বাঙ্গালী
Saturday 4th of May 2024
0
نفر 0

বেশি পোড়ানো পাউরুটি ও আলুতে হতে পারে ক্যানসার

আবনা ডেস্ক: পাউরুটি ও আলু আগুনে বেশি না সেঁকে বা ভেজে খাওয়াই ভালো। এসবে বেশি তাপ দিলে সেখান থেকে তৈরি হওয়া অ্যাক্রিলামাইড নামের রাসায়নিক ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে। যুক্তরাজ্যের একদল খাদ্যবিজ্ঞানী এক গবেষণায় এ কথা বলেছেন। তাঁরা বলছেন, শরীরে ক্যানসার তৈরির রাসায়নিক গ্রহণের মাত্রা কমাতে পাউরুটি, চিপস ও আলু বাদামি রঙের না করে সোনালি হলুদ করে রান্না করা উচিত।
যুক্তরাজ্য সরকারের খাদ্যবিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, শ্বেতসার-জাতীয় খাদ্য (পাউরুটি, আলু ) উচ্চ তাপে বেশি সময় ধরে রোস্ট করা, ভাজা বা গ্রিল করার পর অ্যাক্রিলামাইড তৈরি হয়, যা শরীরে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে।
এ ঝুঁকি কমাতে যুক্তরাজ্যের খাদ্যমান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান দ্য ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি (এফএসএ) বিশেষভাবে পরামর্শ দিয়ে বলেছে, রান্নার সময় সাবধানতার সঙ্গে খাবার বাদামি না করে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
যদিও যুক্তরাজ্যের ক্যানসার নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ক্যানসার রিসার্চ ইউকে বলেছে, মানবশরীরে ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরিতে এর যোগসূত্র এখনো প্রমাণ হয়নি।
এফএসএ আরও বলেছে, আলু ফ্রিজে না রাখাই ভালো। কারণ ফ্রিজের কম তাপমাত্রায় এতে চিনির পরিমাণ বেড়ে যায়, যা রান্নার সময় অ্যাক্রিলামাইড নামের ওই রাসায়নিক তৈরির সম্ভাব্য কারণ।
আরও বিভিন্ন ধরনের খাবারে অ্যাক্রিলামাইড থাকে এবং এটি রান্নার পদ্ধতির স্বাভাবিক একটি উপজাত।
১২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার বেশি তাপে তৈরি উচ্চ শর্করাজাতীয় খাবার যেমন পাউরুটি, বিস্কুট, ক্র্যাকারস, কেক ও কফিতে অ্যাক্রিলামাইড রাসায়নিকটি সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়।
যখন ঘরে রান্নার সময়ও আলু, চিপস, পাউরুটি ও গাজরজাতীয় খাবার উচ্চ তাপে সেদ্ধ, রোস্ট, গ্রিল করা বা ভাজা হয়, তখনো অ্যাক্রিলামাইড তৈরি হতে পারে। যেমন টোস্ট করতে পাউরুটি ভাজা হলে এতে অ্যাক্রিলামাইডের পরিমাণ বেড়ে যায় অর্থাৎ টোস্টের ঘন-পোড়া অংশে অ্যাক্রিলামাইড বেশি থাকে।
এফএসএ জানায়, কী পরিমাণ অ্যাক্রিলামাইড মানুষের পক্ষে সহনীয়, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে সংস্থাটির বিশ্বাস, আমরা খুব বেশি পরিমাণেই অ্যাক্রিলামাইড গ্রহণ করছি।
এ কারণে সংস্থাটির পরামর্শ হলো, খাবার তৈরির পদ্ধতিতে মানুষকে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে। তাদের পরামর্শগুলো—প্রথমত, টোস্ট বা ভাজার সময় আলু, পাউরুটি ও মূলযুক্ত সবজি কিছুটা হলদে রঙের রাখতে হবে।
দ্বিতীয়ত, কাঁচা আলু ফ্রিজে রাখা যাবে না। এগুলোকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ঠান্ডা ও অন্ধকার জায়গায় রাখতে হবে। তৃতীয়ত, ওভেনে চিপস, পিৎ​জা, ভাজা আলু ও গাজর গরম করার সময় রান্নার নির্দেশনাগুলো সতর্কতার সঙ্গে মেনে চলতে হবে।
স্বাস্থ্যকর, সুষম খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হবে।

কী কী ঝুঁকি?
প্রাণীদের ওপর করা এক গবেষণায় দেখা দেখা গেছে, ডিএনএতে রাসায়নিকের প্রভাব ক্ষতিকর ও ক্যানসারের কারণ। তাই বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এটি মানুষের বেলায়ও হতে পারে; যদিও এখনো এর পেছনে কোনো অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
অ্যাক্রিলামাইডের সম্ভাব্য প্রভাব হলো এটি জীবনকে ক্যানসারের ঝুঁকিতে রাখে। এ রাসায়নিক স্নায়ুতন্ত্র ও প্রজনন-প্রক্রিয়ায় ওপরও প্রভাব ফেলে। (তবে মানবশরীরে এটি কীরূপ প্রভাব ফেলবে, তা নির্ভর করছে তা কীরূপে প্রকাশ পাবে তার ওপর।)
ধূমপায়ী মানুষ অধূমপায়ীদের থেকে তিন-চার গুণ বেশি অ্যাক্রিলামাইডের ঝুঁকিতে থাকে। কারণ, তামাকেও এই রাসায়নিক আছে।
এ বিষয়ে জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত খাবার প্রস্তুতকারী শিল্পে অ্যাক্রিলামাইড কমাতে ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি কাজ করছে।
এর কিছু সফলতাও আছে, ২০০৭-২০১৫ সালের মধ্যে এ প্রতিষ্ঠান যুক্তরাজ্যের সব পণ্যে গড়ে ৩০ শতাংশ অ্যাক্রিলামাইড কমার প্রমাণ পেয়েছে।

ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সির
এফএসএর পরিচালক স্টিভ উইয়ারনে বলেন, বেশির ভাগ মানুষ জানেই না যে অ্যাক্রিলামাইড নামের কিছু আছে।
আমাদের প্রচারের মধ্য দিয়ে খাদ্যাভ্যাসে সামান্য একটু পরিবর্তন এনে কীভাবে অ্যাক্রিলামাইড গ্রহণ কমানো যায়, সে বিষয়ে ভোক্তাদের জানাতে চাই। যদিও অ্যাক্রিলামাইড কতটুকু গ্রহণে কী ঝুঁকি, তা নিয়ে এখনো জানা বাকি আছে। সরকার, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও অন্যদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো অ্যাক্রিলামাইড গ্রহণ কমাতে সহযোগিতা করা।

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

উম্মুল মুমিনীন হযরত খাদীজা (আ.)
মহানবী (স.) হতে বর্ণিত ৪০টি হাদীস (২)
তাকওয়া হাসিলের উপায়
পুনরুত্থান দিবস
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের দিনগুলি ...
ইসলামী ঐক্য : গুরুত্ব ও তাৎপর্য
আকাশ, পৃথিবী ও হযরত আদম (আ.) সৃষ্টি ...
দাওয়াতে দ্বীনের গুরুত্ব ও ...
কারবালার বীর নারী হযরত যায়নাব (আ.)
কুরআন ওইমামত সম্পর্কে ইমাম জাফর ...

 
user comment