আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
কাল হজ্ব¡ ফ্লাইট শুরু ॥ প্রথম দিনই সিট খালি যাওয়ার আশংকাসংগ্রাম রিপোর্ট : আগামীকাল বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে ২০১৪ সালের হজ্ব¡ পালনকারীদের প্রথম ফ্লাইট। আর এ জন্য আজ মঙ্গলবার আশকোনাস্থ হজ্ব ক্যাম্পে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হজ্ব ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন। গতকাল সোমবার পর্যন্ত প্রথম দিনের ফ্লাইট বুকিং তথ্য অনুযায়ী প্রথম দিনের একটি ফ্লাইটে কিছুসংখ্যক সিট খালি যাওয়ার আশংকা রয়েছে। তবে আজকের মধ্যে এসব সিট বুকিং হলে এ আশংকা থাকবে না।
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার সকল হজ্বযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনার প্রায় ৩ হাজারের মতো হজ্বযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম দিন তথা ২৭ আগস্ট বাংলাদেশ বিমানের ৪টি হজ্ব ফ্লাইট জেদ্দার উদ্দেশ্যে গমন করবে। এ চারটি ফ্লাইটের প্রথম দু‘টি তথা সকাল ৭টা ৫ মিনিটে ও দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে দু‘টি ফ্লাইটে ৪১৯ জন করে ৮৩৮ জন সরকারি ব্যবস্থপনার হজ্বযাত্রী গমন করবেন। আর সেদিনের বাকী দু‘টি ফ্লাইটে ৭শ‘র কিছু বেশী বেসরকারি হজ্বযাত্রীরা গমন করবেন। দু‘টি ফ্লাইটে ৮৩৮ জন যাত্রীর ক্যাপাসিটি থাকলেও গতকাল পর্যন্ত তা পূর্ণ হয়নি। তবে আজকের মধ্যে সবক‘টি সিট বুকিং না হলে কিছু সংখ্যক সিট খালি যাওয়ার আশংকা রয়েছে। হজ্ব অফিসের আইটি বিভাগ জানিয়েছে, তাদের কাছে সরকারি হজ্বযাত্রীরা যাওয়ার তথ্য আছে, বেসরকারি হজ্বযাত্রীদের যাওয়ার তথ্য নেই। এবারের হজ্বযাত্রীদের ভিসার আবেদনসহ প্রায় সকল কাজেই নতুন পদ্ধতি এসেছে। এ জন্য হজ্ব অফিস থেকে বিশেষ নির্দেশনা জারি করা হচ্ছে। এদিকে আজ মঙ্গলবার বিকেলে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা আশকোনাস্থ হজ্ব ক্যাম্পে হজ্ব ফ্লাইটের উদ্বোধন করবেন।
সূত্র মতে, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ৯৮ হাজার ৭৬২ জন হজ্বযাত্রী পবিত্র হজ্ব পালন করতে সৌদি আরব যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় এক হাজার ৪৯৭ জন, তাদের জন্য ৩৭ জন গাইডও যাচ্ছেন। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৩৫টি এজেন্সী হজ্ব কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে। তাদের মাধ্যমে যাচ্ছেন ৯৭ হাজার ২৬৫ জন। আগামী ২৭ আগস্ট থেকে হজ্ব ফ্লাইট শুরু হচ্ছে, আর তা চলবে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আর ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ৮ অক্টোবর, শেষ হবে ৭ নবেম্বর। আর ১লা সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্সের হজ্ব ফ্লাইট। শেষ হবে ৩০ সেপ্টেম্বর।
এ বিষয়ে ধর্মমন্ত্রণালয়ের উপসচিব (হজ্ব) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রথম দিনে (২৭ আগস্ট) ৪টি ফ্লাইট যাবে। প্রত্যেকটি ফ্লাইটে ৪১৯ জন করে যাত্রী যাবে। তার মধ্যে প্রথম দু‘টি ফ্লাইটে সরকারি ব্যবস্থপনার হজ্বযাত্রীরা যাবেন। আর বাকী দু‘টি ফ্লাইটে বেসরকারি ব্যবস্থপনার হজ্বযাত্রীরা যাবেন। এখন আর কোনো সমস্যা নেই। বেসরকারি হজ্বযাত্রীদের ভিসার কার্যক্রম পুরোদমে চলছে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে হজ্ব এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল কবির খান জামানা জানান, ভিসা ইস্যু হচ্ছে। ফ্লাইট বিপর্যয় হবে না। এজেন্সীগুলো ফ্লাইট বুকিং দিচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ২৮শর মতো ভিসা ইস্যু হয়েছে। প্রথম দিনের (২৭ আগস্ট) ফ্লাইটে ৭শ‘র কিছু বেশি বেসরকারি হজ্বযাত্রী যাচ্ছেন। আর ২৮ ও ২৯ তারিখও বুকিং হয়েছে।
হাব মহাসচিব শেখ আব্দুল্লাহ বলেন, ভিসা ইস্যু শুরু হয়েছে। প্রথম দিন থেকেই হাবের হজ্বযাত্রীরা যাচ্ছেন। এজেন্সীগুলো সৌদি আরব থেকে বাড়িভাড়া করে দেশে ফিরে আসছেন।
জেদ্দা বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল (হজ্ব) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ্ব পালন করতে ইচ্ছুকদের ভিসা ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ্বে আসতে আগ্রীদের ভিসা প্রক্রিয়াকরণও শুরু হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ বছর বাংলাদেশি হাজিদের জেদ্দা, মক্কা ও মদীনায় সহযোগিতা করার জন্য প্রশাসনিক, আইটি ও একটি মেডিকেল টিম মঙ্গলবার জেদ্দায় পৌঁছাবেন।
তিনি বলেন, মেডিকেল টিমে রয়েছেন ১৮০ জন, প্রশাসনিক টিমে ৩৫ জন এবং আইটি টিমে রয়েছেন ২০ জন সদস্য। তারা মঙ্গলবার থেকে হজ্বের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ না হওয়া পর্যন্ত জেদ্দা, মক্কা, মদীনা, মিনা ও তায়েফে অবস্থান করবেন।
ভিসা আবেদনের নতুন নিয়ম
এবার হজ্বযাত্রীদের জন্য ভিসার আবেদনের পদ্ধতির পরিবর্তন হয়েছে। হজ্ব অফিসের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, প্রথম ধাপ: সৌদি ওয়েব সাইটের ভিসাফর্ম পূরণ করতে হবে, তারপর তা ড্রাফটভাবে সেইভ করতে হবে, তারপর পাসপোর্টের ভিসা ট্রাকিং নাম্বারসহ তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। দ্বিতীয় ধাপ: ঢাকা হজ্জ অফিসের এমআরপি ভিসা লজমেন্ট সেন্টারে প্রবেশ করতে হবে। সেখানে ভিসা ট্রাকিং নাম্বারের তালিকার সাহায্যে পূর্বের পূরণকৃত ভিসাফর্ম ওপেন করা, এম আর জেড মেশিনের মাধ্যমে ভিসাফর্ম পূরণ সমাপ্ত ও ভিসা আবেদন সম্পন্ন করা। তৃতীয় ধাপ: হজ্ব এজেন্সী অফিস: পূর্ববর্তী বছরের ন্যায় হজ্ব পরিচালক, ঢাকা হজ্ব অফিসের নিকট ভিসা আবেদনসহ লজমেন্টকৃত পাসপোর্ট ও অন্যান্য কাগজপত্র জমা দেয়া। চতুর্থ ধাপ: এজেন্সী কর্তৃক জমাকৃত ভিসার আবেদন, ব্যাংক তালিকা ও পুলিশ প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করা ও তাদের ভিসার ডিও সৌদি এম্বেসীতে প্রেরণ করা, ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দেয়া ও ভিসার পর তা ফেরত আনা।
পাসপোর্টে বাসের টিকেট
এ বছর নতুন নিয়মে সকল হজ্ব এসেন্সির হজ্বযাত্রীদের সৌদি আরবে বাস ভ্রমণের জন্য বাসের টিকেট এবং স্টীকার স্ব-স্ব দেশ হতে পাসপোর্টে সংযুক্ত করতে হবে। কোনো হজ্বযাত্রী স্টীকার এবং বাসের টিকেট ব্যতীত অবতরণ করলে নগদ মূল্য পরিশোধ করে স্টীকার ও বাসের টিকেট সংগ্রহ করতে হবে। এ সংক্রান্ত হজ্ব অফিসের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, পাসপোর্টের সর্বশেষ এনড্রোসমেন্টের পূর্বের পৃষ্ঠায় বাসের টিকিটি লাগাতে হবে। টিকিট লাগানের ক্ষেত্রে টিকিট এর সর্বশেষ পৃষ্ঠার স্টিকার খুলে টিকিট লাগাতে হবে। কোনো অবস্থাতে পাসপোর্টের উপরের বা শেষের পাতায় অথবা মধ্যবর্তী কোনো পৃষ্ঠায় টিকিট লাগানো যাবে না।