ইসলামের বিধান অনুসারে কাউকে কাফির' বললে সে যদি কাফির না হয় তবে তা নিজের উপর বর্তাবে। এমন একটা স্বতঃসিদ্ধ বিধান থাকার পরও একটা গোষ্ঠী মুখের সাথে কাফির ফতোয়াটি লাগিয়ে রাখে। ইসলামে আরেকটি স্বতঃসিদ্ধ বিধান হচ্ছে, যে ব্যক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' সাক্ষ্য দেয় তার জীবন মুসলমানদের নিকট নিরাপদ এমনকি সে যদি মুনাফিকও হয়। এর উত্তম দৃষ্টান্ত হচ্ছে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই যার বহু কুফরি ও মুনাফিকি প্রকাশ পেলেও নবী (সা.)তাকে হত্যা করেননি। কেউ কেউ এমন ক্ষেত্রে হত্যা করার অনুমতি চাইলেও নবী (সা.) কখনও তা দেননি।
তাহলে আজকের যুগে যারা কথায় কথায় ভিন্নমতের অথচ মুসলমানদের কালিমার সাক্ষ্যদানকারী মুসলমানদেরকে কাফির ফতোয়া দেয় এবং তাদেরকে হত্যা করা বৈধ মনে করে তারা এ অধিকার কোথায় পেল? ইসলামে তো এমন অধিকার নেই যে বিষয়ে শিয়া-সুন্নি উভয় মাযহাবই একমত। তাছাড়া কাউকে কাফির বলার আগে নিজেকে মুসলমান প্রমাণ করতে হবে তার বিশ্বাস এবং কাজের মাধ্যমে। কিন্তু আমরা বর্তমানের কাফির ফতোয়াদানকারীদের আচরণে কোনো ইসলামী আচরণ দেখি না বরং পাশবিক,অমানবিক,হিংস্র এবং ইসলামবিরোধী বন্দিদের সাথে আচরণ ও ‘যৌন জিহাদের' নামে প্রকাশ্য ব্যভিচারী হওয়ার প্রমাণ দেখতে পাই। তাদের আচরণে ইসলামের শত্রুদের আচরণ স্পষ্ট যেমন ওহুদের যুদ্ধে হিন্দা যেমন নিহত শহীদের লাশের বুক চিরে কলিজা বের করে চিবিয়েছিল তেমনি বর্তমানের আলোচিত তাকফিরিরা নিহত সেনার বুক চিরে কলিজা বের করে চিবিয়েছে। প্রতিনিয়ত মুসলমানদের লাইনে দাঁড় করিয়ে হত্যা করছে। তারা মুসলমানদের বোকা বানাতে খেলাফত ঘোষণা করছে যাতে তারা বিভ্রান্ত হয়ে তাদেরকে ‘ইসলামী মুজাহিদ' ভাবে।
পশ্চিমা ইসলামবিরোধী মিডিয়ার সাথে সহাবস্থান নিয়ে দালাল মিডিয়ার অপপ্রচারে অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছে। তারা সন্ত্রাসীদের সুন্নি বলে প্রচার করছে বিধায় সুন্নিরা তাদেরকে সমর্থন করছে যদিও সচেতনরা নয়। সন্ত্রাসীদের কথিত জিহাদের পেছনে যে ইসরাঈলের স্বার্থ রয়েছে তার প্রমাণ হলো নেতানিয়াহু ইতিমধ্যে কুর্দিদের স্বাধীনতা সমর্থন করেছে, সিরিয়াতে বিমান হামলা করেছে এবং গাজায় নতুন করে জুলুম অত্যাচার বাড়িয়ে দিয়েছে যাতে এই মুহূর্তে ইরানসহ সিরিয়া কেউ ফিলিস্তিনের পাশে না দাঁড়াতে পারে। অন্যদিকে লেবাননে হিজবুল্লাহকে ব্যস্ত রাখতে কথিত খেলাফতের শাখা আমির নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং জঙ্গি পাঠানো হবে।
সবকিছু মিলালে সহজেই ধরা পড়ে বর্তমান ইরাকের ঘটনা প্রবাহ এবং সিরিয়া যা ঘটেছে তা ইসরাইলের একটা সুচিন্তিত নীল নকশার বাস্তবায়ন যা কতিপয় অর্থলোভী নামধারি মুসলিম এবং ক্ষমতালোভী কিছু রাজাদের মাধ্যমে করা হচ্ছে।
ভিডিও ফুটেজগুলো দেখলে আরো স্পষ্ট হয় যে, নৃশংসভাবে হত্যাকারীরা নিশ্চিত প্রশিক্ষিত মোসাদের সদস্য এবং এরা ইহুদি কিছু বিভ্রান্ত মুসলিমদের নিয়ে এসব ধ্বংসযজ্ঞ করছে। মুসলমানরা আর কতকাল এসব দেখেও ঘুমিয়ে থাকবে এটাই আমার জিজ্ঞাসা।
ডা. মো. আব্দুল ওয়াদুদ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল