ইউরোপের তুলনায় আমেরিকায় মুসলমানরা থাকেন দেশজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। তাই দেশটিতে বসবাসকারী মুসলমানদের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে রয়েছে ধুম্রজাল। তবে আমেরিকায় বসবাসকারী মুসলমানের সংখ্যাটা যে, কোটির কাছাকাছি এটা অনেকটাই নিশ্চিত।
কারণ, আমেরিকায় মুসলমানদের সংখ্যা বের করা মোটেই সহজ কাজ নয়। সরকারি পর্যায়ে ধর্মের ভিত্তিতে সেখানে জনসংখ্যা গণনা করা হয় না। এজন্য কোন ধর্মের কত অনুসারী তার কোনো পরিসংখ্যান আমেরিকার সরকারের কাছে নেই।
বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিসংখ্যান বের করার চেষ্টা করা হয়। এজন্য কখনও সঠিকভাবে যাচাই করা যায়নি যে, প্রকৃতপক্ষে আমেরিকায় কি পরিমাণে মুসলমান বাস করছেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন রকম পরিসংখ্যান দিয়েছে বিভিন্ন সময়ে। তবে যেভাবেই পরিসংখ্যান বের করা হোক না কেন প্রতিটির ফলাফলেই মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধির তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ওই সব তথ্যে দেখা গেছে, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মুসলমানদের সংখ্যা, বিকাশ ঘটেছে ইসলামের।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিজ দেশে প্রথমবারের মতো একটি মসজিদ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। মার্চ মাসে দেশটির মেরিল্যান্ড প্রদেশের বাল্টিমোর শহরে মুসলমানদের একক প্রচেষ্টায় নির্মিত ‘আল এহসান মসজিদ’ উদ্বোধন করা হয়েছে।
এ দিকে চলতি মাসের শুরুর দিকে আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির কাছে তুর্কি স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত একটি নতুন মসজিদ কমপ্লেক্স উদ্বোধন করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগান। ওই মসজিদটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১০ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮০০ কোটি টাকা।
এভাবেই আমেরিকায় গত এক দশকে মসজিদের সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়েছে। অনেকে তো এর পরিমাণ দ্বিগুণই বলছেন।
আমেরিকা একটি সম্পদশালী দেশ। এখানকার মুসলমানরাও তুলনামূলকভাবে অনগ্রসর। এর একটি চিত্র দেখা গেছে আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স কাউন্সিল প্রকাশিত এক রিপোর্টে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, আমেরিকায় ২০০০ সালে মসজিদের সংখ্যা ছিল ১,২০৯টি। ২০১১ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ২,১০৬ টিতে, আর ২০১৫ সাল নাগাদ এ সংখ্যা ৩ হাজার ছুঁয়েছে।
গত এক দশকে নিউ হ্যাম্পশায়ার, আলাস্কা, ইলিনয়, নর্থ ডাকোটা, নেভাদা, আরিজোনা, ইদাহো, নর্থ ক্যারোলিনা, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, উয়োমিং, নিউইয়র্ক ও ক্যালিফোর্নিয়ায় বেড়েছে মসজিদের সংখ্যা।
হার্টফোর্ডের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, আমেরিকায় এখন প্রতি ১৫৬২ জন মুসলমানের জন্য একটি মসজিদ রয়েছে। পাশাপাশি ৫২৪ জন খ্রিস্টানের জন্য রয়েছে একটি গীর্জা।
২০১৫ সালের শেষ দিকে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, মুসলমানদের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ জনগণের মতামত ইতিবাচক। প্রতি ১০ জন মার্কিনির মধ্যে ৩ জন অন্তত একজন মুসলমানের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রাখেন।
-অন ইসলাম অবলম্বনে
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৬
source : abna24