পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সৌদি আরবের পক্ষ থেকে এ ধরণের ইরান বিরোধী তৎপরতার বহু নজির রয়েছে কিন্তু সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে সৌদি আরবের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে ইরান ও পাকিস্তানের সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করা।
আবনা ডেস্কঃ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আজ ইরান সফরে এসেছেন। প্রথমে তিনি মাশহাদে অষ্টম ইমাম রেজা (আ.)এর মাজার জিয়ারতে যান এবং এরপর তেহরানে আসেন।
পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেদেশের অর্থমন্ত্রণালয়, মানবাধিকার ও নৌ চলাচল বিভাগের কর্মকর্তারা, প্রাদেশিক সমন্বয় বিষয়ক মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর ব্যবসায়ীক উপদেষ্টারা এবং সরকারের আরো কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তা এ সফরে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ইরান ও পাকিস্তানের যৌথ বাণিজ্য কমিটির বৈঠকে অংশ নেবেন বলে কথা রয়েছে। দু'দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক এই সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। অর্থনৈতিক বিষয় ছাড়াও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় পারস্পরিক সহযোগিতা বিস্তার, অভিন্ন সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার বিশেষ করে সীমান্তে সন্ত্রাসীদের তৎপরতারোধের উপায় নিয়ে দু'দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা হবে।
এদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ইমরান খানের তেহরান সফরের আগে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ ও পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি এক টেলিফোন সংলাপে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে সীমান্তে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার বিষয়ে আলোচনা করেন।
যাইহোক, তথ্য বিনিময়, সীমান্তে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা করা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য ইরান ও পাকিস্তান সমঝোতায় পৌঁছেছে। প্রায় দুই বছর আগে পাকিস্তানের সেনা প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া ইরান সফরে আসেন এবং এর পরপরই ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরি পাকিস্তান সফরে যান যা নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইরানের সেনা প্রধান বলেন, হুমকি মোকাবেলায় ইরানের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে এবং আমরা মনে করি নিরাপত্তা রক্ষার সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে, এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং বিরাজমান সুযোগ সুবিধাগুলোকে কাজে লাগানো।
সন্ত্রাসীরা এ পর্যন্ত একাধিকবার পাকিস্তান ভূখণ্ড ব্যবহার করে ইরানে হামলা চালিয়ে সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর সদস্যদেরকে হত্যা করেছে। এ কারণে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ে তোলা জরুরি হয়ে পড়েছে। ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক হেসাম কিয়ান মোকাদ্দাম এ ব্যাপারে বলেন, পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ইরান সফরের তারিখ ঘোষণার পর থেকে সৌদি আরবের সমর্থনপুষ্ট উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সৌদি আরবের পক্ষ থেকে এ ধরণের ইরান বিরোধী তৎপরতার বহু নজির রয়েছে কিন্তু সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে সৌদি আরবের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে ইরান ও পাকিস্তানের সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করা। বাস্তবতা হচ্ছে, প্রতিবেশী ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সুসম্পর্ক বজায় রয়েছে এবং আঞ্চলিক যেকোনো সমস্যা সমাধানে দু'দেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। #