জ্ঞানের চেয়ে বড় আর কোন সম্পদ এই পৃথিবীতে নেই। এটি এমন এক মূল্যবান ও স্থায়ী সম্পদ যা প্রচুর পরিমাণ দান করলেও বিন্দুমাত্র হ্রাস পায় না। জ্ঞান হলো নূর বা আলো যা পৃথিবীর মানুষকে পথ দেখায়। মহান আল্লাহ্ বলেছেন যে,সে-ই বেশি তাকওয়া সম্পন্ন যে বেশী জ্ঞানী। মহান আল্লাহ্ আরো বলেছেন,যে জানে আর যে জানে না তারা দু’জন সমান নয়। এই জ্ঞান অর্জনের পথে কারো মৃত্যু হলে তাকে শহীদের মৃত্যুসম বলা হয়েছে। তাই এই জ্ঞান অর্জনে একে অপরের সাথে সহযোগিতা করা-একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করা উভয়ই কল্যাণকর ও আনন্দদায়ক। জ্ঞান লাভের উদ্দেশ্য হলো অন্ধকার ও অজ্ঞতা দূর করা। অনৈক্য ও বিভেদ মুছে ফেলা। আর সত্যের চূড়ায় আরোহণ করা। যুগে যুগে যেসব সাধক মনীষী এ অনুভূতি নিয়ে কাজ করেছেন,পরস্পর বন্ধুত্ব করেছেন,কথা বলেছেন আল্লামাহ্ শারাফুদ্দীন (রহ.) ও মিশরের আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান শেখ সালিম আল বিশরী (রহ.) তাঁদেরই অন্যতম পুরোধা। মুসলমানদের মাঝের বিতর্কিত বিষয়গুলো পরিহার করা ও সর্বজনস্বীকৃত বিষয়গুলোর দিকে সবারই ফিরে আসা এই ছিল তাঁদের পত্রালাপের মূল প্রতিপাদ্য। সর্বজনস্বীকৃত হাদীস,তাফসির,রেওয়ায়েতসমূহ তাঁদের পরিচয়,বন্ধুত্ব ও পত্রালাপকে পূর্ণতা দিয়েছিল। নিগুঢ় ভালবাসা ও শ্রদ্ধায় আবদ্ধ হয়েছিলেন তাঁরা। পরস্পরের অমিল,অনৈক্য ও বিভেদসূচক বিষয়াদি নিয়ে যখন মুসলিম বিশ্ব চিন্তা ও দলগত শত শত ফিরকায় বিচ্ছিন্ন তখন এই দুই শ্রেষ্ঠ আলেম খুঁজেছিলেন মিল ও ঐক্যের সূত্রসমূহ। তাঁদের যুগের সীমা পেরিয়ে এ ঐক্য আমাদেরও উদাত্ত আহবান জানাচ্ছে।
আল্লামাহ্ শারাফুদ্দীন ও আল্লামাহ্ শেখ সালিম-এর পত্রালাপই আরবী ভাষায় ‘আল মুরাজায়াত’ নামে সংকলিত হয়। ‘মুরাজায়াত’ অর্থ পরস্পর রুজু হওয়া বা পরস্পরের দিকে মুখাপেক্ষী হওয়া।
কেন ও কিভাবে এ গ্রন্থ রচিত হলো?
এ গ্রন্থের পৃষ্ঠাগুলো আজ লেখা হয় নি আর এটি রচনার পেছনে যে চিন্তা কার্যকর ছিল তাও সাম্প্রতিক নয়,বরং এ গ্রন্থের পৃষ্ঠাগুলো পঁচিশ বছর পূর্বেই সংকলিত হয়েছিল। তখনই এর উচিত ছিল পত্রিকার পাতায় আলো বিকিরণ করার। কিন্তু বিভিন্ন সমস্যা ও জটিলতা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এর গতিকে স্তব্ধ করে দেয়ায় এতদিন দৃশ্যমান হতে পারে নি। তবে এ দিনগুলো এর বিক্ষিপ্ততা ও ত্রুটি দূর করে পূর্ণতা দানের সুযোগ এনে দিয়েছিল। কারণ ইতোপূর্বে মুদ্রণের বিলম্বে এর পাতাগুলো অগোছালো ও বিক্ষিপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
এ গ্রন্থ সংকলনের চিন্তা এটি রচনার অনেক পূর্বেই জন্মলাভ করেছিল। এ চিন্তা তরুণ বয়সেই আমার মাথায় উঁকি দিচ্ছিল ও বিদ্যুতের ন্যায় তা আমার ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ বিষয়টি আমার চিন্তাকে সব সময় সঠিক পথে পরিচালিত করত যেন মুসলমানদের মাঝে বিদ্যমান অকল্যাণের মূলোৎপাটন ও তাদের চোখের সামনে থেকে পর্দা অপসারণের মাধ্যমে বাস্তব দৃষ্টিতে জীবনকে অবলোকনে সক্ষম হই। বদ্ধ কপাট উন্মোচনের মাধ্যমে তাদের সামনে সেই প্রকৃত দীন- যার অনুসরণ সকলের ওপর অপরিহার্য তা তুলে ধরতে পারি। ফলশ্রুতিতে সকলে একযোগে ঐশী রজ্জু ধারণ,জ্ঞান ও কর্মের অনুসন্ধান ও সত্যের পতাকার নীচে সমবেত হতে পারি যা আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও আদর্শের জন্ম দেবে এবং একে অপরের পৃষ্ঠপোষকে পরিণত করবে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য,মুসলিম ভ্রাতৃগণ যারা একই উৎস থেকে উৎসারিত ও অভিন্ন বিশ্বাস পোষণ করে তারা পরস্পর শত্রুতে পরিণত হয়েছে। আলোচনার ক্ষেত্রে তারা মূর্খের ন্যায় এতটা সীমা লঙ্ঘন করছে যে,আলোচনা ও বির্তকের সীমা পেরিয়ে তা অস্ত্র ধারণ ও একে অপরকে আক্রমণে পর্যবসিত হচ্ছে। এ অবস্থাটি অন্তরের বিদ্বেষ হতে সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থা একদিকে আমাদের চিন্তার দিকে আহবান করছে অন্যদিকে আমাদের অন্তরকে দুঃখভারাক্রান্ত করছে। এ অবস্থায় কি করা উচিত?
এসব আমাকে প্রচণ্ড কষ্ট দিত;আমার কাঁধে যেন দুঃখের বোঝা চেপে বসেছিল। এ অবস্থা থেকে মুক্তির আশায় ১৩২৯ হিজরীতে আমি মিশরে গমন করি। মুসলমানদের মাঝে ঐক্যের লক্ষ্যে কলমসমূহকে এ পথে আনার প্রচেষ্টা শুরু করি। পূর্বেই আমার মধ্যে এ অনুভূতি দৃঢ়তা লাভ করেছিল যে,এমন ব্যক্তির সন্ধান লাভ করবো যার কাছে আমার অনুভূতি আন্তরিকভাবে ব্যক্ত করতে পারব ও ঐক্যের সে লক্ষ্যে পৌঁছার সঠিক পথ নির্বাচনে সক্ষম হব। হয়তো আল্লাহ্ আমাদের মধ্য থেকে এমন এক তীর ছোঁড়াবেন যা ছিন্ন ভিন্ন মুসলিম জাতিকে ঐক্যের পতাকাতলে সমবেত করবে ও নিজেদের বিপদাপদকে দূরীভূত করবে।
আলহামদুলিল্লাহ্,অবশেষে যখন মিশরে এলাম তখন আমার সে লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হলাম। কারণ সে সময় মিশর এমন এক কেন্দ্র ছিল যেখান থেকে জ্ঞান অঙ্কুরিত এবং প্রমাণের ওপর নির্ভর করে তা সত্যের দিকে পরিচালিত ও অবনমিত হত। এছাড়াও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির উপস্থিতির বৈশিষ্ট্যও সমন্বিত হয়েছিল মিশরে। অবশেষে এখানেই সৌভাগ্যক্রমে এমন একজন বড় আলেমের সন্ধান পাই যাঁর সাক্ষাৎ আমার আনন্দকে পূর্ণতা,হৃদয়কে প্রফুল্ল ও মস্তিষ্ককে নিশ্চিন্ততা দান করে। তিনি সুন্দর চরিত্র,গভীর চিন্তাশক্তি,সজীব হৃদয় ও সমুদ্রের ন্যায় প্রসারিত জ্ঞানের অধিকারী মিশরের এক সম্মানিত ও কৃতি সন্তান। তিনি সেখানকার ধর্মীয় নেতৃত্বের দায়িত্বে ছিলেন এবং প্রকৃতই এ পদের উপযুক্ত ছিলেন।
এ বিষয়টি কতই না সুন্দর আলেম ও জ্ঞানী ব্যক্তিরা পরস্পরের মিলনে পবিত্র হৃদয়,হাসিমুখ ও নবী (সা.)-এর ন্যায় ব্যবহার ও আচরণ প্রদর্শন করবে! কোন আলেম ও জ্ঞানী ব্যক্তি এমন চমৎকার পোষাক তাঁর দেহ ও মনে পরিধান করে নিজে যেমন প্রফুল্ল থাকবেন তেমনি মানুষরাও নিরাপত্তা ও প্রশান্তি সহকারে তাঁর নিকট মনের কথা বলবে,এ বিষয়ে কোন সংকোচ অনুভব করবে না ও নির্দ্বিধায় তাদের গোপন কথাগুলো বলতে পারবে।
মিশরের এ বিশিষ্ট ব্যক্তিটি এমনই এক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। নাজাফের বৈঠকগুলো এত আকর্ষণীয় ছিল,আশা করতাম যেন তার সমাপ্তি না ঘটে। আমি আমার অসন্তোষ ও মনোকষ্টগুলো তাঁর নিকট বলতাম এবং তিনিও তাঁর বিভিন্ন অভিযোগ-অনুযোগ আমাকে বলতেন। যে বিষয়ে আমাদের দু’জনের মধ্যে ঐকমত্য ছিল তা হলো শিয়া ও সুন্নী উভয়ই মুসলমান ও নিঃসন্দেহে সত্য দীন- ইসলামের অনুসারী। তাই নবী (সা.) তাদের জন্য যা এনেছেন সে বিষয়ে তারা একমত পোষণ করে। ইসলামের মৌলিক বিষয়সমূহে তাদের মাঝে কোন অনৈক্য নেই। যে অনৈক্য রয়েছে তা কোরআন,সুন্নাহ্,ইজমা ও আকল হতে দীনের আহকাম উদ্ঘাটনে মুজতাহিদদের মধ্যকার পার্থক্যের ন্যায়। তাই এ ক্ষুদ্র বিভেদ উম্মতের পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতার কারণ হতে পারে না। কি কারণে এ দু’সম্প্রদায়ের মাঝে শত্রুতা সৃষ্টি হলো ও তারা পরস্পরকে সহ্য করতে পারছে না তার রহস্য উদ্ঘাটন করা প্রয়োজন।
আমরা যদি ইসলামের ইতিহাসকে পর্যালোচনা করি তাহলে দেখতে পাব যে,এ বিভেদের কারণ একটি বিশ্বাসগত মৌল বিষয়ের মধ্যে নিহিত,আর তা হলো ইমামত। কারণ ইসলামের অন্য কোন মৌল বিষয়ের জন্য কেউ অস্ত্র ধারণ করে নি। সুতরাং ইমামত এ অনৈক্যের সর্ববৃহৎ কারণ। যুগ যুগ ধরে ইমামতের বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা হয় নি,বরং দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টিকে দেখা হয়েছে। যদি উভয় পক্ষ বিশ্লেষণের দৃষ্টিতে (শত্রুতার দৃষ্টিতে নয়) পরস্পরের উপস্থাপিত দলিল-প্রমাণগুলোকে দেখতেন তবে সত্য প্রকাশিত এবং সত্যাকাঙ্ক্ষীদের সামনে সত্যের সূর্য উদিত হত।
আমরা উভয় পক্ষের দলিল-প্রমাণ যথার্থরূপে পর্যালোচনার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানের ব্রত নিয়েছিলাম। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল এমনভাবে বিষয়টিকে অনুভব করবো যাতে পরিবেশে অন্ধ অনুকরণ ও আবেগের কোন স্থান না থাকে। নিজেদের সকল প্রকার গোঁড়ামী ও অন্ধত্ব হতে মুক্ত করে সত্যের পথে পদক্ষেপ গ্রহণ করার সংকল্প নিয়েছিলাম যাতে করে সর্বসম্মত সঠিক পথকে অনুভবের মাধ্যমে মুসলমানদের হৃদয়ে প্রশান্তি দান ও আমাদের নিকট সত্য প্রমাণিত বিষয়ের প্রতি মুসলমানদের চিন্তাকে কেন্দ্রীভূত করা যায়। আল্লাহর সাহায্য ও অনুগ্রহে এ সীমার মধ্যেই আমাদের আলোচনার সমাপ্তি ঘটানো।
তাই আমরা চুক্তিবদ্ধ হলাম তিনি যে কোন প্রশ্ন লিখিতরূপে উপস্থাপন করবেন এবং আমি স্বহস্তে সঠিকতার ভিত্তিতে তার উত্তর দান করবো যা উভয় পক্ষের নিকট গ্রহণযোগ্য সূত্র যথা কোরআন,সুন্নাহ্ ও বুদ্ধিবৃত্তিক দৃষ্টিকোণের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়।
আল্লাহর ইচ্ছায় ‘আল মুরাজায়াত’ গ্রন্থটি এভাবেই প্রস্তুত হয়েছিল। যদিও আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল সে সময়েই আমাদের সম্পাদিত কর্মকাণ্ড গ্রন্থাকারে প্রকাশ করবো কিন্তু ভাগ্য ও কালের হস্তক্ষেপে তা সম্ভব হয় নি। হয়তো এর মধ্যে কোন কল্যাণ নিহিত ছিল যা আমরা অবগত ছিলাম না।
আমি দাবি করছি না এ পৃষ্ঠাসমূহ সে সময়ে আমাদের মাঝে যে পত্রসমূহ বিনিময় হয়েছে হুবহু সেগুলোই বা তাঁর বর্ণিত শব্দগুলোই এনেছি। কারণ ছাপার বিলম্বের কারণে পৃষ্ঠাসমূহ অবিন্যস্ত হয়ে পড়ায় অনুক্রম রক্ষা করা যায় নি। তাই বাধ্য হয়ে নতুন করে পৃষ্ঠাগুলো বিন্যস্ত করেছি। তবে এ প্রতিশ্রুতি দিতে পারি,আমাদের মাঝে যা কিছু আলোচিত হয়েছে তা পুরোপুরিই এ গ্রন্থে এসেছে।
আমি প্রথম দিন যে আকাঙ্ক্ষা পোষণ করতাম এখনো একই আকাঙ্ক্ষা পোষণ করি। আর তা হলো এ গ্রন্থ যেন ইসলামী উম্মতের সংস্কার ও কল্যাণ সাধন করতে পারে। তাই যদি মুসলমানরা এ গ্রন্থের প্রতি আগ্রহ পোষণ করে তবে তা আল্লাহর অনুগ্রহ বৈ কিছু নয়। এটিই হবে আমার কর্মের সর্বোত্তম প্রাপ্তি। কারণ আমার যোগ্যতা ও ক্ষমতার সীমায় সংস্কার মহান প্রতিপালকের বিশেষ অনুগ্রহ ছাড়া সম্ভব নয়। তাই তাঁর প্রতি নির্ভর ও প্রত্যাবর্তন করছি-
انْ اُريدُ الاّ الاِصلاحَ ما استطَعْتُ و ما توفِيقي اِلاّ بالله عليه توكلتُ و اليه اُنيبُ
আমি এ গ্রন্থটি সেই সকল জ্ঞানী ও পণ্ডিত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করছি যাঁরা সত্যকে অনুধাবনের জন্য যথার্থ পর্যালোচনা করেন। সেই সকল হাফিয ও মুহাদ্দিসের উদ্দেশ্যে আমার এ নিবেদন যাঁরা হাদীস গবেষণার ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট দলিলের ওপর নির্ভর করেন। আমার এ নিবেদন অভিজ্ঞ দার্শনিক ও কালামশাস্ত্রবিদদের এবং অন্ধত্ব ও গোঁড়ামীর শিকল ভেঙ্গে বেরিয়ে আসা সেই সকল স্বাধীন ও মুক্তমনা শিক্ষার্থী যুবকের উদ্দেশ্যে যারা আমাদের নবীন ও মুক্ত জীবনের আশার আলো। তারা এ গ্রন্থ হতে লাভবান হলেই আমার সফলতা।
আমি এ গ্রন্থের বিন্যাস,সংস্কার ও পর্যাপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নের উত্তর দানে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছি যাতে ন্যায়পরায়ণ ও সঠিক যুক্তিপ্রত্যাশী পাঠকরা কোন সন্দেহ ব্যতীত এর প্রতি সম্পৃক্ত হতে পারেন। আমি এ গ্রন্থে সুস্পষ্ট,সহীহ ও নির্ভরযোগ্য হাদীস ও রেওয়ায়েতগুলোই শুধু এনেছি যাতে করে পাঠকদের ইতিহাস,হাদীস ও কালামশাস্ত্রের উদ্ধৃত গ্রন্থগুলোর প্রতি রুজু করার তেমন কোন প্রয়োজন না হয়। যুক্তি উপস্থাপনের ক্ষেত্রে আমি ভারসাম্য ও সত্যপরায়ণতার প্রতি লক্ষ্য রেখেছি। এতে পাঠকরা প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত গ্রন্থটি অধ্যয়নে উক্ত লক্ষ্যে অগ্রসর হবেন। আমার এ গ্রন্থ সত্যাকাঙ্ক্ষী ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির হাতে সমর্পিত হোক আল্লাহর নিকট এ আশা করছি।
আলহামদুলিল্লাহ্,এ গ্রন্থ প্রকাশিত হওয়ায় স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি। এজন্য আমি আমার নিজ জীবনের প্রতি সন্তুষ্ট। কারণ এ কর্মের মাধ্যমে আমার সারা জীবনে যে কষ্ট করেছি,যে দুঃখভার সহ্য করেছি তা ভুলে গিয়েছি বলে আমার বিশ্বাস। শত্রুদের ষড়যন্ত্র,অপচেষ্টার অভিযোগ আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো নিকট উপস্থাপন করবো না। তিনি বিচারক হিসেবে যথেষ্ট। সর্বোপরি দোয়া করছি মহান আল্লাহ্ বিপদাপদের সকল পরীক্ষায় আমাকে উত্তীর্ণ ও আমার অন্তর হতে সকল অন্ধকার দূরীভূত করুন,এই গ্রন্থকে দুনিয়া ও আখেরাতে আমার মুক্তির মাধ্যম (উসিলা) করে দিন,আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করুন ও আমার অন্তরে প্রশান্তি দিন। তাঁর নিকট আশা করছি আমার কর্মকাণ্ডকে কবুল করুন ও একে মুমিনদের হেদায়েতের উপকরণ বানিয়ে দিন।
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।
নিবেদক
সাইয়্যেদ আবদুল হুসাইন শারাফুদ্দীন আল মুসাভী