আবনা : পশ্চিমবঙ্গে প্রবীণ সিস্টারকে (খ্রিস্টান সন্ন্যাসিনী) গণধর্ষণের ঘটনায় সর্বত্র নিন্দার ঝড় বইছে। শুক্রবার গভীর রাতে নদিয়ার রানাঘাটে ‘কনভেন্ট অফ জেসাস অ্যান্ড মেরি’ নামের একটি খ্রিস্টান স্কুলের এই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সেখানে একদল দুষ্কৃতী লুটপাট চালায়। ৭১ বছর বয়সী ওই সিস্টার বাঁধা দিলে তাকে গণধর্ষণ করা হয়। পরে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামী সোমবার বিকেলে প্রতবাদ মিছিলের ডাক দেয়া হয়েছে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে।
শনিবার এই ঘটনার তদন্তে সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এডিজি সিআইডি রাজীব কুমার, এডিজি (দক্ষিণ বঙ্গ) সি ভি মুরলিধরসহ অন্যন্য কর্মকর্তারা তদন্ত শুরু করেছেন।
তদন্তকারীরা ইতোমধ্যেই সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে চার জন দুষ্কৃতীর ছবি পেয়েছে। তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। যদিও আজ (রোববার) সকাল পর্যন্ত কোনো দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়নি সিআইডি।
এই ঘটনায় বঙ্গীয় খ্রিস্টীয় পরিষেবার কার্যকরী প্রেসিডেন্ট হেরোদ মল্লিক জানান, ‘এটা শুধু সাধারণ ডাকাতির বিষয় নয়, এর পেছনে আরো বড় ষড়যন্ত্র আছে।’
কোলকাতার আর্চ বিশপ থমাস ডিসুজা এই ঘটনাকে ‘অমানবিক এবং হৃদয় বিদারক’ বলে মন্তব্য করেছেন। সোমবার বিকেল সাড়ে চারটেয় পার্ক স্ট্রিটের অ্যালেন পার্ক থেকে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছেন তিনি।
খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহমর্মিতা জানিয়েছেন বিশিষ্ট মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ।
‘স্টেট ফোরাম ফর মাইনরিটিজ অর্গানাইজেশন’-এর যুগ্ম সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেছেন, ‘দেশের বিভিন্ন যায়গায় খ্রিস্টান সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ওপর হামলার যে ঘটনা ঘটছে, এখানেও সেই একই ঘটনা ঘটেছে। সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’
পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি হাজি নুরুল ইসলাম জানান, ‘দোষীরা যাতে যথাযথ শাস্তি পায় তা নিশ্চিত করতে সংখ্যালঘু সেল সব ধরণের পদক্ষেপ নেবে।’
রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এই ঘটনায় জানান, ‘মনে হচ্ছে আমার মা আক্রান্ত হয়েছেন। এ তো মানবতার অপমান! অপরাধীদের ফাঁসির মত শাস্তিই প্রাপ্য। এ জন্য সরকার সবরকম সাহায্য করবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সম্প্রতি দেশ জুড়ে ‘ঘর ওয়াপসি’-র নামে সংখ্যালঘুদের নানাভাবে টার্গেট করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্নস্থানে অনেক চার্চ আক্রান্ত হয়েছে। এই রীতি আমাদের দেশে ছিল না। এখন নতুন আমদানি হয়েছে।’
source : abna