আবনা ডেস্ক: রাত পোহালেই ঈদ। ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা। এই ঈদে চাঁদ দেখা নিয়ে দোদুল্যমানতা নেই। আগেই নির্ধারিত হয়েছে তারিখ। সে অনুযায়ী ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার অর্থাৎ ১০ জিলহজ সারা দেশে উদযাপিত হবে এবারের ঈদুল আজহা।
রাত পোহালেই মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরা তাদের অন্যতম এ ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করবেন।
ঈদ মানেই আনন্দ। প্রিয়জনের সঙ্গে সে আনন্দ ভাগ করে নিতে অনেকেই ছুটে গেছেন দূর-দূরান্তে। পথের ক্লান্তি ভুলে ছোট-বড় সবারই অধীর অপেক্ষা এখন ঈদের দিনটির জন্য।
ইতিমধ্যে অনেকেরই কোরবানির পশু কেনা সম্পন্ন হয়েছে। কেউ কেউ দরদাম যাচাই করছেন এ-হাট থেকে সে-হাট ঘুরে। শেষ মুহূর্তে পছন্দমতো কোরবানির পশু কিনে ফিরবেন তারা।
জিলহজ মাসের ১০ তারিখ ঈদুল আজহা উদযাপিত হলেও পরের দুই দিন, অর্থাৎ ১১ ও ১২ জিলহজেও পশু কোরবানি করার বিধান রয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেকে ওই দুই দিনও পশু কোরবানি করে থাকেন।
মহান আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য হজরত ইব্রাহিম (আ.) এই দিনে তার ছেলে হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সেই ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু কোরবানি করে থাকেন।
কোরবানির মধ্য দিয়ে নিজের ভেতরের পশুত্বকে পরিহার করা ও হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর মহান আত্মত্যাগের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মঙ্গলবার সকালেই মুসল্লিরা নিকটস্থ ঈদগাহ বা মসজিদে যাবেন ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের জন্য।
নামাজের খুতবায় তুলে ধরা হবে কোরবানির তাৎপর্য। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে আদায় করবেন ঈদের নামাজ। শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন কোলাকুলির মাধ্যমে। নামাজ শেষে অনেকেই যাবেন কবরস্থানে স্বজনের কবর জিয়ারত করতে।
আনন্দের দিনে অশ্রুসিক্ত হয়ে চিরকালের জন্য চলে যাওয়া স্বজনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে আল্লাহর দরবারে হাত তুলবেন। নামাজ শেষে আল্লাহতায়ালার উদ্দেশে করা হবে পশু কোরবানি।
ঢাকায় ঈদের প্রধান জামাত হবে হাইকোর্ট-সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে সকাল ৮টায়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৭টা, ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং পৌনে ১১টায় এই জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
সরকারিভাবে ঈদুল আজহা উদযাপনে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, আলোকসজ্জা এবং বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
কখন-কোথায় ঈদের জামাত : কামরাঙ্গীরচর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল ৭টায় এবং সকাল ৮টায় দুটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মাঠে জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ৭টায়। তবে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে ওই জামাত প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে।
গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদ অ্যান্ড ঈদগাহ ময়দানে সকাল সাড়ে ৭টায় এবং সকাল সাড়ে ৮টায়, ধানমণ্ডি ঈদগাহ জামে মসজিদে সকাল ৮টায়, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন প্লাটফর্মে সকাল ৮টায়, সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকার মাঠে সকাল ৮টায়, মিরপুরের ৬ নম্বর সেকশন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মাদরাসায়ে দারুল উলুম ও এতিমখানা এবং ঈদগাহ ও বাজার কমপ্লেক্সে সকাল সাড়ে ৭টায়, সায়েদাবাদ চিশতিয়া সাইদিয়া দরবার শরিফ জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায়, মগবাজার বিটিসিএল কলোনি জামে মসজিদে সকাল ৮টায়, দেওয়ানবাগ শরিফে সকাল ৮টা, ৯টায় এবং ১০টায় মোট তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া তারা মসজিদে সকাল পৌনে ৮টায় এবং ৯টায় মোট দুটি, ফার্মগেটের বায়তুশ শরফ মসজিদে সকাল ৮টায়, কল্যাণপুর হাউজিং এস্টেট জামে মসজিদে সকাল ৮টায়, পূবাইল মীরেরবাজার জামে মসজিদে সকাল পৌনে ৮টায়, খিলক্ষেত কুর্মিটোলা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ ঈদগাহ ময়দানে সকাল ৭টায় এবং পৌনে ৮টায় দুটি, পূবাইল বসুগাঁও মীরবাড়ী ঈদগাহ ময়দানে সকাল ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
source : abna24