বাঙ্গালী
Friday 22nd of November 2024
0
نفر 0

দায়েশের প্রতি নিন্দা জানানো মুসলমানদের প্রাত্যহিক কর্তব্য ; নাসরুল্লাহ

দায়েশের প্রতি নিন্দা জানানো মুসলমানদের প্রাত্যহিক কর্তব্য ; নাসরুল্লাহ

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা -আবনা-: লেবাননের হিজবুল্লাহ বাহিনী প্রধান সৈয়দ হাসান নাসরুল্লাহ গত শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানী বৈরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সমাবেশে প্রদত্ত ভাষণে দায়েশের হত্যাযজ্ঞ ও অপরাধকর্মের নিন্দা জানানোর জন্য বিশ্বের মুসলমানদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন: বিগত বছরগুলোতে গণমাধ্যমে যেভাবে ইসলাম ধর্ম ও মহানবি (স.) এর প্রতি অবমাননা করা হয়েছে তা নজীর বিহীন। এর আগেও তারা ইসলাম ধর্মের অবমাননায় চলচ্চিত্র নির্মাণ ও ব্যঙ্গচিত্র বা গ্রন্থ প্রকাশের মত পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু বিগত ৬ বছরে তাকফিরি গ্রুপগুলো এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়েছে। তারা (তাকফিরিরা) একদিকে নিজেদেরকে ইসলাম ধর্মের অনুসারী বলে দাবী করে এবং পবিত্র বাক্য ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ও মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ নিজেদের পতাকায় লেখে, অপরদিকে মানুষ হত্যা ও গণহত্যায় লিপ্ত হয়।
নাসরুল্লাহ বলেন: সবচেয়ে ঘৃণিত সন্ত্রাসী গ্রুপ হিসেবে দায়েশ ইসলামের নামে মানুষ হত্যা অব্যাহত রেখেছে এবং তারা আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মারছে। তারা সাংস্কৃতিক নিদর্শনগুলোকে ধ্বংস করে দেয় এবং গণহত্যা চালায়। আর তারা নিজেদের কর্মকাণ্ডগুলোকে ইসলামের নামে এবং মহানবি (স.) এর নামে বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করছে। এ
সন্ত্রাসীদের নিন্দা জানানো সকল মুসলমানের কর্তব্য –এ বিষয়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন: তাদের কর্মকাণ্ড ইসলাম ধর্ম, মহানবি (স.), তাঁর সাহাবিগণ এবং আহলে বাইত (আ.) এর সাথে সম্পৃক্ত নয়। যে কোন অবস্থায় এবং সম্ভাব্য যে কোন পন্থায় –চাই তা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেই হোক না কেন- সন্ত্রাসীদের নিন্দা জানিয়ে বিশ্ববাসীর সামনে মুসলিম উম্মাহ থেকে সন্ত্রাসীদের পৃথক হওয়ার বিষয়টি ঘোষণা করা সকল মুসলমানের কর্তব্য।

ইসলামের নামের অপব্যবহার করছে সন্ত্রাসীরা
তিনি তার ভাষণে একটি শিশুর মাধ্যমে দামেস্কের পুলিশ ফাঁড়িতে আত্মঘাতী হামলা এবং আলেপ্পোর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে তুরস্কের দুই সৈন্যকে আগুনে পুড়িয়ে মারাসহ সম্প্রতি দিনগুলোতে দায়েশের বিভিন্ন অপকর্মের প্রতি ইঙ্গিত করেন। এছাড়া অন্যের উপর নিজেদের চিন্তাধারাকে চাপিয়ে দেয়ার যে অপচেষ্টা ওয়াহাবিরা করছে সে সম্পর্কে নাসরুল্লাহ বলেন: ওয়াহাবিরা মিলাদুন্নাবি (স.) উপলক্ষে আয়োজিত মাহফিলগুলোকে নিষিদ্ধ করেছে। সেগুলোকে হারাম, বিদআত প্রণয়ন ও কুফরের রূপ বলে আখ্যায়িত করার পাশাপাশি আহলুস সুন্নাহ কর্তৃক আয়োজিত ঐ সকল মাহফিলগুলোর মাঝে বিস্ফোরণ ঘটানোর লক্ষ্যে বহু আত্মঘাতী প্রেরণ করেছে।
দায়েশসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠির নাম বলার সময় যেন ‘ইসলাম’ শব্দটি ব্যবহার না করা হয় -এ বিষয়ের প্রতি মুসলমানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে হিজবুল্লাহ প্রধান বলেন: আমরা লক্ষ্য করেছি যে, মুসলিম বা অমুসলিম, এমনকি গণমাধ্যমগুলোও ‘ইসলামি সন্ত্রাসবাদ’, ‘ইসলামি উগ্রতাবাদ’, ‘উগ্রতাবাদী ইসলামী দল’সহ নানা ঘৃণাত্মক শব্দ ব্যবহার করে থাকে। এ ধরনের শব্দ ব্যবহার হয়তবা অনেক ক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়ে থাকে, কিন্তু আমাদের জানা উচিত যে, অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ উদ্দেশ্যে ও ইচ্ছাকৃতভাবে এ শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়।
দায়েশ সন্ত্রাসীদের প্রতি সাহায্য প্রেরণ বন্ধ করার লক্ষ্যে কিছু কিছু দেশের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন: যদিও মার্কিন বিমান বাহিনী আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইয়েমেন, সিরিয়াসহ অন্যান্য দেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে, ইসরাইল বর্তমানেও ফিলিস্তিনে হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রেখেছে কিন্তু এ হত্যাযজ্ঞকে না খ্রিষ্টান ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত করা হয় আর না ইহুদি ধর্মের সাথে। আমেরিকা ও ইসরাইল বিভিন্ন দেশে যে হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে তা বর্ণনা করতে কেউ ‘যুক্তরাষ্ট্রের খ্রিষ্টান সেনারা’ বা ‘ইসরাইলের ইহুদি সৈন্যরা’ এ ধরনের বাক্য ব্যবহার করে না। সকলের প্রতি আমাদের দাবী হচ্ছে দায়েশের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে ইসলামের সাথে সম্পৃক্ত না করে স্বয়ং ঐ সন্ত্রাসীদের সাথেই যেন সম্পৃক্ত করা হয়।

আলেপ্পো মুক্তকরণে প্রতিরোধ আন্দোলনের ভূমিকা
সিরিয়ার আলেপ্পো শহরের সাম্প্রিতিক ঘটনার বিষয়ে নাসরুল্লাহ বলেন: আলেপ্পো বিজয়; সিরিয়া সরকার, সৈন্য, জনগণ এবং প্রতিরোধ আন্দোলনের আত্মত্যাগের ফলে অর্জিত হয়েছে। আলেপ্পো বিজয়ের পর, সিরিয়ার সরকার অপসারণের লক্ষ্যে কিছু কিছু দেশের পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। আলেপ্পো বিজয়, সিরিয়া সংকটের নতুন সমাধান হতে পারে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিশেষ করে আরব সরকারগুলোর পক্ষ থেকে সিরিয়া বিরোধী যুদ্ধে সন্ত্রাসীদের যে সহযোগিতা করা হয়েছে, তা ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলনকে যে সহযোগিতা আরব ও বিশ্বের অন্যান্য দেশ করেছে তা অপেক্ষা বহুগুণে বেশী।# প্রেসটিভি

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

ইরান না থাকলে সিরিয়া ও ইরাকে এখন ...
তুরস্কে বিয়ের অনুষ্ঠানে বোমা ...
সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর জন্মদাতা ...
যাকযাকির বিরুদ্ধে যড়যন্ত্রের ...
সৌদি আরবের গ্রান্ড মুফতি কে? (পর্ব ...
সন্ত্রাসীদের হামলা থেকে শোক ...
হোসাইনি দালানে আয়াতুল্লাহ ...
হযরত আলীর (আ.) প্রতি বিশ্বনবী (সা.)এর ...
বেকার সমস্যা আমেরিকায় চীন কীভাবে ...
'অটিস্টিক শিশু সমস্যা নয়, প্রয়োজন ...

 
user comment