পর্ব
ইমাম মাহদী (আ.) এর আবির্ভাবের ৬ মাস ...
হাসনাইন (ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইন) ...
মসনবীর গল্প
অর্থসহ মাহে রমজানের ৩০ রোজার দোয়া
ইমাম হাসান আসকারী (আ.) এর জন্ম ...

 
user comment