হিজরী সনের দশম বর্ষ এবং হজের মৌসুম। হেজাযের মরুভূমি বিশাল জনসমষ্টির সাক্ষী যাদের সকলেই একই ধ্বনি দিতে দিতে একই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছেন।
ঐ বৎসর হজের দৃশ্যে এক অন্যরকম উদ্দীপনা এবং উত্তেজনা বিরাজ করছিল। মুসলমানেরা অধীর আগ্রহে এবং দ্রুতবেগে পথের দু’ধারে বাড়ী ঘর পেরিয়ে মক্কায় উপস্থিত হচ্ছিলেন।
মক্কা মরু প্রান্তরের লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনি কানে আসছিল। কাফেলা সমূহ পালাক্রমে শহরের নিকটবর্তী হচ্ছিল। হাজীগণ ইহরামের লেবাস পরে একই বেশে ধূলামেখে অশ্রু ঝরিয়ে আল্লাহর নিরাপদ হারামে উপস্থিত হচ্ছিলেন। আর যে গৃহ (কাবা) তৌহীদের মহান দৃষ্টান্ত হযরত ইবরাহীম (আ.) কতৃক নির্মিত তার চার পাশে তাওয়াফ করছিলেন।
ফরিদ ওয়াজদী দশম হিজরীতে অংশগ্রহণকারী হাজীদের সংখ্যা ৯০ হাজার বর্ণনা করেছেন(দায়েরাতুল মায়ারেফ, ফরিদ ওয়াজদী, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৫৪২।) কিন্তু কোন কোন বর্ণনায় ১২৪০০০ বলা হয়েছে।(আল গাদীর, ১ম খণ্ড, পৃ. ৯।)
রাসূল (সা.) দেখতে পেলেন : মসজিদুল হারাম পূর্ণ এবং সবাই ইবাদতে মশগুল।
রাসূল (সা.) খুশী হলেন যে তিনি এ বৃহৎ কার্য সম্পাদন করতে পেরেছেন এবং তাঁর রেসালতের দায়িত্বকে উত্তম ভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছেন।
কিন্তু মাঝে মধ্যেই দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা তাঁর চেহারায় দৃশ্যমান হতো এবং আনন্দকে তাঁর জন্য অপ্রীতিকর করে তুলত।
তিনি ভয় পেতেন যে, তার মৃত্যুর পর হয়ত জনতার এ সমষ্টি ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়বে এবং তাদের মধ্যকার ভ্রাতৃত্ববোধ এবং ঐক্য লোপ পাবে ও পুনরায় অধঃপতিত হবে।
রাসূল (সা.) খুব ভাল করেই জানতেন যে, মুসলিম উম্মাহর জন্য এক ন্যায়পরায়ণ ও জ্ঞানী ইমামের পথ নির্দেশনা অতি জরুরী। আর এমনটি না হলে তাঁর দীর্ঘ দিনের মূল্যবান শ্রম বৃথা যাবে।
এ কারণেই মহানবী (সা.) যখনই সফর অথবা যুদ্ধের জন্যে মদীনার বাইরে যেতেন, এমনকি সে সফর সংক্ষিপ্ত হলেও তিনি বিশ্বস্ত এবং যোগ্য ব্যক্তিকে দায়িত্ব অর্পণ করতেন এবং মদীনার জনগণকে অভিভাবকহীন রেখে যেতেন না।(কামেল, ইবনে আসির, পৃ. ২৪২, ২৭৮, ২১৬।)
সুতরাং কিরূপে বিশ্বাস করা সম্ভব যে, আমাদের প্রিয় ও সদয় নবী (সা.) বিশাল মুসলিম উম্মাহকে নিজের মৃত্যুর পর অভিভাবকহীন রেখে যাবেন। আর তিনি সবার চেয়ে ভাল জানেন যে এই পদমর্যাদার যোগ্য ব্যক্তি কে এবং খেলাফতের পোশাক কোন যোগ্য ব্যক্তির মাপে কাটা ও সেলাই করা হয়েছে।
তিনি সেই ব্যক্তি যাকে বহু সংখ্যক কুরাইশ সর্দার ও রাসূল (সা.)-এর আত্মীয়দের মাঝে ইসলামের দাওয়াতের জন্য যাদেরকে একত্রিত করা হয়েছিল, তাদের মাঝে নিজের উত্তরাধিকারী হিসাবে নিযুক্ত করেছিলেন।(তারিখে তারাবী, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১১৭১-১১৭৩।)
তিনি পবিত্র ও একত্ববাদী ছিলেন। তিনি বিন্দুমাত্র শিরক ও মূর্তি পূজা করেন নি।
তিনি দীনে মুবিনে ইসলামের অগ্রগতির ক্ষেত্রে ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। তাঁর জ্ঞানের ভিত্তি রাসূল (সা.)-এর জ্ঞানের উৎস থেকেই। মজলুমের ডাকে সাড়া দান তাঁর উত্তম বিচার কার্যেরই অন্তর্ভূক্ত।(ফাযায়েলে খামসা, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৭৮- ১৮৬।) তিনি সবার নিকট পরিচিত। তিনি হলেন হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (আ.)।
পবিত্র হজ পালন করে সকলে আপন শহর অভিমুখে যাত্রা করেন। হঠাৎ রাসূল (সা.) (গাদীরে খুম নামক স্থানে) সকল হাজীদেরকে যাত্রা বিরতির নির্দেশ দেন। কেননা জিবরাইল (আ.) অবতীর্ণ হলেন এবং এই আয়াতটি তাঁকে জানালেন :
)يا ايهّا الرّسول بلّغ ما انزل اليك من ربّك وان لّم تفعل فما بلّغت رسالته والله يعصمك من النّاس(
“হে রাসূল! তোমার প্রভুর নিকট হইতে তোমার প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তা (লোকদের নিকট) পৌঁছিয়ে দাও এবং যদি তুমি এরূপ না কর তাহলে তুমি তাঁর বাণী আদৌ পৌঁছালে না। নিশ্চয় আল্লাহ্ আপনাকে মানুষের কবল হতে রক্ষা করবেন” (মায়েদা : ৬৭)।
যে বিষয়টি আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসূলকে কড়া ভাষায় খেতাব করেছিলেন, তা ছিল আলী (আ.)-এর খেলাফতকে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রচার করা। রাসূল (সা.) বিষয়টি প্রচারে বিরত থাকছিলেন, কেননা ভয় পেতেন বিষয়টি মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ ও ফাটলের কারণ হতে পারে। তিনি তা প্রচারের জন্য অনুকূল পরিবেশের প্রতীক্ষায় ছিলেন। আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার পর তিনি অনুধাবন করলেন এখনই উপযুক্ত সময়। আর এই লক্ষ্যেই জনগণকে গাদীরে খুম নামক ধুধু মরুভূমিতে একত্রিত করলেন, যার মাধ্যমে ইসলামের প্রাণ অর্থাৎ খেলাফত ও উত্তরাধিকারের ব্যাপারটি সম্পূর্ণরূপে স্পষ্ট হয়ে যায়।
জনগণ বুঝতে পারছিলেন না যে কেন থামতে বললেন এবং কী এমন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার ঘটেছে। কিন্তু কিছু সময় না যেতেই যোহরের নামাজের জন্য আহবান করা হলো এবং নামাজ আদায় করার পর জনগণ রাসূল (সা.)-এর আকর্ষণীয় এবং আসমানী চেহারাকে মিম্বরের উপর (যা উটের হাউদায দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছিল) দেখতে পেলেন।
সর্বত্র নিস্তব্ধ অবস্থা বিরাজ করছিল ... এমন সময় রাসূল (সা.)-এর মনোরম ও অর্থবহ বাণী মরুভূমির নিস্তব্ধতার অবসান ঘটাল। আল্লাহর প্রশংসার পর নিজের আসন্ন মৃত্যুর মর্মান্তিক খবর ঘোষণা করে বললেন :
হে লোক সকল! আমি তোমাদের জন্য কেমন নবী ছিলাম? সকলে সমস্বরে বলল : ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আমাদেরকে সদুপদেশের ক্ষেত্রে কিঞ্চিত অবহেলা করেন নি। উপদেশ ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে উপেক্ষা করেন নি। আল্লাহ্ আপনাকে উত্তম পুরস্কার দান করুন (আপনি উত্তম রাসূল)। রাসূল (সা.) বললেন : আমার পর আল্লাহর কিতাব (কোরআান) ও পবিত্র মাসুমগণ (আমার আহলে বাইত) একত্রে তোমাদের পথ প্রদর্শক। তোমরা যদি এই দু’টিকে দৃঢ় ও পরিপূর্ণ ভাবে আকড়ে ধর তাহলে কখনোই পথভ্রষ্ট হবে না।
অতঃপর আলী (আ.)-এর হস্ত মোবারককে এমন ভাবে উচ্চে তুলে ধরলেন যে উপস্থিত সকলেই তাকে দেখতে পেলেন এবং বললেন :
লোকসকল! কোন সে ব্যক্তি যে মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের থেকে ও বেশি শ্রেয় এবং তাদের উপর বেলায়েত ও আধিপত্য রাখেন?
জনগণ বললেন : আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন।
রাসূল (সা.) বললেন : আল্লাহ্ হলেন আমার মাওলা (অভিভাবক) আর আমি মুমিনদের মাওলা এবং তাদের উপর তাদের নিজেদের চেয়েও বেশি অধিকার রাখি। অতঃপর বললেন : আমি যার মাওলা এবং যার প্রতি বেলায়েত ও আধিপত্ব রাখি। এই আলীও আমার পর তাদের মাওলা।
من كنت مو لاه فهذا علي مولاه.
এই বাক্যটিকে তিনবার আবৃতি করলেন। সবশেষে বললেন : এখানে উপস্থিত সকলে এ সত্য অন্যদের কাছে পৌঁছে দিবে।
জনগণ তখনো বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়েনি এমতাবস্থায় এ আয়াতটি অবতীর্ণ হলো :
)اليوم اكملت لكم دينكم واتممت عليكم نعمتي ورضيت لكم الا سلام دنيا(
“আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নেয়ামতকে (অনুগ্রহকে) সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দীনরূপে মনোনীত করলাম”(মায়েদা : ৩)।
আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তরাধিকারী মনোনীত হওয়ার পর উপস্থিত জনতা মরিয়া হয়ে রাসূল (সা.)-এর উত্তরাধিকারী হযরত আলী (আ.)-কে মোবারক বাদ জানালেন।
প্রথম যে ব্যক্তি আলী (আ.)-কে মোবারকবাদ জানায় সে হলো আবু বকর, অতঃপর ওমর। তারা এই বাক্যগুলি বলছিল এবং আমিরুল মুমিনিন আলী (আ.)-এর কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছিল :
بخ بخ يا علي ابن ابي طالب اصبحت موليئ و مولي كل مومنين و المومنات
“শুভ হোক, হে আলী ইবনে আবি তালিব, আজ থেকে আপনি আমার এবং সকল মুসলিম নর-নারীর মাওলা বা নেতা হয়ে গেলেন।(আল গাদীর, ১ম খণ্ড, পৃ. ৯-১১।)
হাদীসে গাদীরের বর্ণনাকারীগণ
প্রকৃত পক্ষে হাদীসে গাদীরের রাবীর সংখ্যা ১২০,০০০। কেননা রাসূল (সা.)-এর নির্দেশ অনুযায়ী সকলেই এই সফরের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসাবে এ হাদীসটি অন্যদের কাছে বর্ণনা করেন। (আল গাদীর, ১ম খণ্ড, পৃ. ৬০-১১।) আর এ কারণেই মুসলমানদের সর্বস্তরে গাদীরের ঘটনাটি প্রতিবারই নতুন করে জীবিত হয়েছিল।
গাদীরে খুমের ঘটনার প্রায় ২৫ বৎসর পর অর্থাৎ যখন রাসূল (সা.)-এর অধিকাংশ সাহাবীরা ইহধাম ত্যাগ করেছিলেন এবং তাদের মধ্যে অল্প সংখ্যক জীবিত ছিলেন; আলী (আ.) জনগণকে বললেন : আপনাদের মধ্যে যারা গাদীরে খুমে উপস্থিত ছিলেন এবং রাসূল (সা.)-এর মুখ থেকে হাদীসে গাদীর শ্রবণ করেছিলেন, সাক্ষ্য দান করুন।
ঐ বৈঠকেই ৩০ জন রাবী উঠে দাঁড়িয়ে হাদীসে গাদীর সম্পর্কে সাক্ষ্য প্রদান করেছিলেন। (আল গাদীর, ১ম খণ্ড,, পৃ. ১৬৬-১৭৪।)
মুয়াবিয়ার মৃত্যুর ১ বৎসর পূর্বে (অর্থাৎ ৫৯ হিজরীতে) ইমাম হুসাইন (আ.) বনি হাশেম, আনসার এবং সকল হাজীদেরকে “মিনায়” একত্রিত করে বক্তৃতার এক পর্যায়ে বললেন : আপনাদেরকে আল্লাহর শপথ করে বলছি, জানেন কি রাসূল (সা.) গাদীরে খুমে আলীকে মুসলিম উম্মাহর নেতা ঘোষণা করেছিলেন এবং উপস্থিত সকলকে তা অন্যদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন?
সকলে বলল : জী হ্যাঁ। (আল গাদীর, ১ম খণ্ড,পৃ. ১৯৮-১৯৯।)
আহলে সুন্নাতের পণ্ডিতরা তাদের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থসমূহে রাসূল (সা.)-এর ১১০ জন সাহাবী যারা স্বয়ং মহানবীর থেকে হাদীসে গাদীর শুনেছেন এবং অন্যদের কাছে বর্ণনা করেছেন তাদের নাম উল্লেখ করেছেন।(আল গাদীর, ১ম খণ্ড,পৃ. ১৪-৬১।) আরও কিছু পণ্ডিতগণ হাদীসে গাদীর এবং গাদীরের ঘটনা সম্পর্কে বিশেষ কিতাবও রচনা করেছেন।(আল গাদীর, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৫২-১৫৭ এ ২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।)
হাদীসে গাদীরের তাৎর্পয
স্পষ্ট দলিল দ্বারা প্রমাণিত হয় যে ‘মাওলা’ এবং ‘ওয়ালী’ শব্দের অর্থ হলো মুসলিম উম্মাহর উত্তরাধিকারী ও অভিভাবক এবং অন্য অর্থের সাথে সংগতি রাখে না। এখন নিম্নের বিষয়গুলির প্রতি লক্ষ্য করুন :
১.ইতোমধ্যেই আমরা জেনেছি যে, রাসূল (সা.) হাদীসে গাদীর উপস্থাপন করতে ভয় পাচ্ছিলেন এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তিনি তা ঘোষণা করেন নি।
তাহলে একথা বলা সম্ভব নয় যে হাদীসে গাদীরের উদ্দেশ্য হলো রাসূল (সা.)-এর সাথে আলী (আ.)-এর বন্ধুত্বকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া? যদি উদ্দেশ্য তাই হতো, তাহলে তা প্রচার করাতে ভয়ের কোন কারণ ছিল না এবং তাতে মুসলমানদের ঐক্য বিনষ্ট হতো না। সুতরাং উদ্দেশ্য খেলাফত ও উত্তরাধিকারীর ব্যাপারই ছিল। আর এ ভীতি বিদ্যমান ছিল যে, এই বিষয়টি প্রচার করলে কিছু সংখ্যক স্বার্থান্বেষী ঔদ্ধ্যত্য প্রকাশ করতে পারে।
২.রাসূল (সা.) “মান কুনতু মাওলা ফাহাযা আলীয়ুন মাওলা” বলার পূর্বে জনগণের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি নিয়েছিলেন যে, তিনি মুমিনদের নিজেদের অপেক্ষা তাদের উপর অধিক অধিকার রাখেন এবং উম্মতের কর্ণধার। অতঃপর ঐ স্থানকে আলীর জন্যেও নির্ধারণ করলেন এবং বললেন : “আমি যার মাওলা আলীও তার মাওলা।”
৩.হাসসান ইবনে ছাবেত গাদীরের ঘটনাটিকে রাসূল (সা.)-এর অনুমতিক্রমে কবিতার ভাষায় বর্ণনা করেন এবং রাসূল (সা.) তাতে অনুমোদন দেন। হাসসানের কবিতায় আলী (আ.)-এর খেলাফত ও ইমামতের মর্যদাকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করা হয়েছে কিন্তু ব্যাপক জনসমষ্টির কেউই প্রতিবাদ করেন নি যে কেন “মাওলা” শব্দের ভুল অর্থ করছ। বরং সকলেই তার প্রশংসা করেছিলেন এবং স্বীকৃতিদান করেছিলেন।
কবিতাটির কিছু অংশ এখানে তুলে ধরছি :
“রাসূল (সা.) আলীকে বললেন : ওঠ হে আলী আমার পর তুমিই হলে উম্মতের নেতা ও ইমাম। সুতরাং আমি যার মাওলা এবং যার দীনি ও ঐশী কর্ণধার এই আলীও তার মাওলা এবং অভিভাবক। অতএব, তোমরা সকলেই আলীর প্রকৃত অনুসারী হও।”
৪.অনুষ্ঠান শেষে রাসূল (সা.) হযরত আলী (আ.)-কে নিয়ে একটি তাঁবুর মধ্যে বসলেন এবং সকলকে এমনকি তাঁর স্ত্রীদেরকেও হযরত আলীকে অভিনন্দন জানাতে বললেন এবং তাঁর হাতে বাইয়াত করতে বললেন। আর আমিরুল মুমিনীন হিসাবে হযরত আলীকে সালাম জানাতে বললেন।(আল গাদীর, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৭০- ২৭১।) এটা স্পষ্ট যে, এ অনুষ্ঠান শুধুমাত্র তাঁর খেলাফত ও ইমামতের সাথেই সামঞ্জস্যপূর্ণ।
৫.রাসূল (সা.) দু’বার বলেছিলেন : هنئوني অর্থাৎ আমাকে অভিনন্দন জানাও। কেননা আল্লাহ তায়ালা আমাকে শ্রেষ্ঠ নবী ও আমার আহলে বাইতকে উম্মতের জন্য ইমাম নির্বাচন করেছেন।(আল গাদীর, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৭৪।)
এসকল দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করার পর হাদীসে গাদীর সম্পর্কে আর কোন রূপ সন্দেহের অবকাশ থাকতে পারে না।