ঢাকায় নিযুক্ত ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের মাননীয় রাষ্ট্রদূত ড. আব্বাস ভায়েজী দেহনাবী বলেন, “৭০ বছর আগে একটি শয়তানি রাষ্ট্র ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যায়নবাদী ইসরাইলের স্বপ্ন ছিল নীল থেকে ফোরাত পর্যন্ত বিস্তৃত এক ইহুদি রাজ কায়েম করা।
আবনা ডেস্কঃ ‘ইহুদিবাদি ইসরাইল মুসলিম বিশ্বে একটি ক্যান্সার সদৃশ্য। আমেরিকা, ব্রিটেনসহ সাম্রাজ্যবাদীরা ইসরাইল নামের এই অপশক্তির বীজ বপন করেছে। মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধ হলে ফিলিস্তিন পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।’ বিশ্ব কুদস দিবস উপলক্ষে ঢাকার বিএমএ মিলনায়তনে আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেছেন বক্তারা।
গতকাল (শুক্রবার) বিকেলে সাড়ে তিনটায় আল কুদস কমিটি বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ও সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোস্তফা লুৎফুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত ড. আব্বাস ভায়েজী দেহনাভী এবং সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আ ন ম মেশকাত উদ্দীন। স্বাগত ভাষণ দেন আল কুদস কমিটি বাংলাদেশের সহসভাপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এ কে এম বদরুদ্দোজা। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও দৈনিক আজকের ভোলা পত্রিকার সম্পাদক অধ্যক্ষ মুহাম্মদ শওকাত হোসেন। আলোচনায় অংশ নেন মাসিক মদীনা পত্রিকার সম্পাদক মাওলানা আহমদ বদরুদ্দীন ও বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ হুজ্জাতুল ইসলাম সাইয়েদ আফতাব হোসেন নাকাভি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন 'আল কুদস কমিটি বাংলাদেশ'-এর সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহ কাউসার মুস্তফা আবুলউলায়ী।
‘আল কুদ্স ও ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলি দখলদারিত্বের ৭০ বছর : মুসলিম উম্মাহর দায়িত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট লুৎফুল্লাহ এমপি ফিলিস্তিনি সংগ্রামীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেন, ‘‘যেখানেই জুলুম নির্যাতন, যেখানেই সাম্রাজ্যবাদের হিংস্র থাবা, যেখানেই মানবতার পতন সেখানেই আমরা আছি এবং আমরা থাকব। আজকে সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা আরব মুসলমান ও গণমানুষের উপর জুলুম করছে। মানবিক ঐক্যের মাঝে ফাটল ধরিয়ে আরব ও মুসলিম সমাজকে বিভক্ত করে শোষণের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। সেজন্যেই তারা ইসরাইল নামের কঠিন অপশক্তির বীজ বপন করেছে। ইহুদি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী চেতনা যারা লালন করেন দল-মত নির্বিশেষে আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হতাম তবে ইহুদি মার্কিন পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদীরা দুনিয়ার কোথাও বিপর্যয় ঘটাতে পারত না। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হই তবেই আমাদের ভূখণ্ড, আমাদের অধিকার, আমাদের ধর্ম, সংস্কৃতি, আমাদের যা কিছু আছে সবই আমরা পুনরুদ্ধার করতে পারব।”
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দৈনিক আজকের ভোলা পত্রিকার সম্পাদক অধ্যক্ষ মুহাম্মদ শওকাত হোসেন
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকায় নিযুক্ত ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের মাননীয় রাষ্ট্রদূত ড. আব্বাস ভায়েজী দেহনাবী বলেন, “৭০ বছর আগে একটি শয়তানি রাষ্ট্র ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যায়নবাদী ইসরাইলের স্বপ্ন ছিল নীল থেকে ফোরাত পর্যন্ত বিস্তৃত এক ইহুদি রাজ কায়েম করা। কিন্তু প্রকৃত মুসলমানদের আত্মজাগৃতির এবং হামাস ও হিজবুল্লাহর প্রতিরোধ সংগ্রামের ফলেই সেটা সম্ভব হয়নি। ফিলিস্তিনের মানুষ বছরের পর বছর ধরে নির্যাতিত।”
রাষ্ট্রদূত পবিত্র কালামে পাক থেকে উদ্ধৃতি পেশ করে বলেন, ‘তোমাদের কি হয়েছে যে তোমরা আল্লাহর পথে লড়াই করছ না অসহায় নারী,পুরুষ ও শিশুদের রক্ষার জন্যে? যারা বলে হে আমাদের প্রতিপালক! জালেমের এই জনপদ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার কর। তোমার কাছ থেকে কাউকে আমাদের অভিভাবক কর এবং তোমার কাছ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী পাঠাও।’ (৪:৭৫) আর আল্লাহর রাসুল (স) হাদীসে বলেছেন, ‘কোনো মুসলমানের সমস্যা যদি অন্য মুসলমানের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে না হয় তবে সে মুমিনই নয়।’ আজকে ফিলিস্তিনের জনগণের চেয়ে আর কে বেশী নির্যাতিত?
তিনি আরও বলেন, “ইসরাইল রাষ্ট্রটি মুসলিম বিশ্বে একটি ক্যান্সার সদৃশ্য। এর বিস্তৃতি ঘটেছে সাম্রাজ্যবাদীদের সহায়তায় যায়নবাদী ইহুদিদের দ্বারা। এ সমস্যা শুধু ফিলিস্তিনিদের সমস্যা নয় গোটা মুসলমানদের সমস্যা। কেবল মুসলমানদেরই নয় সমগ্র বিশ্ব মানবতার সমস্যা এটি। এখানে মুসলিম গণমানুষের উপর অমানবিক নির্যাতন হচ্ছে। কাজেই এটি কেবল ইসলামী ইস্যুই নয় মানবিক ইস্যুও বটে। খ্রিস্ট সমাজের অনেক মানবতাবাদীও এর প্রতিবাদ করছে এমনকি নির্দোষ কিছু ইহুদিও যায়নবাদীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। সেখানে নিষ্পাপ নারী, শিশু, যুবক, বৃদ্ধকে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। কিন্তু তৌরাতে বা ইঞ্জিলেতো কোথাও নেই নির্দোষ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করতে হবে। এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে গণচেতনা ও বিশ্বব্যাপী গণজোয়ার সৃষ্টির জন্যেই ইমাম খোমেনী (র) মাহে রমজানের শেষ শুক্রবারকে কুদস দিবস ঘোষণা করেন। অনেক দেশ এটাকে স্বাগত জানায়। অনেক দেশের সরকার স্বাগত না জানালেও জনগণ এর সাথে একাত্ম হয়েছে। আবার অনেক মুসলিম দেশের শাসক কুদস দিবসের চেতনার সাথে একাত্ম না হয়ে আমেরিকা ও ইসরাইলকে সহযোগিতা করছে। সাম্রাজ্যবাদীরা ও তাদের সহযোগী এসব শাসকরা শিয়া-সুন্নি ইস্যু তুলে মুসলিম বিশ্বকে বিভক্ত করেছে ও করছে। তারা দায়েশ, আল কায়দা ও তালেবান নামের সন্ত্রাসী তৈরি করে মুসলমানদের দিয়ে মুসলমানদের ধ্বংস করছে। এই বিভক্তির ফলে ইহুদিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদীরই লাভবান হচ্ছে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেশকাত উদ্দীন বলেন, “৭০ বছরের অধিক সময় ধরে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের উপর যে অত্যাচার চলছে একমাত্র মানবিক ঐক্যের জোয়ার দ্বারাই একে প্রতিহত করা সম্ভব। মুসলিম হোক, অমুসলিম হোক কোনো মানুষের প্রতিই কোনো প্রকার অত্যাচার মেনে নেয়া যায় না। ইসরাইলের প্রধান মদদদাতা হচ্ছে আমেরিকা। এরপর রয়েছে ব্রিটেন ও ফ্রান্স। শুধু ফিলিস্তিনেই নয় মিয়ানমার, ইয়ামেন, ইরাক, আফগানিস্তান, কাশ্মির, চেচনিয়া, সিরিয়া সবখানেই মুসলমানরা নানা বিপর্যয়ের সম্মুখীন। একসময় বসনিয়ায় নির্যাতন হয়েছে। বাবরী মসজিদ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতের শিব সেনারা। এখনো সে দেশে মুসলিম নির্যাতন হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আমাদেরকে দাঁড়াতে হলে ইসলামি ঐক্যের সাথে সাথে প্রকৃত সমস্যাকে চিহ্ণিত করতে হবে। আমাদের নিজেদেরকে বৈজ্ঞানিক ও সামরিক শক্তিতে যেমন বলীয়ান হয়ে তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে এবং বুদ্ধিবৃত্তিকভাবেও প্রতিহত করার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।”
মাসিক মদীনা সম্পাদক মাওলানা আহমদ বদরুদ্দীন আরবের কবি আহমদ সাওকির একটি লাইন উচ্চারণ করে এর অর্থ করেন যে, ‘আল কুদস মুসলমানের কেবল রাষ্ট্রীয় সম্পদই শুধু নয় আল কুদস হচ্ছে মুসলমানদের ঈমানের স্তম্ভ। মুসলমানের ঈমান এবং অস্তিত্বের জন্যে মক্কা, মদীনা এবং আল কুদস অবিনাশী অংশ রূপে অপরিহার্য। এর কোনো একটি মুসলমানের হাতছাড়া হয়ে গেলে মুসলমানদের বিপর্যয়ের সীমা থাকবে না। এটি একসময় ইহুদিদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু এরা এক অভিশপ্ত জাতিরূপে আল কুদসের অধিকার হারিয়েছে। আল্লাহপাক আল কুদস মুসলমানেরকে দিয়েই তাদের মর্যাদাকে বর্ধিত করেছেন। ইহুদিরা হচ্ছে সেই অভিশপ্ত জাতি যারা তাদের নবীদেরকে হত্যা করেছে। যারা আল্লাহকে গালি দেয়। আর যারা তাদের ধর্মগ্রন্থকে বিকৃত করেছে। আজ কোনটা যে তাদের আসল তাওরাত তা বোঝা দায়। তারা বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে পৃথিবীতে বড় বড় বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। এ কথা কুরআনেও রয়েছে।”
হুজ্জাতুল ইসলাম সাইয়েদ আফতাব নাকাভী বলেন, “রমজান মাসের ২১ তারিখে হযরত আলী শাহাদাত বরণ করেছিলেন যিনি ছিলেন রাসুলের (সা)-এর আহলে বাইত এবং রাসুলের (সা)-এর প্রজ্ঞাবান সহচর এবং অলি মহাপুরুষ। এই মহাপুরুষকে হত্যার পর ৭০ বছর উমাইয়া শাসকদের প্ররোচনায় বিভিন্ন মসজিদে তাঁর বদনাম করে গালাগালি করা হতো। কিন্তু ৭০ বছর পর মুসলমানের ভুল ভাঙে। ওমর বিন আবদুল আজিজ সেই সব গালাগালি বন্ধ করে দেন্। কাজেই ৭০ বছর যাবত ফিলিস্তিনিরা নির্যাতিত হলেও ইনশাআল্লাহ এই নির্যাতনের দিন অচিরেই শেষ হয়ে যাবে। সারা দুনিয়ায় একটি জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। ইমাম খোমেনী (র)-এর নেতৃত্বে আল কুদসের ঘোষণার পর সেটি বিশ্বের মুসলমানরা গ্রহণ করেছে। এখন আমাদের শুধু দরকার কয়েকটি বিষয়ে মনোযোগ দেয়ার। মুসলমানদের মধ্যে ঐক্যের প্রতিবন্ধক সকল বিষয় দূর করতে হবে। মুসলমানদের মাঝে সঠিক দ্বীনি চেতনা যা আহলে বাইতের মাঝে ছিল সেটার প্রচার ও প্রসার ঘটাতে হবে। শিয়া ও সুন্নি মাজহাবের ভেতর সমন্বয় ঘটাতে হবে। তরুণদেরকে সজাগ করতে হবে ও তাদেরকে দ্বীনি বিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে যাতে অপসংস্কৃতি তাদেরকে গ্রাস করতে না পারে। তাদেরকে মুসলমানদের প্রকৃত ইতিহাস শেখাতে হবে ও তাদের ভৌগোলিক, ঐতিহ্যিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয় তাদের সামনে তুলে ধরতে হবে। ফিলিস্তিন মিয়ানমার সহ যেকোনো জায়গায় মুসলমান নির্যাতিত হলে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে ও তাদের প্রতি অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে বূলন্দ করতে হবে।”
স্বাগত ভাষণে আল কুদস কমিটি বাংলাদেশের সহসভাপতি, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এ কে এম বদরুদ্দোজা বলেন, ‘‘ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনি গণহত্যা যেন আজ সেখানকার জনগণের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন সেখানে কোনো না কোনো স্থানে মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে। বিশ্বের নানা স্থানে মুসলমানদেরকে হত্যা করা হচ্ছে। ইমাম খোমেনী (র)- কর্তৃক আল কুদস দিবসের যুগান্তকারী ঘোষণা বিশ্বে সত্যিকার অর্থেই একটা প্রভাব ফেলেছে। যত নির্যাতনই চালাক না কেন যায়নবাদী ইসরাইল নৈতিকভাবে পরাজিত হচ্ছে। এর বাস্তব প্রমাণ হলো সাম্প্রতিক সময়ে আর্জেন্টিনা ফুটবল টিম কর্তৃক ইসরাইলি টিমের সাথে ফুটবল চ্যারেটি ম্যাচ বয়কট করে দেয়া। শুধু মুসলমানই নয় ফিলিস্তিনি মানবতার উপর ইসরাইলি বর্বরতা সকল মানবতাবাদী মানুষেরই ঘৃণা কুড়িয়েছে। আর ইমামের ঘোষিত আল কুদস দিবস সারা বিশ্বে সত্যিকার অর্থেই একটা জাগরণ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। তাই নেতানিয়াহুর টেলিফোনে অনুরোধ সত্ত্বেও আর্জেন্টিনা টিম লিডার মেসিসহ পুরো দলের মন গলানো যায়নি আর্জেন্টিনা-ইসরাইল চ্যারেটি ম্যাচে। কারণ এর ভেতর এক ইসরাইলি রাজনৈতিক প্রতারণা লুকায়িত ছিল তার তারা বুঝতে পেরেছে। আমরা ধন্যবাদ জানাই মেসিসহ সমগ্র টিমকে।”
তিনি বলেন, “আজকে ট্রাম্প-এর প্রচেষ্টায় জেরুজালেমে ইসরাইলের রাজধানী স্থাপনের চেষ্টায় একটা ধাক্কা খেয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কেউ জেরুজালেমে তাদের দুতাবাস স্থানান্তর করেনি। পৃথিবীর মানবতাবাদীরা বিবেকের বিচারের ডাকে সাড়া দিয়েছে। সেটি এই আল কুদসের চেতনা সম্প্রসারণেরই ফল।”
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. শাহ কাউসার মুস্তফা আবুলউলায়ী বলেন, ‘‘ইসলামী বিপ্লবের মহান নেতা মুসলমানদের প্রথম কিবলা বায়তুল মোকাদ্দাসকে পুনরুদ্ধারের জন্যে পবিত্র জুমাতুল বিদাকে ‘আল কুদস দিবস’ ঘোষণা করে দল-মত-মাজহাব-তরিকা নির্বিশেষে সকল মুসলমানদেরকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। সেই প্রচেষ্টা তার আহ্বানে সাড়া দেয়া মুসলমানেরা এখনো অব্যাহত রেখেছে। আজকে প্রতিবছর মাহে রমজানের শেষ শুক্রবার সারা বিশ্বে দিবসটি একযোগে পালিত হচ্ছে। কিন্ত্র মুসলিম ঐক্য বিনষ্টকারীরা শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব তৈরির জন্যে চালাচ্ছে ভয়ানক ষড়যন্ত্রমূলক প্রচেষ্টা। আমাদেরকে যেকোনো মূল্যে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যের কোনো বিকল্প নাই। ফিলিস্তিনসহ সব দেশের মুসলমানরা আমাদেরই ভাই-বোন। তাদের উপর নির্মম নির্যাতন হচ্ছে অথচ ফিলিস্তিনের পাশেরই কোনো কোনো দেশ ইসরাইলের সাথে সখ্যতা স্থাপন করে চলেছে। ন্যূনতম ইমান থাকলেওতো কোনো মুসলমান এটা করতে পারে না।“”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্ব আল কুদস দিবস পালনের মধ্যে দিয়ে আল কুদস মুক্তির বিপ্লবী আওয়াজ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা প্রতিবছর দিবসটি পালন করছি। এর নেপথ্যে রয়েছে অনেক নিবেদিতপ্রাণ মানুষের অবদান।”
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন লেখক, গবেষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান। পবিত্র কালামে পাক থেকে তেলাওয়াত করেন ক্বারী সাইয়েদ মোহাম্মদ রেজা রাজাভি। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘আল্লাতে যার পূর্ণ ঈমান কোথা সে মুসলমান’ শীর্ষক ঈমানী চেতনা জাগানিয়া গানটি গেয়ে শোনান কবি ও মর্সিয়া লেখক শাহনেওয়াজ তাবিব।
সেমিনারের আগে জুমার নামাজের পর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আল কুদস দিবস উপলক্ষে মানবতার দুশমন ইহুদিবাদী ইসরাইলি বর্বরতার প্রতিবাদ করে ও ফিলিস্তিনি জনতার সংগ্রামের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এক মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আজকের ভোলা সম্পাদক অধ্যক্ষ মুহাম্মদ শওকত হোসাইন। মানববন্ধনে বক্তৃতা দেন আল কুদস কমিটি বাংলাদেশের সেক্রেটারী জেনারেল মোস্তফা তারেকুল হাসান, মাওলানা শাখাওয়াত হোসেন, আবু বকর সিদ্দিক, কবি আমিন আল আসাদ ও মাওলানা মুহিবুল্লাহ প্রমুখ।#