বাঙ্গালী
Friday 22nd of November 2024
0
نفر 0

যদি আল-মাজেদ জীবিত থাকতেন...

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা আবনার রিপোর্ট : কিছুদিন পূর্বে আল-কায়েদার সহযোগী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ‘আব্দুল্লাহ আজ্জাম ব্রিগেডে’র সৌদি নেতা মাজেদ আল-মাজেদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে লেবানন সামরিক বাহিনী। লেবাননের কাছ থেকে মাজেদকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য সৌদি আরবের আপ্রাণ চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর লেবাননের একটি সামরিক হাসপাতালে তার মৃত্যুর সংবাদ সৌদি গণমাধ্যমেই প্রচারিত হয়। তিনি কিডনী সংক্রান্ত রোগ ডিয়ালিসিস-এ আক্রান্ত ছিলেন।

এমন অনেক চিহ্ন রয়েছে যা হতে প্রমাণ হয় যে, সৌদি আরবের অনেক সরকারি কর্মকর্তার সাথে সরাসরি যোগাযোগ ছিল আল-মাজেদে’র। লেবানন ও সিরিয়ায় যুদ্ধরত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানের একটি অংশের দায়িত্ব ছিল সৌদি এ সন্ত্রাসীর হাতে।

গতকালের আফগানিস্তান থেকে শুরু করে আজকের পাকিস্তান, সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামি সরকার গঠনের নামে তত্পর সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রায় সবকটির নেতৃত্ব রয়েছে সৌদি সন্ত্রাসীদের হাতে।

আব্দুল্লাহ আজ্জাম ব্রিগেডের কথাই ধরা যাক, আল-মাজেদের পূর্বে আরো দু’জন সৌদি নাগরিক সন্ত্রাসী এ সংগঠনটির নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ বিষয়টি কেউ অস্বীকার করেনি যে, এ ধরনের সন্ত্রাসী দলের পেছনে ব্যয়ের জন্য মোটা অংকের অর্থের যোগান একমাত্র তেলের টাকা ব্যতীত পূরণ করা সম্ভব নয়।

এ পর্যন্ত কেউই এ প্রশ্নের উত্তর দেয়নি যে, কেন তাকফিরীরা তাদের জন্মভূমি হতে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে এসে তাদের কথিত ইসলামি বিধান জারী করার লক্ষ্যে মানুষ হত্যা করে?! কেন তারা এ পবিত্র বিষয়টি বাস্তবায়নের জন্য তাদের নিজেদের জন্মভূমিকে বেছে নেয় না? কেন বিন লাদেন ইসলামি সরকার গঠনের জন্য আফগানিস্তানকে বেছে নিয়েছিলেন এবং অন্যরা ইরাক ও সিরিয়াকে বেছে নিয়েছেন?

সত্য কথা হল, উগ্রতা মনোভাবী এ ধরনের ব্যক্তিদেরকে তাদের মাতৃভূমি হতে দূরে রাখা এবং সন্ত্রাসীদেরকে সীমান্তের বাইরে বের করে দেয়ার বিষয় যে স্বয়ং সরকারি পরিকল্পনার আওতাভূক্ত তা অনস্বীকারযোগ্য এক সত্য।

বৈরুতে অবস্থিত ইসলামি ইরানের দূতাবাসে হামলাকারী সন্ত্রাসী দলের নেতার মৃত্যু সংবাদ প্রচারিত হওয়ার পূর্বে ঐ সন্ত্রাসীকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ৩ বিলিয়ন ডলার ঘুষ দানের জন্য সৌদি আরবের প্রস্তাবের কথা প্রকাশ করে বোমা ফাটিয়েছিল গণমাধ্যম।

আল-মাজেদকে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে সৌদি আরবের ব্যর্থতার একটি অংশ স্বয়ং লেবানন সামরিক বাহিনী’র আত্মমর্যাদার সাথে সম্পৃক্ত। যদি আল-মাজেদের অপরাধ শুধু বৈরুতে ইরানি দূতাবাসে হামলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতো তবে হয়তবা সৌদি আরব কর্তৃক প্রস্তাবিত ৩ বিলিয়ন ডলার ঘুষের প্রস্তাবটি কার্যকর ছিল। কিন্তু চিহ্নিত এ সন্ত্রাসী বহুবার লেবানন সেনাবাহিনী’র বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। অতএব, তাকে বাঁচিয়ে রাখার বিষয়ে কোন প্রকারের গড়িমসি অথবা তাকে সৌদি আরবে নিকট হস্তান্তরের বিষয়টি প্রকৃত অর্থে লেবাননের জাতীয় ভাবমূর্তিতে আঘাত হানতো এবং লেবানন সেনাবাহিনী’র ক্ষমতাও হত প্রশ্নবিদ্ধ। এ কারণেই ঘটনার সমাপ্তি –যেভাবে উল্লেখ হয়েছে- সন্ত্রাসবাদের প্রকৃত মদতদাতাদের মুখোশ উন্মোচনের পূর্বেই ঘটেছে। পাশাপাশি সত্য ব্যতীত সকল পক্ষই এতে লাভবান হয়েছে।

আল-মাজেদকে বহনকারী গাড়ীতে লেবাননীয় সেনাদের হামলায় অপর এক সৌদি নাগরিক গ্রেফতার হয়, যার নিকট সিরিয়ার জাল পাসপোর্টও ছিল বলে জানা গেছে। গণমাধ্যমের সম্ভাবনার ভিত্তিতে ঐ ব্যক্তি সৌদি গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান বান্দার বিন সুলতানের পুত্র। এ সত্ত্বেও কেউ ঐ ব্যক্তির প্রকৃত পরিচয় তুলে ধরেনি। আর যদি গণমাধ্যমের খবর সঠিক হয়ে থাকে তবে কখনই কেউ এ রহস্য সম্পর্কে জানতে পারবে না।

বর্তমানে সিরিয়া, লেবানন ও ইরাকে তত্পর সন্ত্রাসীদের প্রকৃত ইন্ধনদাতাদেরকে বাধা দিতে এর বিরুদ্ধে দৃঢ় সংকল্প প্রয়োজন।

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

হোসাইনি দালানে আয়াতুল্লাহ ...
হযরত আলীর (আ.) প্রতি বিশ্বনবী (সা.)এর ...
বেকার সমস্যা আমেরিকায় চীন কীভাবে ...
'অটিস্টিক শিশু সমস্যা নয়, প্রয়োজন ...
পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে ...
পাকিস্তানের একটি কাপড়ের হাটে ...
হিন্দু ও মুসলিমের মধ্যে বিয়ে কি ...
যদি আল-মাজেদ জীবিত থাকতেন...
বিশ্ব কুদস দিবস পালন: ইহুদিবাদী ...
ধৈর্য ও সহনশীলতা

 
user comment