ইরানে ইসলামি বিপ্লবের ৪০তম বিজয় বার্ষিকীর র্যালিতে বিপুল সংখ্যক জনতার অংশগ্রহণ সারা বিশ্বকে বিস্মিত করেছে। এবারের বিজয় র্যালিতে সব দল ও মতের মানুষের অংশগ্রহণ ইসলামি বিপ্লবের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিবসে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। এবারের ইসলামি বিপ্লব বিজয় বার্ষিকীর শোভা যাত্রায়ও অংশ নিয়ে ইরানের জনগণ নানা শ্লোগানের মাধ্যমে ইসলামি বিপ্লবের আদর্শের প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করেছেন। মার্কিন কর্মকর্তাদের জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগণের বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও শ্লোগান থেকে বোঝা যায় তারা শত্রুকে চিনতে পেরেছে এবং যে কোনো হুমকির উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত।
প্রকৃতপক্ষে, ইরানের জনগণ দৃঢ় ও ঐক্যবদ্ধভাবে এ পর্যন্ত আমেরিকা ও তার মিত্রদের সব ষড়যন্ত্র ও বাধা মোকাবেলা করে এসেছে এবং আগামীতেও বিজয়ের এ ধারা অব্যাহত রাখবে। এবারের বিজয় বার্ষিকীর শোভা যাত্রায় জনগণের ব্যাপক উপস্থিতি প্রমাণ করে ইরানি জাতি নিষেধাজ্ঞার কারণে নানা সংকটে জর্জরিত হলেও কখনোই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির কাছে মাথা নত করবে না এবং সব ক্ষেত্রে শত্রুকে পরাস্ত করবে।
লেবাননের পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান হাশেম জাবের ইরানের ইসলামি শাসন ব্যবস্থার শক্তিমত্বা তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন, বিপ্লব বিজয়ের ৪০ বছর পর ইরানের ইসলামি শাসন ব্যবস্থা আরো বেশী প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। প্রথম থেকেই ইরান শত্রুর ষড়যন্ত্র, চাপ ও নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন। কিন্তু তারপরও ইসলামি বিপ্লব টিকে আছে এবং এটি এখন আঞ্চলিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিবসে ইরানের জনগণের উপস্থিতি ও ঐক্যবদ্ধ অবস্থান স্বাধীনতা, সম্মান ও গৌরব বয়ে এনেছে। আর এ কারণেই ইরান বৃহৎ শক্তিগুলোর ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে। এমনকি শত্রুরাও এ কথা স্বীকার করেছে। নিউইয়র্কের একটি তথ্য গবেষণা কেন্দ্র "অনমনীয় ইরানের ইসলামি বিপ্লব" শীর্ষক এক প্রতিবেদনে লিখেছে, "এমন এক সময় ইরানে ইসলামি বিপ্লবের ৪০তম বিজয় বার্ষিকী পালিত হল যখন পশ্চিম এশিয়ায় ইরানের প্রভাব, গ্রহণযোগ্যতা ও শক্তিমত্বা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এ ছাড়া, মার্কিন নিষেধাজ্ঞাও ইরানকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কোণঠাসা করতে পারেনি।"
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিপ্লব বিজয়ের পর গত ৪০ বছর ধরে শত্রুদের ব্যাপক ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার সত্বেও ইরান সম্মান ও গৌরবের সাথে টিকে আছে এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে শত্রুরা পরাজিত হয়েছে। এবারের শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে ইরানের জনগণ দেখিয়ে দিয়েছে আমেরিকার বলদর্পিতার কাছে তারা কখনোই মাথা নত করবে না এবং শত্রুকে হতাশ করবে। এটিই ইরানের জনগণের পক্ষ থেকে সারা বিশ্বের জন্য বিশেষ বার্তা।