আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা আবনার রিপোর্ট : সৌদি আরবের এক আলেম ইরাকে তত্পর সন্ত্রাসী চক্র আলকায়েদা সদস্যদের উদ্দেশ্যে এ আহবান জানিয়েছেন যে, ইরাকের শিয়া জনগণের নারী শিয়া নারী ও শিশুদেরকে হত্যা করে ত্রাস সৃষ্টি করুন!
রিয়াদের ‘ইমাম মুহাম্মাদ বিন সৌদ’ নামক শরিয়ত শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামাজিক ওয়েব সাইটে ইরাকের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত আলকায়েদা জঙ্গীদেরকে ‘মুজাহিদ’ আখ্যায়িত করে বলেছেন : যদি মুজাহিদরা (আলকায়েদা জঙ্গীরা) ইরাকে হত্যা ও চাপ বৃদ্ধি করে এবং নারী ও শিশুদেরকে আটকে রাখে তবে রাফেজীদের [সকল শিয়া ফির্কা] মনে ত্রাসের সৃষ্টি করতে পারবে।
সৌদি আরবের এ ধর্ম প্রচারকের এহেন মন্তব্যের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন সৌদি আরবের বিভিন্ন দৈনিকের কলামিস্ট ও লেখক সমাজ।।
দৈনিক মদিনার কলামিস্ট এ সম্পর্কে বলেছেন : আল্লাহকে সাক্ষী রাখছি, যারা সবচেয়ে বেশী উপহাসের পাত্র হয় এবং ইসলামের অবমাননার কারণ হয় তারা ইহুদী, খ্রিষ্টান বা মজুসিরা (অগ্নিউপাসক) নয় বরং এ ধরণের উগ্রতাবাদীরা (সায়াদ আল-দুরাইহিম) যারা হত্যা ও রক্তপাতের প্রতি আহবান জানায়।
সৌদি দৈনিক উকাজের কলামিস্ট ‘আব্দুল্লাহ বিন বাখিত’ বলেছেন : ‘যখন এ ধরণের ব্যক্তি কোনরূপ জবাবদিহিতা ও অভিযুক্ত হওয়া ছাড়াই পার পেয়ে যায় তখন আশ্চার্য হওয়ার কিছু নেই যে, সন্ত্রাসীরা সৌদি আরবে বসবাস করে।
সৌদি লেখক ‘মুহাম্মাদ আল-উমার’ এ সম্পর্কে বলেছেন : আমাদের পূর্বপুরুষরা এ ধরণের কাজ করেননি...।
অপর এক লেখক ‘আব্দুল আযিয আল-যাহরানী’ আল-দুরাইহিমের উদ্দেশ্যে লিখেছেন : ‘রহমতের নবীও (স.) ইহুদীদের নারী ও শিশুদেরকে হত্যা করতেন না!’
দৈনিক আল-ওয়াতানের কলামিস্ট হালিমা মুজাফফার, আল-দুরাইহিমের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান এবং তার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য সৌদি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
দৈনিক আল-রিয়াদের কলামিস্ট ‘ইউসুফ আবুল খাইল’, দুরাইহিমকে এভাবে পরিচয় করিয়েছেন : ‘এ ধরণের ভয়ংকর মন্তব্যকারীর অন্তর হতে মহান আল্লাহ শুধুমাত্র ঈমানই তুলে নেননি বরং এ পৃথিবীতে পশু ও বৃক্ষরাজী যে সকল রহমত প্রাপ্ত হয় তাও তার উপর হতে তুলে নিয়েছেন’।
উল্লেখ্য, ‘সায়াদ আল-দুরাইহিম’ কিছুদিন পূর্বেও দাবী করেছিলেন যে, ‘বেহেশতে প্রবেশের একমাত্র অধিকারী হচ্ছে নাজদ অঞ্চলের ওলামাগণ’।
সৌদি আরবের এ ধর্ম প্রচারক ও শরিয়ত বিষয়ক শিক্ষক আরো বলেছেন : ‘আমি নাজদের বাসিন্দাদের নিষ্পাপ বলে দাবী করছি না; সুন্নি মাযহাব এবং পরিত্রাণ প্রাপ্ত ফির্কার অনুসারীরা যেস্থানেই থাকুক না কেন তাদের অধিকাংশই এ ভূখণ্ডে অবস্থানরত!!!
সামাজিক ওয়েব সাইটসমূহে সক্রিয় অনেক সৌদি নাগরিক আল-দুরাইহিমের এমন মন্তব্যের নিন্দা জানিয়ে তার অবস্থানকে বর্ণবাদী বলে আখ্যায়িত করেছেন।