বাঙ্গালী
Thursday 9th of May 2024
0
نفر 0

মহানবী(স.)'র ওফাত ও ইমাম হাসান(আ.)'র শাহাদাতবার্ষিকী

ইসলামের ইতিহাসে এমন কিছু দিবস আছে, যেসব দিবস অবিস্মরণীয়, কোনোভাবেই যা বিস্মৃতব্য নয়। হিজরী বর্ষের ২৮ শে সফর তেমনি একটি দিন। এইদিন বিশ্বকে আলোকিত করার জন্যে আল্লাহ প্রেরিত সূর্য মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর পরকালীন অনন্ত জীবনে প্রবেশ করার দিন। যদিও কোনো কোনো রেওয়ায়েতে আছে, ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখে নবীজী পৃথিবীকে নিঃসঙ্গ করে দিয়ে তাঁরই প্রিয়
মহানবী(স.)'র ওফাত ও ইমাম হাসান(আ.)'র শাহাদাতবার্ষিকী

ইসলামের ইতিহাসে এমন কিছু দিবস আছে, যেসব দিবস অবিস্মরণীয়, কোনোভাবেই যা বিস্মৃতব্য নয়। হিজরী বর্ষের ২৮ শে সফর তেমনি একটি দিন। এইদিন বিশ্বকে আলোকিত করার জন্যে আল্লাহ প্রেরিত সূর্য মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর পরকালীন অনন্ত জীবনে প্রবেশ করার দিন। যদিও কোনো কোনো রেওয়ায়েতে আছে, ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখে নবীজী পৃথিবীকে নিঃসঙ্গ করে দিয়ে তাঁরই প্রিয় স্রষ্টার সান্নিধ্যে চিরদিনের জন্যে চলে যান। মানব স্মৃতির দুর্বলতার কারণে তারিখ নিয়ে মতানৈক্য থাকতেই পারে কিন্তু সূর্যের কাছে অন্ধকার বলে যেমন কিছু নেই তেমনি নেই নবীজীর ওফাতের ব্যাপারে কোনো সংশয়। আমরা তাই মতপার্থক্যের উর্ধ্বে উঠে নবীজীর ওফাত নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে তাঁরই জীবনদর্শন থেকে নিজেদের আলোকিত করার চেষ্টা করবো।
 
 
 
সেইসঙ্গে আরেকটি প্রসঙ্গ এখানে উল্লেখযোগ্য তাহলো, ২৮ সফর তারিখেই শাহাদাত বরণ করেছিলেন নবীজীর প্রিয় নাতি হযরত ইমাম হাসান (আ.)। ঠিক কোন পরিস্থিতিতে এবং কীভাবে তিনি শহীদ হন, তাঁর জীবনাদর্শ থেকে আমাদের জন্যে কী শিক্ষণীয় রয়েছে-সেসব বিষয়েও খানিকটা আলোচনা করার চেষ্টা করবো। আপনারা যথারীতি আমাদের সাথেই রয়েছেন-এ প্রত্যাশা রেখে এবং সবার প্রতি শোক ও সমবেদনা জানিয়ে শুরু করছি গুরুত্বপূর্ণ এই আলোচনা।
 
 
 
নবীজীর পৃথিবী থেকে চলে যাবার বিষয়টি অনেকের জন্যেই অসহনীয় কষ্টের ব্যাপার ছিল। কেননা নবীজী ছিলেন আল্লাহর মনোনীত সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব,সর্বোত্তম চরিত্র ও নৈতিকতার শ্রেষ্ঠতম উদাহরণ। তিনি খুব কম সময়ের মধ্যে মানুষের মাঝে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে এবং ন্যায়নীতিময় একটি সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করে সর্বস্তরের মানুষের জন্যে যথার্থ কল্যাণ বয়ে আনেন। পৃথিবীর সকল মানুষ তাঁর প্রতিষ্ঠিত সেই কল্যাণ-আদর্শ থেকে উপকৃত হয়।
 
 
 
হযরত আলী (আ.) এ সম্পর্কে বলেছেন,আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর মাধ্যমে জনগণের জন্যে তাঁর সমূহ নিয়ামত বা কল্যাণ অবতীর্ণ করেছেন। দেখুন! জনগণ নবীজীর আনুগত্য করে আল্লাহর দ্বীনের সাথে কীভাবে নিজেদেরকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে। তাঁরই দাওয়াতের ফলে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আল্লাহর অফুরন্ত নিয়ামত মানুষকে মর্যাদাবান করেছে। মানুষ প্রশান্তি আর কল্যাণের ঝর্ণাধারায় সিক্ত হয়েছে। সত্য দ্বীনের বরকতে মানুষ পুষ্ট হয়েছে। আল্লাহর নিয়ামতের মাঝে সিক্ত হয়ে মানুষ আনন্দিত জীবনযাপন করেছে। ইসলামী হুকুমাতের ছায়ায় মানুষের সামাজিক জীবনে এসেছে দৃঢ় সম্মান ও মর্যাদা। মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। যার ফলে ইসলাম একটি স্থায়ী হুকুমাতে পরিণত হয়েছে।'
 
 
 
রাসূলে খোদা ( সা ) এর সম্মান ও মর্যাদা অনস্বীকার্য। কেবল তাঁর জীবদ্দশাতেই যে তিনি সম্মানিত ছিলেন তা নয়,বরং মৃত্যুর পরেও তিনি সমানভাবে মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী। অতএব যাঁরা তাঁর অনুসারী তাঁরা অবশ্যই সফলকাম। যেমনটি পবিত্র কোরআনের সূরা আরাফে বলা হয়েছে,
 
 
 
"অতএব যারা তাঁকে বিশ্বাস করে,তাঁকে মান্য করে,তাঁকে সাহায্য করে এবং তাঁর সাথে অবতীর্ণ আলোর অনুসরণ করে তারাই সফলকাম।"
 
তাই আমাদের সবার উচিত হবে রাসূলে খোদার মনে কষ্ট লাগে এমন কোনো কাজ না করা। বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাসূলে খোদা (সা.) যে কারণে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাবেন,তা হলো মুসলমানদের মধ্যকার অনৈক্য ও মতপার্থক্য। কেননা; রাসূলে কারিম (সা.) সবসময় চেয়েছেন মানুষের মাঝে পারস্পরিক নৈকট্য সৃষ্টি করতে এবং আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে। এমন সম্পর্ক গড়ে তুলতে চেয়েছেন তিনি,যার মাঝে কোনোরকম ফাঁকফোকর না থাকে।  কুরআনের ভাষায় যাকে বলা হয়েছে শিসা ঢালা প্রাচীরের মতো অঙ্গাঙ্গী সম্পর্ক।
 
 
 
মানুষকে তিনি মূর্খতা আর গোত্রপ্রীতির অজ্ঞতা থেকে মুক্তি দিয়ে তাদেরকে ঐতিহ্যপ্রিয় এবং সংস্কৃতিমনা জাতিতে রূপান্তরিত করেছেন। মানুষের সকল কাজ যেন একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যেই সম্পাদিত হয়,সে ব্যাপারে সমগ্র জাতিকে তিনি উদ্বুদ্ধ করেছেন। তাঁর সকল কাজই হয়েছিল পার্থিব জগতের কল্যাণ এবং পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে। যেই মানব মুক্তির জন্যে রাসূলের সকল কর্মতৎপরতা ছিল,সেই মহান ব্যক্তিত্বের ওফাতের পর আমাদের সবার উচিত তাঁর ওপর সালাম এবং দরূদ প্রেরণ করে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করে তোলা। কেননা সূরা আহযাবের ৫৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছেঃ
 
"নিঃসন্দেহে আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীজীর ওপরে দরুদ প্রেরণ করেন। অতএব হে ঈমানদারগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি দরূদ পাঠাও এবং সশ্রদ্ধচিত্তে সালাম জানাও।"


source : irib
0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

হযরত ইমাম মুসা কাযিম (আ.)'র ...
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.): ...
আইএসআইএল, গোটা বিশ্বের জন্য হুমকি ...
হযরত আলী (আ.)-এর খেলাফত ও তার ...
ইমাম রেজা (আ.)'র মাজার জিয়ারতকারী ...
নবী (সা.) কিভাবে উম্মী ছিলেন বা কেন ...
রমজান: খোদা-প্রেমের অসীম সাগর -১১
নেয়ামতের হাত ছড়া হওয়ার কারন
সমাজবিমুখ ইবাদত আর ইবাদতবিমুখ ...
বেহেশতের নারীদের নেত্রী হযরত ...

 
user comment