ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরে সেনাবাহিনীর গুলিতে দুই গেরিলা ও চার বেসামরিক নিহত হয়েছে। এ ঘটনাকে 'অত্যন্ত দুঃখজনক ও অন্যায়' বলে অভিহিত করে আজ (সোমবার) কাশ্মির উপত্যকায় সর্বাত্মক বনধ পালন করছে যৌথ প্রতিরোধ নেতৃত্ব।
কাশ্মিরে নিরাপত্তা বাহিনী 'নির্বিচারে গুলি চালাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে' বলে মন্তব্য করেছেন হুররিয়াত কনফারেন্সের একাংশের প্রধান মীরওয়াইজ ওমর ফারুক।
পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ থাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭ থানা এলাকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, গতকাল (রোববার) দিবাগত রাত ৮টা নাগাদ সোপিয়ান জেলার পোহানে ভ্রাম্যমান চেকপোস্টে গেরিলারা গুলিবর্ষণ করলে সেনাবাহিনীর পাল্টা গুলিবর্ষণে ওই নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, গুলিতে সোপিয়ানের বাসিন্দা শাহীদ আহমেদ দার নামে এক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। তার কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া, গাড়িতে থাকা তার তিন সহযোগীও নিহত হয়েছে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, সোপিয়ান জেলার পোহানে ভ্রাম্যমান চেকপোস্টে একটি গাড়িকে থামার জন্য বলা হলেও তা থামেনি। এসময় নিরাপত্তাবাহিনীর উপরে গুলিবর্ষণ করা হয় এবং পাল্টা গুলিতে এক সন্ত্রাসী নিহত হয়।
শ্রীনগরে প্রতিরক্ষা মুখপাত্র কর্নেল রাজেশ কালিয়ার দাবি, নিহত তিন যুবক সন্ত্রাসীদের সহযোগী ছিল। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সংঘর্ষের পরে সেনা গ্রামে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে তিনজন নিহত হয়। এছাড়া আজ উদ্ধার হয়েছে দুটি মৃতদেহ। আশিক হুসাইন ভাট নামে তাদের একজনের নাম লস্কর-ই তাইয়্যেবার সদস্য। ২০১৭ সালের ১৩ নভেম্বর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। নিহত অন্যজনের নাম গওহর আহমদ লোন (২৪)।
এই ঘটনার পরই সোপিয়ানে বড় ধরনের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে একে 'ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা' বলে দাবি করা হয়েছে। পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে রায়নাওয়াড়ি, খানইয়ার, নৌহাট্টা, এম আর গঞ্জ, সাফা কদল, ক্রালখুদ ও মৈসুমা থানা এলাকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কাশ্মিরে আজ ট্রেন চলাচলও স্থগিত করাসহ কাশ্মির পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।