প্রশ্ন : মহান আল্লাহ্ সূরা আরাফের ১৭৩ নং আয়াতে বলেছেন,“আর যখন তোমার পালনকর্তা বনি আদমের পৃষ্ঠদেশসমূহ হতে বের করলেন তাদের সন্তানদেরকে এবং তাদেরকে নিজেদের ওপর প্রতিজ্ঞা করালেন : আমি কি তোমাদের পালনকর্তা নই? তারা বলল : অবশ্যই,আমরা অঙ্গীকার করছি। আবার না কিয়ামতের দিন বলতে শুরু করে : এ বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।”
এ আয়াতে সকল আদম সন্তান হতে প্রতিশ্রুতি গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। এই প্রতিশ্রুতি কিরূপ প্রতিশ্রুতি ছিল?
(উত্তর দিয়েছেন আয়াতুল্লাহ্ নাসের মাকারেম সিরাজী)
উত্তর : এই প্রতিশ্রুতি হলো মানুষের সহজাত প্রকৃতি,অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা ও যোগ্যতা যা তার সৃষ্টিতে নিহিত রয়েছে। মাতৃগর্ভে অবস্থানের সর্বপ্রথম পর্যায়ে মানুষ অত্যন্ত ক্ষুদ্র এক অস্তিত্ব যা আরবীতে ذر (যার) নামে অভিহিত। এ পর্যায়েও আল্লাহ্ তার মাঝে একত্ববাদের প্রকৃত সত্যকে অনুধাবনের প্রস্তুতিমূলক যোগ্যতা দান করেছেন যা তার অভ্যন্তরীণ সত্তা ও প্রকৃতিতে খোদা পরিচিতির অনুভূতি দান করে তার বুদ্ধিবৃত্তিকে সচেতন করে তোলে। যেহেতু সকল আদম সন্তানই প্রকৃতিগতভাবে একত্ববাদী হিসেবে সৃষ্ট সেহেতু তাদের নিকট হতে আল্লাহর সাক্ষ্য গ্রহণের অর্থও এটিই। এরূপ কথা আমরাও বলে থাকি,যেমন বলি, তার চেহারা তার মনের অবস্থা বলে দিচ্ছে’ বা তার চোখ দু’টি বলছে,সে গতরাতে ঘুমায় নি।
মহান আল্লাহ্ও বস্তুর অবস্থা তার স্বীকারোক্তি বলে উল্লেখ করে বলেছেন,
فقال لها و للأرض ائْذيا طوعاً أو كرهاً قالذا أذينا طآئِعين
“অতঃপর তিনি তাকে (আকাশমণ্ডলী) ও পৃথিবীকে বললেন : তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল : আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।”(সূরা হামীম সিজদাহ্ : ১১)
এখানে নভো ও ভূমণ্ডল মহান আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী সৃষ্ট ও পরিচালিত হয়েছে বলে এটিকে তাদের স্বেচ্ছায় আগমনের ঘোষণা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তারা আল্লাহর সঙ্গে কোন কথোপকথন করার ক্ষমতা দিয়ে সৃষ্ট নয়। ( জ্যোতি ১ম বর্ষ, ৪র্থ সংখ্যা)