আবনা ডেস্ক : বাবা দিবসে মহেশ সাভানি নামের এক ব্যবসায়ীকে ভালবাসা ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তার ৪৭২ কন্যা। কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব? কারো পক্ষে কি একজীবনে ৪৭২ জন মেয়ের বাবা হওয়া সম্ভব? একমাত্র দত্তক নিলে হয়তো সম্ভব। এই ৪৭২ কন্যা আসলে তাদের জন্মদাতা পিতাকে হারিয়েছে। কিন্তু মহেশ সাভানি সেই শূন্যস্থান পূরণ করে হয়েছেন তাদের বাবা। তিনি আগ্রহ নিয়ে এই কন্যাদের বিয়ে দিয়েছেন।
৪৭ বছর বয়সী সাভানি তার ভাইয়ের মৃত্যুর পরে দুই ভাতিজির বিয়ে দিয়েছিলেন। সেটা ১০ বছর আগের কথা। ঐ কন্যাদান করার পরে তার কাছে মনে হয়েছিল, যে সমস্ত মেয়েদের বাবা নেই তাদের দুরবস্থার কথা, বিশেষ করে বিয়ের সময়।
এরপর তিনি এমনসব মেয়েদের খুঁজে বের করে সমর্থন দিতে শুরু করলেন যাদের বাবা নেই। ২০০৮ সাল থেকে শুরু হয়েছিল, এখনো চলছে। তিনি বাবাহীন মেয়েদের বাবা হয়ে তাদের বিয়ে দেন এবং বিয়ে পরবর্তী জীবনেও তাদের খোঁজখবর রাখেন।
মহেশ সাভানি পেশাগত জীবনে একজন সফল ব্যবসায়ী। সম্পত্তি বেচাকেনা, ডায়মন্ড এবং স্কুলের ব্যবসা তার। ভারতের গুজরাটের ভাবনগর শহরে তার বাড়ি। তার বাবা ভাল্লাভভাই ঐ শহরে এসেছিলেন ৪০ বছর আগে, ব্যবসা শুরু করেছিলেন ডায়মন্ড পলিশ করার। এখন তাদের রমরমা ব্যবসা। মহেশ তার এই ৪৭২ জন মেয়ের প্রত্যেকের বিয়েতে ৪ লাখ রুপি করে খরচ করে অনুষ্ঠান করেছেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মহেশ বলেছেন, ‘যে নারীর স্বামী মারা গেছে তার পক্ষে মেয়ে বিয়ে দেয়া এখনকার সমাজে একটা কঠিন কাজ।’ বিয়েতে মেয়েদেরকে তিনি সোনা-রূপার পাশাপাশি পোশাক, রান্নার সরঞ্জাম এবং ইলেকট্রনিক সামগ্রী উপহার দেন। ২০১৬ সালে মহেশ ২১৬ জন মেয়ের বিয়েতে বাবার ভূমিকায় সাহায্য করেছেন। আরও অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, এই কাজে তিনি কখনোই ধর্মবর্ণকে প্রাধান্য দেন নি।
হিনা ক্যাথিরিয়া নামের এক মেয়ে ৬ বছর আগে জন্মদাতা পিতাকে হারিয়েছিল, ২০১৫ সালে তাকে বিয়ে দেন মহেশ। হিনা বলেছেন, ‘বাবাকে যে প্রয়োজনে চেয়েছি, সাথে সাথে পেয়েছি।’
নেহা বানু নামের এক মেয়ে মহেশের পিতৃসুলভ সাহায্যে ২০১৪ সালে আরিফ নামে এক ছেলেকে বিয়ে করেন। মহেশ সম্বন্ধে তিনি বলেছেন, ‘তিনি আমার কাছে বাবার চেয়ে বেশি কিছু। আমি চাই পৃথিবীর সমস্ত মেয়ে ঐরকম একজন বাবা পাক।’
source : abna24