বাঙ্গালী
Wednesday 27th of November 2024
0
نفر 0

কুরআন ওইমামত সম্পর্কে ইমাম জাফর সাদিক (আ.)

পঁচিশে শাওয়াল হযরত ইমাম জা’ফর আসসাদিক (আ.)'র শাহাদত-বার্ষিকী। তিনি ছিলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)'র আহলে বাইতের সদস্য হযরত ইমাম বাকির (আ.)'র পুত্র এবং হযরত আলী ইবনে হুসাইন আল জয়নুল আবেদীন (আ.)'র নাতি। তাঁর জন্ম হয়েছিল মদীনায় ৮৩ হিজরির ১৭ ই রবিউল আউয়াল। আব্বাসিয় খলিফা মনসুরের ষড়যন্ত্রে এই মহান ইমামকে বিষ-প্রয়োগের মাধ্যমে শহীদ করা হয়েছিল ১৪৮ হিজরিতে। তাঁর সন্তান ইমাম মুসা কাজেম (আ.) ও নাতি ইমাম মুসা রেজা (আ.)ও আহলে বাইতের সদস্য।
কুরআন ওইমামত সম্পর্কে ইমাম জাফর সাদিক (আ.)

পঁচিশে শাওয়াল হযরত ইমাম জা’ফর আসসাদিক (আ.)'র শাহাদত-বার্ষিকী। তিনি ছিলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)'র আহলে বাইতের সদস্য হযরত ইমাম বাকির (আ.)'র পুত্র এবং হযরত আলী ইবনে হুসাইন আল জয়নুল আবেদীন (আ.)'র নাতি। তাঁর জন্ম হয়েছিল মদীনায় ৮৩ হিজরির ১৭ ই রবিউল আউয়াল। আব্বাসিয় খলিফা মনসুরের ষড়যন্ত্রে এই মহান ইমামকে বিষ-প্রয়োগের মাধ্যমে শহীদ করা হয়েছিল ১৪৮ হিজরিতে। তাঁর সন্তান ইমাম মুসা কাজেম (আ.) ও নাতি ইমাম মুসা রেজা (আ.)ও আহলে বাইতের সদস্য।
 
মুসলমানদের ওপর বিশ্বনবী (সা.)'র পবিত্র আহলে বাইত ও এই বংশধারার নিষ্পাপ ইমামদের নেতৃত্ব বা বেলায়াত সম্পর্কে  হযরত ইমাম জাফর আস সাদিক (আ.) বলেছেন, নামাজ, রোজা, হজ্ব ও জাকাতের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বেলায়াত বা আল্লাহর মনোনীত ইমামের তথা মুসলমানদের নেতার প্রতি আনুগত্য করা। কারণ, বেলায়াত হল নামাজ, রোজা, হজ্ব, জাকাত-ইত্যাদি সব কিছুরই চাবিকাঠি।  (আহলে বাইতের) ওয়ালি বা ইমাম হলেন (মুসলমানদের) শাসক, নেতা এবং ইবাদত সংক্রান্ত সব বিষয়ে মানুষের পথ-প্রদর্শক।  (উসুলে কাফি, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২৪২)
ইমাম জাফর আস সাদিক (আ.)'র মতে, মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছুই রয়েছে পবিত্র কুরআনে। আল্লাহ এমনটি করেছেন এ কারণে যাতে কেউ বলতে না পারে যে অমুক জরুরি বিষয়টি কুরআনে থাকলে ভাল হত।এই মহান ইমামের মতে দুজন মানুষের মধ্যে মতভেদ হতে পারে এমন সব বিষয়ের সমাধানও রয়েছে পবিত্র কুরআনে, কিন্তু মানুষের বুদ্ধি সেখান পর্যন্ত পৌঁছায় না। "(উসুলে কাফি, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৬২)
 
অর্থাত পবিত্র কুরআনে সব জরুরি বিষয়ের মূলনীতি বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু সেগুলো নিষ্পাপ ইমামরা ছাড়া সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। ইমাম জাফর আস সাদিক (আ.) বলেছেন, "আমি আল্লাহর বই সম্পর্কে জানি। এখানে সৃষ্টির সূচনা থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যা যা ঘটবে তার সবই বলা হয়েছে। এ মহাগ্রন্থে আকাশ ও জমিনগুলো, বেহেশত ও দোযখের এবং অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের খবর দেয়া হয়েছে। আমি আমার হাতের তালুকে যেভাবে জানি ঠিক সেভাবেই এইসব তথ্য জানি।"(উসুলে কাফি, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৬১, অধ্যায় ২০)
ইমাম জাফর আস সাদিক (আ.)'র মতে পবিত্র কুরআন সব সময়ই এ কারণে নতুন বা চিরনবীন যে, আল্লাহ একে বিশেষ যুগের ও বিশেষ শ্রেণীর মানুষের জন্য রচনা করেননি। (বিহারুল আনোয়ার, খণ্ড-৯২, পৃষ্ঠা,১৫)অর্থাত কুরআনের বাণী সব যুগের মানুষের জন্যই কল্যাণকর ও সব যুগের মানুষের চাহিদা মেটায়। কারণ, কুরআনের সঙ্গে সব যুগেই থাকবেন ইমাম ও  আইন প্রণয়নের জন্য ইজতিহাদ বা গবেষণার ব্যবস্থা।
ইমাম জাফর আস সাদিক (আ.) পবিত্র কুরআনের জ্ঞান অর্জন করার ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন যাতে মানুষ কুরআনের বাণী ভালভাবে বুঝে এইসব বাণীর তাতপর্য নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারে এবং কুরআনের শিক্ষা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করতে পারে।
সুরা নিসায় উল্লিখিত উলিল আমর অর্থ কী?
এক ব্যক্তি ইমাম জাফর আস সাদিক (আ.)-'র কাছে প্রশ্ন করেন যে সুরা নিসার ৫৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ, রাসূল এবং উলিল আমরের আনুগত্যের যে কথা বলা হয়েছে, এর অর্থ কী? উত্তরে ইমাম বলেছেন, এখানে উলিল আমর বলতে আল্লাহ আমাদের তথা আহলে বাইতকে বুঝিয়েছেন এবংকিয়ামত পর্যন্ত আমাদের আনুগত্য করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তাঁর কাছে আরো প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেন পবিত্র কুরআনে আলী (আ.) ও আহলে বাইতের নাম আসেনি?
উত্তরে ইমাম জাফর আস সাদিক (আ.) বলেছেন," আল্লাহ কুরআনে নামাজের কথা বলেছেন, কিন্তু তিনি তো এটা বলে দেননি যে কয় রাকাত নামাজ পড়তে হবে, তিন রাকাত না চার রাকাত। কিন্তু রাসূল (সা.) নামাজ সংক্রান্ত আয়াতের তাফসিরে রাকাতের সংখ্যা বলেছেন। তদ্রূপ রাসূল (সা.)ই হজ্ব ও জাকাতের  বিধানগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। যেমন, হজ্বে সাতবার কাবা প্রদক্ষিণ বা তাওয়াফ করা। ঠিক একইভাবে রাসূল (সা.)'র দেয়া ব্যাখ্যা বা তাফসির অনুযায়ী সুরা নিসার ৫৯ নম্বর আয়াতে উলিল আমর বলতে আলী এবং হাসান ও হুসাইনকে বোঝানো হয়েছে, যদিও তাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়নি।  এরপর বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন, আমি যাদের মাওলা বা নেতা আলীও তাদের মাওলা বা নেতা। তিনি মুসলমানদের আরো বলেছেন, "আমি তোমাদেরকে কুরআন ও আহলে বাইতের ব্যাপারে নসিহত করছি, কারণ, আমি আল্লাহর কাছে চেয়েছি যেন এই দুই যেন একে-অপর থেকে বিচ্ছিন্ন না থাকে যেপর্যন্ত তারা হাউজে কাউসারে আমার সঙ্গে মিলিত হয়। আর আল্লাহ আমার এই দোয়া কবুল করেছেন।"
বিশ্বনবী (সা.) আরো বলেছেন," তোমরা আহলে বাইতকে কিছু শেখাতে যেও না। কারণ, তাঁরা তোমাদের চেয়ে জ্ঞানী, তাঁরা তোমাদেরকে হেদায়াতের পথ বা সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত করবেন না ও বিভ্রান্ত করবেন না।"
 
বিশ্বনবী (সা.) যদি আহলে বাইতের পরিচয় ওমর্যাদা সম্পর্কে নীরব থাকতেন ও স্পষ্ট করে না বলতেন যে কারা তাঁর আহলে বাইত, তাহলে অন্যরা নিজেদের আহলে বাইত বলে দাবি করত। কিন্তু বিশ্বনবী (সা.)তা স্পষ্টভাবে বলে গেছেন  এবং মহান আল্লাহও পবিত্র কুরআনে আহলে বাইতের (তাঁদের সবার প্রতি অশেষ সালাম ও দরুদ বর্ষিত হোক) প্রতি স্বীকৃতি দিয়ে বলেছেন,
 "হে নবীর আহলে বাইত বা ( তাঁর পরিবারেরবিশেষ সদস্যরা !) নিশ্চয়ই আল্লাহ তো চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতেএবং তোমাদের সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে।" (সুরা আহজাব-৩৩ নম্বর আয়াত)  
(রেডিও তেহরান)


source : alhassanain
0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

বাতিল ওহাবী মতবাদ এবং তার স্বরূপ।
ইমাম মাহদী (আ.) কোথায় জন্মগ্রহণ ...
কোরআনের মুহকাম বা সুস্পষ্ট ও ...
পবিত্র কোরআনের সঙ্গে আহলে বাইতের ...
ইমাম মাহদি(আ.)'র বাবার কয়েকটি ...
আদর্শ মানব হযরত মুহাম্মদ (সা.) - ১ম ...
হযরত ঈসা (আ.) এর জন্মবার্ষিকী-২০১২
ইমাম হুসাইন (আ.)-এর জীবনী-১১তম পর্ব
যদি কেউ দাড়ি না রাখে তাহলে সে কি ...
বাংলাদেশের নিম গাছ আরাফাতের ...

 
user comment