বাঙ্গালী
Monday 2nd of September 2024
0
نفر 0

নাগরিক অধিকারের দাবিতে উত্তাল আমেরিকা

নাগরিক অধিকারের দাবিতে উত্তাল আমেরিকা

আবনা : 'আমিই কি পরবর্তী টার্গেট' প্ল্যাকার্ড হাতে এক বিক্ষোভকারীআমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গসহ সব সংখ্যালঘু নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচার এবং পুলিশের বর্ণবাদী আচরণের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবিতে দেশটির রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে গত শনিবার বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। রাজধানী ওয়াশিংটন ছাড়াও নিউইয়র্ক এবং বোস্টনেও পুলিশের হাতে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গদের হত্যার প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছে। শনিবারের এসব বিক্ষোভ কৃষ্ণাঙ্গদের হত্যার প্রতিক্রিয়ায় অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক বিক্ষোভ সমাবেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিল বলে জানিয়েছেন সংগঠকরা। সংবাদসূত্র : বিবিসি, আল-জাজিরা, নিউইয়র্ক টাইমস
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, মূলত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হলেও বোস্টনে রাস্তা অবরোধের চেষ্টাকালে ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মানবাধিকার সংগঠক রেভারেন্ড আল শার্পটন প্রতিষ্ঠিত সংগঠন 'ন্যাশনাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক' কৃষ্ণাঙ্গসহ সংখ্যালঘু সব নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচারের দাবিতে দেশব্যাপী এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ডাক দেয়। এই ডাকে সাড়া দিয়ে ওয়াশিংটন, নিউইয়র্ক, বোস্টন, লস অ্যাঞ্জেলেস, ফিলাডেলফিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, আটলান্টা, মিসৌরি এবং ফিনিক্সসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে।
প্রচণ্ড ঠাণ্ড এবং হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে শনিবার রাতে নিউইয়র্কের টাইমস স্কোয়ার এবং সুপ্রিমকোর্ট ভবনের সামনে হাজারো জনতার সস্নোগান ধ্বনিত হয়। সময়ের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা আরো বাড়তে থাকে। ওই সময় বিক্ষোভকারীরা 'সবার জন্য ন্যায়বিচার', 'আমি শ্বাস নিতে পারছি না', 'কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনও মর্যাদাপূর্ণ', 'তুমি কার নিরাপত্তা দিচ্ছ, তুমি কার সেবা করছো' ইত্যাদি সস্নোগানে নিউইয়র্কের রাতের আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে তোলে।
অপরদিকে, ওয়াশিংটন ডিসির ডাউন টাউনের ফ্রিডম প্লাজা থেকে গগনবিদারী সস্নোগানে আশপাশের এলাকা প্রকম্পিত করে কয়েক হাজার মানুষের একটি মিছিল হোয়াইট হাউসের পাশ দিয়ে ক্যাপিটল হিলের সামনে জড়ো হয়। নিউইয়র্কের টাইমস স্কোয়ারের মতো এসব বিক্ষোভকারীও 'বিচার নেই, শান্তি নেই', 'বর্ণবাদী পুলিশ চাই না', 'হাত তোলো, গুলি করো না' ইত্যাদি সস্নোগানের পাশাপাশি 'কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনও মর্যাদাপূর্ণ', 'সব মানুষকে সমমর্যাদায় সৃষ্টি করা হয়েছে' ইত্যাদি সস্নোগান লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করে।
এই সমাবেশে মিসৌরির ফার্গুসনে পুলিশের গুলিতে নিহত মাইকেল ব্রাউনের মা লেসলি ম্যাকস্প্যাডেন এবং নিউইয়র্কে গ্রেপ্তারকালে পুলিশের হাতে নিহত এরিক গার্নারের সন্তানসহ পুলিশের গুলিতে নিহত আরো অন্তত ১২ জনের মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানরা উপস্থিত ছিলেন। সংখ্যালঘুদের অধিকার আন্দোলনের বিক্ষোভে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করায় তারা সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সব বিক্ষোভকারীকে অবিলম্বে কৃষ্ণাঙ্গদের হত্যার দায়ে পুলিশ অফিসারদের অভিযুক্ত করার বিষয়ে কংগ্রেসে একটি শুনানির জন্য ক্যাপিটল হিলের ওই সমাবেশ থেকে দাবি জানানো হয়। দেশটির 'ন্যাশনাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক'প্রধান শার্পটন ওই বিক্ষোভ সমাবেশ পরিচালনা করেন।
এই বিক্ষোভ সমাবেশে দেয়া ভাষণে শার্পটন বলেন, 'আমরা সবার জন্য ন্যায়বিচার চাই। কৃষ্ণাঙ্গসহ সব সংখ্যালঘুর নিরাপত্তার ব্যাপারটি দীর্ঘদিন ধরেই আমেরিকায় উপেক্ষিত রয়েছে। সর্বশেষ কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ মাইকেল ব্রাউন এবং এরিক গার্নারের হত্যাকা-ে দায়ী পুলিশ অফিসারদের অভিযুক্ত না করে সংখ্যালঘু আমেরিকানদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির প্রত্যাশাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়েছে।'
এ সময় বর্তমানের মতো অপ্রত্যাশিত অবস্থা চলতে দেয়া যায় না বলেও মন্তব্য করেন শার্পটন। এ ধরনের অচলাবস্থা অব্যাহত থাকলে সামাজিক ভারসাম্য বিপন্ন হতে বাধ্য বলেও জানান তিনি। এজন্যই আমেরিকার সংবিধান যেভাবে সব নাগরিকের ন্যায়বিচার নিশ্চিতের কথা বলেছে, ঠিক সেভাবেই তার বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাগাদা দেন শার্পটন। জাতি-গোষ্ঠী, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার সমান অধিকার নিশ্চিতের গ্যারান্টি আমেরিকার সংবিধান দিয়েছে বলেও মত দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কৃষ্ণাঙ্গসহ সব সংখ্যালঘুর ওই সমাবেশের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে দেশটির বেশ কয়েকটি ধর্মীয় এবং অভিবাসন নিয়ে কাজ করা সংগঠন। এসব সংগঠনের কর্মীরাও সংখ্যালঘুদের এই বিক্ষোভে অংশ নেন। এর মধ্যে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে গড়া বিক্ষোভকারীদের একটি দলে উল্লেখযোগ্য শ্বেতাঙ্গ শিক্ষার্থীর সরব উপস্থিতি সমাবেশে অংশগ্রহণকারী সবাইকে অভিভূত করেছে।
এদিকে, সমাবেশ শেষে বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ রাজধানী ওয়াশিংটনের ডাউন টাউনে গিয়ে অল্প সময়ের জন্য কয়েকটি রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ জানায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। অপরদিকে, দেশটির মিসৌরিতে ৪০-৫০ হাজার বিক্ষোভকারী এবং নিউইয়র্কে ২০-৩০ হাজার বিক্ষোভকারী প্রতিবাদে অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন পর্যবেক্ষকরা। তবে দুই স্থানেই বিক্ষোভকারীদের সংখ্যার ব্যাপারে পুলিশি নীতির কারণ দেখিয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেছে দেশটির পুলিশ।


source : www.abna.ir
0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

আগ্রাসন অব্যাহত; সৌদি ঘাঁটিতে ...
ইসরাইলকে দিয়ে ইয়েমেনে ২ নিউট্রন ...
আযানের মধুর ধ্বনিতে মুসলমান হলেন ...
পাকিস্তানে তত্পর আইএসআইএল ; ...
অবশেষে আত্মসমর্পণ করলেন পুজদেমন
৪১৮ যাত্রী নিয়ে প্রথম হজ্ব ফ্লাইট ...
পাকিস্তানের কুয়েত্তা শহরে ...
বাহরাইন সরকারকে অবশ্যই ...
সামেরা শহরে ৫ বিস্ফোরণ ; বদর ...
ইয়েমেনের জনগণের সমর্থনে লন্ডনে ...

 
user comment