হযরত আলী (আ.) নবী দূহিতা হযরত ফাতেমা (আ.)-কে দাফন করার সময় বলেছিলেন :“হে রাসূলুল্লাহ্! আমার পক্ষ থেকে এবং আপনার কন্যার যিনি আপনার সান্নিধ্যে গমন করেছেন এবং আপনার সাথে মিলিত হয়েছেন তাঁর পক্ষ হতে আপনার ওপর সালাম। হে রাসূলাল্লাহ্! আপনার সবচেয়ে প্রিয় কন্যার বিয়োগ ব্যথায় আমার ধৈর্য হ্রাস পেয়েছে, তাঁর শোকে আমার সহ্যশক্তি দুর্বল হয়েছে। তবে আপনার মহাপ্রয়াণ ও আপনাকে হারানোর বিরাট মুসিবতে যে আমি ধৈর্যধারণ করতে পেরেছি তাতেই রয়েছে আমার সান্ত্বনা। আমি আপনাকে কবরে শায়িত করেছিলাম। আর আমার গ্রীবা ও বক্ষদেশের মাঝখানে আপনার পবিত্র আত্মা দেহত্যাগ করেছিল। নিশ্চয় আমরা মহান আল্লাহর এবং নিশ্চয়ই আমরা তাঁর কাছে প্রত্যাবর্তন করব। (আমার কাছ থেকে) আমানত ফিরিয়ে নেয়া হলো এবং যা দেয়া হয়েছিল তা পুনরায় নিয়ে নেয়া হলো। আপনি যে ঘরে বসবাস করছেন সে ঘরের জন্য আমাকে মনোনীত করা পর্যন্ত আমার সকল দুঃখ ও শোক এখন স্থায়ী হয়ে গেল এবং রজনীগুলো নিদ্রাহীনতা ও জাগরণের মধ্যে দিয়েই অতিবাহিত হবে। আর অতি শীঘ্রই আপনাকে আপনার কন্যা আপনার উম্মত তাঁর ওপর যে অত্যাচার করেছে তা অবহিত করবেন। অতএব, আপনি তাঁকে বিস্তারিত সব কিছু জিজ্ঞেস করুন এবং তাঁর কাছ থেকে প্রকৃত অবস্থা জেনে নিন। এটি (আপনার প্রাণপ্রিয় কন্যাকে হারানো) এত অল্প সময়ের মধ্যে ঘটেছে যে, আপনার মৃত্যুর পর দীর্ঘকালও অতিবাহিত হয় নি এবং আপনার পুণ্য স্মৃতি এখনো বিদ্যমান। আপনাদের উভয়ের প্রতি আমার সালাম। এ সালাম একজন চিরবিদায় জ্ঞাপনকারীর, তবে এটি ঘৃণা প্রদর্শনকারী বা বিরক্ত কোন ব্যক্তির সালাম নয়। তাই, আমি যদি (এ স্থান থেকে)চলে যাই তা এজন্য নয় যে, আমি অস্থির ও ক্লান্ত হয়ে গেছি। আর আমি যদি (এখানে চিরস্থায়ীভাবে) থেকে যাই তাহলে তা এজন্য নয় যে, মহান আল্লাহ তাঁর ধৈর্যশীল বান্দাদের কাছে যে অঙ্গীকার করেছেন তাতে আমি কুধারণা পোষণ করি (অর্থাৎ আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়েছি)।
(নাহজুল বালাগ্বার ২০২ নং খুতবা থেকে চয়নকৃত)