১. ‘ফতওয়া’ ফকিহদের পরিভাষায় বিশেষজ্ঞ ফকিহ কর্তৃক আল্লাহর বিধান বর্ণিত হওয়া। আর ফকিহ হল সেই ব্যক্তি যে ফিকাহ শাস্ত্রের স্বীকৃত উৎসের (অর্থাৎ কোরআন, সুন্নাহ, আকল এবং এমন ইজমা যা মাসুম ইমামদের হাদিসের থেকে উৎসারিত ও মতের নির্দেশক) ভিত্তিতে কোন বিষয়ে মত দান করে থাকেন। ফতওয়ার উদাহরণ :
ক. নামাজের তৃতীয় ও চতুর্থ্ রাকআতে একবার ‘তাসবিহাতে আরবাআ’ (সুবহানাল্লাহে ওয়াল হামদু লিল্লাহে ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহে আল্লাহু আকবার) বলা যথেষ্ট।
খ. যদি কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতা প্রতারিত হয়ে থাকে তবে তার অধিকার রয়েছে ক্রয়কে বাতিল করার…
২. ‘হুকম’ হল শরীয়তের বৈধ শাসক ও ফকিহ আলেম কর্তৃক কোন ধর্মীয় বা রাষ্ট্রীয় বিধানকে কার্য্ কর ও বাস্তবায়নের স্থান অথবা সময় অথবা তার বিষয়বস্তু ও দৃষ্টান্তকে নির্ধারণ করা এবং কল্যাণ চিন্তার ভিত্তিতে কোন কাজকে সম্পাদন অথবা পরিত্যাগের আবশ্যকতা ঘোষণা। উদাহরণ:
ক. ফকিহ ঘোষণা করলেন : অমুক দিন রমজান মাসের প্রথম দিন।
খ. ফকিহ নির্দেশ দিলেন : বিশেষ অবস্থার কারণে বিশেষ দিন, স্থান ও সময়ে যাকাত অথবা খোমস দিতে হবে।
গ. অমুক বস্তুর মূল্য এত নির্ধারণ করা হল অথবা অমুক পণ্যের অবৈধ মজুত বাজেয়াপ্ত ও পণ্যটি সরকারী মালিকানায় নেয়া হল।
ঘ. ধর্মীয় দণ্ডবিধি কার্য্ কর করা; যেমন, চুরি ও ব্যভিচারের শাস্তিদান।
ফতওয়া ও হুকমের মধ্যে পার্থক্য
যদি কোন ক্ষেত্রে মারজায়ে তাকলিদের ফতওয়া ও ওয়ালিয়ে ফকিহর হুকমের মধ্যে বৈপরীত্য দেখা যায় তবে অবশ্যই ওয়ালিয়ে ফকিহর হুকম প্রাধান্য পাবে এবং তার বিরোধিতা করা হারাম। যেমন যদি কোন ফকিহ বলেন খাদ্যদ্রব্য ভিন্ন অন্য কোন পণ্য মজুত করে রাখাতে সমস্যা নেই বা তা অবৈধ নয়; অপরদিকে ওয়ালিয়ে ফকিহ অর্থ্ নৈতিক সঙ্কট এবং সমাজের মানুষের দুর্গ্ তির কথা বিবেচনা করে যে কোন প্রয়োজনীয় দ্রব্য -যদিও তা খাদ্যদ্রব্য না হয়- মজুত করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন, তাহলে ওয়ালিয়ে ফকিহর নির্দেশই কার্য্ কর হবে এবং তা পালন করা সকল মার্জার মুকাল্লিদের ওপর অপরিহার্য্ হবে। এক্ষেত্রে পূর্ণ্ যোগ্যতার মুজতাহিদ (ইজতিহাদের জন্য আবশ্যক সকল বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ফকিহ) শাসকের নির্দেশ লঙ্ঘন করা, অন্য কোন মুজতাহিদ ও ফকিহর জন্যও জায়েজ নয়, তবে যদি তাঁরা নিশ্চিত হন যে, তিনি ইজতিহাদে ভুল করেছেন তবে ভিন্ন কথা। (সাইয়েদ কাজেম তাবাতাবায়ী ইয়াজদি, ওরওয়াতুল উসকা, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৭)#আল বাসাইর