মহানবী (স.) এর ব্যক্তিত্ব রক্ষায় মিছিল করা হারাম!
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি এর অবমাননার পর সারা বিশ্বে যখন সমালোচনা ও তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে তখন আলুশ শেইখ এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছিলেন : ‘ক্রোধ ও বিক্ষোভ ছাড়াই এ বিষয়টির সমাধান করা উচিত’।
সৌদি এ মুফতি আরো বলেন, মহানবী (স.) এর অবমাননায় নির্মিত চলচ্চিত্র প্রকাশে তাঁর এবং ইসলাম ধর্মের কোন ক্ষতি হয় না। অথচ মুসলমানদের বিক্ষোভে কিছু কিছু মুসলিম দেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশের দূতাবাসগুলোর ক্ষতিসাধন হয়েছে।
তিনি আরো বলেন : নিরাপরাধ মানুষের উপর হামলা চালানো এবং তাদের সম্পদে অগ্নিসংযোগ করা ও বিনষ্ট করা উচিত নয়।
* যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়া হারাম!
যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদে ‘শেইখ আব্দুল আযিয বিন আব্দুল্লাহ আলুশ শেইখ’ সৌদি আরবের স্যান্ডি ঝড়ের পর বলেছিলেন : প্রাকৃতিক এ দূর্যোগ হতে মুসলমানদের শিক্ষা নেয়া উচিত যে, সকলের বিরুদ্ধে দোয়া করা উচিত নয়, কেননা তাদের মাঝে মুসলমানরাও রয়েছে এবং এ দোয়া মুসলমানদের স্বার্থসিদ্ধ নয়।
* ফিলিস্তিন ও গাজার জনগণের সমর্থনে মিছিল করা নিষিদ্ধ!
শেইখ আব্দুল আযিয তার অপর এক উদ্ভট ফতওয়াতে, ফিলিস্তিন ও গাজার অবরুদ্ধ মুসলমানদের সমর্থন ও তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণায় মিছিলের পদক্ষেপকে একটি বিতর্কিত পদক্ষেপ এবং বৃথা ও গোলযোগ সৃষ্টিকারী বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।
* নারী কর্তৃক নারীদের অন্তর্বাস বিক্রয় করা হারাম!
সৌদি আরবের কর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে আলুশ শেইখ নারীদের বিশেষ পোশাক বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে নারীদের কাজ করার বিষয়ে অভিযোগ তোলেন।
তিনি তার আশ্চার্যজনক এ ফতওয়ার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন : নারীরা হচ্ছে আমাদের নিকট আমানত স্বরূপ, আর এ কারণেই তাদের জন্য নির্ধারিত কর্ম ছাড়া অন্য কোন কাজে তাদেরকে ব্যবহার করা যাবে না।
* সকল ইসলামি নিদর্শন ভেঙ্গে ফেল এবং প্রাচীন নিদর্শনগুলো রক্ষা কর!
আলুশ শেইখ চলতি বছরের শুরুর দিকে ঘোষণা করেছিলেন : যে সকল বস্তু! হারামাইন শারিফাইনের চতুর্পাশে রয়েছে সেগুলোকে ভেঙ্গে ফেলাতে কোন সমস্যা তো নেই-ই বরং হারামাইনের সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এ কাজ করা আবশ্যক।
তিনি বলেন : মসজিদুল হারামের আশেপাশের প্রাচীন (ইসলামী) নিদর্শন ভেঙ্গে দেয়া অন্যতম সত কাজ, সরকার যা করার উদ্যোগ নিয়েছে এবং এটি আবশ্যক কর্মসমূহের অন্যতম।
অথচ সৌদি আরবের অন্যতম প্রখ্যাত মুফতি ‘আব্দুল্লাহ বিন সুলাইমান আল-মুনী’ মদিনা মুনাওয়ারার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত ‘মাদায়েন-এ সালেহ’ এলাকায় অবস্থিত একটি প্রাচীন নিদর্শন পরিদর্শনের সময় প্রাচীন নিদর্শনসমূহকে বিগত সভ্যতাসমূহের নিদর্শন এবং বর্তমান যুগের জনগণের জন্য শিক্ষা হিসেবে আখ্যায়িত করে এ নিদর্শন হতে শিক্ষা গ্রহণের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। কিন্তু আলুশ শেইখ কখনই এ ফতওয়ার বিরোধীতা করেননি বা এর নিন্দা জানাননি।
* শিয়াদের উপর হামলা!
তিনি মার্চ মাসে রিয়াদে অবস্থিত তুরকী বিন আব্দুল্লাহ্ মসজিদে প্রদত্ত জুমআর খোতবায় শিয়াদের বিরুদ্ধে মোকাবিলার জন্য সকল মুসলিম উম্মাহ’র প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন : এ মাযহাব, মুসলমানদের আকিদাকে তাদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে!
আব্দুল আযিয আলুশ শেইখের প্রতি আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজী’র খোলা চিঠি
গত বছর এপ্রিল মাসে আলুশ শেইখ কর্তৃক শিয়াদের ওপর বিভিন্ন ভাবে আক্রমণের পর আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজী, আলুশ শেইখের বরাবর একটি খোলা চিঠিতে লিখেছিলেন : শিয়াদের বিরুদ্ধে আরোপিত মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অন্যায় অপবাদ এবং শিয়াদেরকে কাফের আখ্যায়িত করে আপনি মূলতঃ ইসলামের শত্রুদের –বিশেষতঃ আমেরিকা ও ইসরাইলের- সেবা করেছেন।
আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজীর ঐ চিঠিতে উল্লেখিত হয়েছিল : আপনি সম্প্রতি এক বক্তব্যে অত্যন্ত অবমাননাকর ও অশ্লীল ভাষায় –যা জ্ঞানী ব্যক্তির জন্য শোভনীয় নয়- বিশ্বের শিয়াদেরকে ‘সাফাভিয়া মাজুস’ ও মুসলমানদের শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং মুসলমানদেরকে শিয়াদের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন।
ওয়াহাবী আলেমদের পক্ষ হতে অযৌক্তিক ও অন্যায় অপবাদ আরোপের ঘটনা আমরা এই প্রথম শুনছি না, যার মাধ্যমে বিভেদ ও বিচ্ছেদের বীজ বপন করা হচ্ছে এবং শত্রুরা হচ্ছে আনন্দিত। ইমাম মাহদী (আ.) এর ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য আপনি করেছেন, পাশাপাশি শিয়াদের ইমাম যামানা (আ.) এর উপর বিশ্বাস রাখাকে আপনি অপছন্দনীয় কর্ম বলে আখ্যায়িত করেছেন, যা নতুন কিছু নয়। আর এ সকল বিষয় হতে স্পষ্ট হয় যে, ওয়াহাবী মুফতিরা যুক্তিযুক্ত আলোচনা হতে পলায়ন করে সর্বদা অবমাননার পথ বেছে নেয়।
তিনি ঐ চিঠিতে আরো লিখেছেন : এ পর্যায়ে কয়েকটি বিষয় আপনার উদ্দেশ্যে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই :
(১) আপনার মত এমন গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিত্ব থেকে এ ধ