বাঙ্গালী
Wednesday 27th of November 2024
0
نفر 0

‘কায়েম’ নামটি উচ্চারণের সাথে সাথে শিয়া মুসলমানরা কেন উঠে দাঁড়ান

ইরানের খোরাসান শহরে ইমাম রেজা(আ.)-এর উপস্থিতিতে ‘কায়েম'(قائم) শব্দটি বলা হলে, ইমাম (আ.)বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে তাঁর মাথায় হাত রেখে বললেন: اللهم عجل فرجه و سهل مخرجه . . . হে আল্লাহ! তাঁর আবির্ভাবকে ত্বরান্বিত করুন এবং তার আন্দোলনকে সহজতর করুন।
শেষ জামানার ইমাম তথা ইমাম মাহদীর (আ.) অন্যতম উপাধি হচ্ছে ‘আল কায়েম'। যখন ‘কায়েম' নামটি উল্লেখ করা হয়, তখন কেন শিয়ারা উঠে দাঁড়ান? শিয়াদের মধ্যে প্রথাসিদ্ধ এবং নিয়মিত একটি কাজ হচ্ছে যখন কোন মজলিসে ‘কায়েম' (আজ্জালাল্লাহু তায়ালা ফারাজাহুশ শরীফ)-এর নাম উল্লেখ করা হয়, তখন তারা বসা থেকে উঠে দাড়ান। যদিও এর কোন সুস্পষ্ট দলিল নেই। কিন্তু বলা যেতে পারে শিয়ারা এই কর্মকে মুস্তাহাব হিসেবে গণ্য করেন এবং প্রকৃতপক্ষে এই প্রিয় ইমামের সম্মানার্থে তারা বসা থেকে উঠে দাঁড়ান।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, খোরাসানে ইমাম রেজা (আ.)-এর উপস্থিতিতে ‘কায়েম' শব্দটি উল্লেখ করা হলে, তিনি উঠে দাঁড়াতেন এবং তার মাথার উপর হাত রেখে বলতেন,
"اللهم عجل فرجه وسهل مخرجه"
হে আল্লাহ! তাঁর আবির্ভাবকে ত্বরান্বিত করুন এবং তার আন্দোলনকে সহজতর করুন। (বিহারুল আনওয়ার, আল্লামা মাজলিসি, ৫১তম খণ্ড, পৃ- ৩০)
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ইমাম জাফর সাদিক (আ.)-এর যুগেও এই প্রথা চালু ছিল। ইমাম জাফর সাদিক (আ.)-এর নিকট প্রশ্ন করা হল: ‘কায়েম' শব্দটি বলা হলে কেন উঠে দাঁড়াতে হয়?
জবাবে ইমাম জাফর সাদিক (আ.)বললেন: ‘সাহেবুল আমর' দীর্ঘমেয়াদী অন্তর্ধানে থাকবেন। তাঁর উদারতা ও ভালবাসা ভক্তদের মধ্যে বিরাজমান থাকবে এবং যে কেউ ইমাম মাহদী (আ.) এর পদবী, ‘কায়েম' নামটি স্মরণ করবে, তাঁর হুকুমতকে স্বীকার করবে এবং তাঁর অন্তর্ধানকে স্মরণ করবে, ইমাম মাহদীও (আ.) তার প্রতি অনুগ্রহ করবেন। আর এ কারণেই তাঁর পদবী, ‘কায়েম' নামটি শুনে তার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য উঠে দাঁড়ানো উপযুক্ত। (আলযামুন নাসেব, শেখ হায়ের ইয়াযদী, ১ম খণ্ড, পৃ- ২৭১)
অবশ্য বলা যেতে পারে কখনো কখনো উঠে দাঁড়ানো ওয়াজিব হয়ে দাড়ায়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, যদি কোন জলসায় ইমা মাহদী (আ.)-এর এই উপাধি অথবা অন্যান্য উপাধি উল্লেখ করা হয়, তখন সকলকে তার সম্মানার্থে উঠে দাঁড়ানো উচিত। কিন্তু যদি কেহ কোন অজুহাত ব্যতীত উঠে না দাঁড়ায়, তখন তার এই কর্ম ইমামকে অপমান করার শামিল হবে এবং এটা স্পষ্ট যে, তখন তার তা কর্ম হারাম হিসেবে গণ্য।
আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ মাহমুদ তালেকানী বলেন: উঠে দাঁড়ানোর এই নির্দেশ হয়তোবা (শুধুমাত্র) সম্মান প্রদর্শনের জন্য নয়। যদি এমনই হত তাহলে মহান আল্লাহ, রাসূল (সা.) এবং আউলিয়াদের সম্মানার্থেও উঠে দাঁড়াতে হত। ইমাম মাহদী সম্মানার্থে উঠে দাঁড়ানোর অর্থ হচ্ছে তাঁর আবির্ভাব এবং নির্দেশ পালনের জন্য সকলে সদা প্রস্তুত রয়েছে। (খুরশিদে মাগরিব, মুহাম্মাদ রেজা হাকিমী, পৃ. ২৬৪)

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

আদর্শ মানব হযরত মুহাম্মদ (সা.) - ১ম ...
হযরত ঈসা (আ.) এর জন্মবার্ষিকী-২০১২
ইমাম হুসাইন (আ.)-এর জীবনী-১১তম পর্ব
যদি কেউ দাড়ি না রাখে তাহলে সে কি ...
বাংলাদেশের নিম গাছ আরাফাতের ...
মহানবীর ওফাত দিবস এবং ইমাম হাসান ...
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নবুওয়াত-পূর্ব ...
কে হযরত আলী (আ.) কে শহীদ করেছে? তার ...
আল কোরআনের অলৌকিকতা (৬ষ্ঠ পর্ব)
কবর জিয়ারত

 
user comment