আবনা ডেস্ক : সংঘর্ষপীড়িত নগরনো-কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে আজারবাইজান। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সহিংসতা বন্ধের জন্য আন্তর্জাতিক সমাজের আহ্বানে সাড়া দিয়েছে বাকু। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আজারি সেনারা আক্রান্ত হলে পাল্টা আঘাত হানা হবে।
এদিকে আর্মেনিয়া-সমর্থিত কারাবাখ বাহিনী বলেছে, এখনো ‘রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ’ চলছে।
১৯৮০’র দশকের শেষদিকে নগরনো-কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মুহূর্তে সংঘর্ষ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে দু’পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত এ সংঘর্ষে ৩০,০০০ মানুষ প্রাণ হারায়।
নগরনো-কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভেতরে হলেও ইয়েরেভান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করছে আর্মেনিয় বংশোদ্ভূতরা। মাঝেমধ্যেই দু’পক্ষের মধ্যে সেখানে সংঘর্ষ বেধে যায়।
গত কয়েকদিন ধরে সেখানে সংঘর্ষে ৩০ সৈন্য নিহত এবং বেশ কিছু বেসামরিক ব্যক্তি হতাহত হয়েছে। এদিকে আর্মেনিয়া বলেছে, আজকের (রোববার) সংঘর্ষে দুই কারাবাখ সৈন্য নিহত হয়েছে।
এর আগে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান বলেছেন, চলমান সংঘর্ষের ‘শেষ পর্যন্ত’ তিনি আজারবাইজানকে সমর্থন দিয়ে যাবেন। আজারবাইজানের সঙ্গে তুরস্কের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলেও আর্মেনিয়ার সঙ্গে আঙ্কারা কোনো সম্পর্ক নেই।
গতকাল (শনিবার) আর্মেনিয়া জানায়, নগরনো-কারাবাখ অঞ্চলের সংঘর্ষে আর্মেনিয়-বংশোদ্ভূত ১৮ সৈন্য নিহত হয়েছে। অন্যদিকে আজারবাইজান তাদের ১২ সৈন্যর নিহত হওয়ার কথা জানায়।
চলমান সংঘর্ষ শুরু হওয়ার জন্য দু’পক্ষই পরস্পরকে দোষারোপ করেছে। আজারবাইজান জানিয়েছে, দেশটির সেনারা দু’টি কৌশলগত পাহাড় ও একটি গ্রামের নিয়ন্ত্রণ নিলেও একটি হেলিকপ্টার হারিয়েছে। অন্যদিকে আর্মেনিয়া সরকার দাবি করেছে, আজারবাইজান ট্যাংক, গোলন্দাজ ইউনিট ও হেলিকপ্টার দিয়ে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে।
সংবাদদাতারা বলছেন, নগরনো-কারাবাখ নিয়ে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে বড় ধরনের যুদ্ধ বেধে যেতে পারে।
এদিকে এরদোগান এ সংঘর্ষ ঠেকাতে না পারার জন্য মিনস্ক গ্রুপের সমালোচনা করেছেন। নগরনো-কারাবাখে সংঘর্ষের পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য ১৯৯৪ সালে ফ্রান্স, রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ-সভাপতিত্বে মিনস্ক গ্রুপ গঠিত হয়েছিল। এই গ্রুপের বাকি সদস্য দেশগুলো হলো বেলারুশ, জার্মানি, ইতালি, পর্তুগাল, নেদারল্যান্ড, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, তুরস্ক, আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান।#
source : abna24