আবনা ডেস্ক : গত দু’মাসে সেনা-পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৭৫ জনের। আহত হয়েছেন শতাধিক। তবুও বন্ধ হয়নি ইথিওপিয়ার বিক্ষোভ। শনিবার এমনই দাবি জানাল মানবাধিকার পর্যবেক্ষক (এইচআরডব্লিউ)। যে ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে তারা সকলেই বিক্ষোভকারী এবং এতজনের মৃত্যুর পরেও আদ্দিস আবাবা নীরব বলে এইচআরডব্লিউ-এর তরফে জানানো হয়েছে।
সেনা-পুলিশের গুলিতে যে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সেকথা ইথিওপিয়া সরকারও স্বীকার করে নিয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীরা ‘সন্ত্রাসী নাগরিক’ বলে মন্তব্য করেছেন ইথিওপিয়া সরকারের মুখপাত্র গেটাচিউ রেডা। তিনি বলেন, গত মাসে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, কিন্তু পরে সেটি হিংসার রূপ নেয়। এই বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশই সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, গত নভেম্বরে দেশের একটি জঙ্গল কাটা নিয়েই এই বিক্ষোভের শুরু। ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবার দক্ষিণে ৮০ কিলোমিটার দূরে ছোট শহর গিঞ্চিতে একটি প্রকল্প করার কথা ভেবেছিল ইথিওপিয়া সরকার। সেই প্রকল্পের জন্য গিঞ্চি শহরের বিরাট জঙ্গল সাফ করতে যায় সরকারের প্রতিনিধিরা। কিন্তু গিঞ্চির বাসিন্দারা জঙ্গল কাটার ব্যাপারে সরকারকে বাধা দেয়। যদিও ইথিওপিয়া সরকার জনগণের কথায় তোয়াক্কা করেনি। তখনই বিক্ষোভের পথ বেছে নেন গিঞ্চির বাসিন্দারা। তারপর অল্প সময়ের মধ্যে পুরো ওরোমিয়া অঞ্চলে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে কৃষক থেকে সাধারণ মানুষ, সকলেই এই বিক্ষোভে শামিল হন। দক্ষিণ আদ্দিস আবাবা থেকে পশ্চিমাঞ্চলেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সরকার তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশের সঙ্গে সেনা নামায় আদ্দিস আবাবা সরকার। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে সেনা-পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে বলেও এইচআরডব্লিউ-র তরফে জানানো হয়েছে। এই গুলিতেই গত দু’মাসে ৭৫ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। কেবল শেওয়া এবং ওল্লেগা এক ডজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। কিন্তু এতগুলো মানুষের মৃত্যুতে এতটুকু অনুশোচনা নেই ইথিওপিয়া সরকারের। বরং তাদের দাবি, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হিংসায় পরিণত হয়েছে এবং এর পিছনে জঙ্গিদের হাত রয়েছে। এর তীব্র নিন্দা করেছে এইচআরডব্লিউ।
source : abna24