আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা –আবনা- : ‘দারুল আফতা আল-মিসরিয়াহ’ গতকাল (মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর) সকালে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে সৌদি আলেমদেরকে পথভ্রষ্ট ও বিভ্রান্ত বলে আখ্যায়িত করেছে।
প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েব সাইটে প্রকাশিত এ খবরে, সৌদি আরবের শীর্ষস্থানীয় আলেমদেরকে তাদের ধ্বংসাত্মক ও যুদ্ধপ্রবণ ফতওয়ার কারণে পথভ্রষ্ট বলে আখ্যায়িত করেছেন মিসরের শীর্ষস্থানীয় আলেমগণ।
পবিত্র কুরআনের আয়াত থেকে সৌদি আলেমদের জ্ঞান আক্ষরিক বলে উল্লেখ করে ঐ বিবৃতিতে বলা হয়েছে : সৌদি মুফতি শাইখ উসাইমিন ((فمن اعتدی علیکم فاعتدوا علیه بمثل ما اعتدی علیکم)) –যারা তোমাদের উপর জবরদস্তি করেছে, তোমরা তাদের উপর জবরদস্তি কর, যেমন জবরদস্তি তারা করেছে তোমাদের উপর [বাকারাহ : ১৯৪]-এ আয়াতের ভিত্তিতে বলেছেন, ‘নারী ও শিশুদেরকে হত্যা করা মুবাহ’। কেননা এর মাধ্যমে শত্রুদের মনোবল নষ্ট হয়ে যায়।
এর জবাবে বিবৃতিতে আল্লাহর রাসূল (স.) হতে বর্ণিত ((لا تقتلن ذریة و لا عسیفا))-এ রেওয়ায়েত উল্লেখ করে বলা হয়েছে : তাদের এমন দাবী মহানবি (স.) এর শিক্ষা ও রেওয়ায়েতের পরিপন্থী।
রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে যে, মহানবি (স.) কোন এক যুদ্ধে নিহত এক নারীকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে ঐ সময়ই তিনি নিরাপরাধ নারী ও শিশু হত্যা করাকে অন্যায় কর্ম বলে ঘোষণা দেন। অথচ সৌদি মুফতিরা প্রকাশ্যে নারী ও শিশুদেরকে হত্যার ফতওয়া দিয়ে থাকে।
বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ঐ মুফতির ফতওয়া ((ولا تزر وازرة وزر أخری)) –কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না [ফাতির : ১৮]-এ আয়াতেরও পরিপন্থী। যদি পুরুষরা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে থাকে তবে নারী ও শিশুরা কেন এর শাস্তি ভোগ করবে এবং প্রাণ হারাবে?! প্রত্যেকের হিসাব অপর থেকে আলাদা।
তাকফিরি গোষ্ঠীর সৌদি মুফতিদেরকে অনুসরণ করা প্রসঙ্গে ঐ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যে আলেম আয়াত ও রেওয়ায়েতের আক্ষরিক ব্যাখ্যা করে থাকে এবং নিরাপরাধ মানুষের রক্তপাতকে মুবাহ জ্ঞান করে তার অনুসরণ করা সঠিক নয়।
((انطلقوا باسم الله، و علی ملة رسول الله، و لاتقتلوا شیخا فانیا، ولا طفلا، و لا صغیرا، و لا امرأة، ولا تغلوا، و ضموا غنائمکم، و أصلخوا))-এ রেওয়ায়েতটি* উল্লেখ করে –যাতে বৃদ্ধ, শিশু ও নারীদেরকে হত্যা করতে নিষেধ করা হয়েছে- মিসরিয় ঐ সংস্থা ((و أحسنوا إن الله یحب المحسنین)) -আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর। আল্লাহ্ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন। [বাকারাহ : ১৯৫]-এ আয়াতটির মাধ্যমে ওয়াহাবি মুফতি ও তাদের সমমনাদের চিন্তার বাতিল হওয়ার বিষয়টি প্রমাণ করেছে। নূরানী এ সকল বাক্যের মাধ্যমে নিরাপরাধ নারী ও শিশু হত্যা নিষেধ হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
বলাবাহুল্য, বর্তমানে আইএসআইএল নামক মহামারী সমগ্র বিশ্বে বিশেষতঃ ইরাক ও সিরিয়াতে ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিদিনই বহুসংখ্যক নারী ও শিশু নিহত হচ্ছে। আর এ সকল অনাকাঙ্খিত ঘটনা মূলতঃ সৌদি আরবের ওয়াহাবি মুফতিদের বিভ্রান্তকর ফতওয়ারই ফসল।#
* বায়হাকি, ৯, ৯০; ইবনে আবি শাইবাহ (প্রকাশকাল ১৪০৯), ৭, ৬৫৪; ইবনে আব্দুল বিরর (প্রকাশকাল ২০০০), ৫ ৩২-৩৩; ইবনে আব্দুল বিরর আত-তামহিদ (প্রকাশকাল ১৩৮৭), ২৪, ২৩২।
source : abna24