কথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএসের হাতে আটক কিংবা তাদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার আগে মরে যেতে চান ইরাকের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর আমেরলির অধিবাসীরা জানিয়েছেন, তারা নিজেদের কবর খুড়ে রেখেছেন। যদি আইএস সন্ত্রাসীরা ওই শহরটির দখল নিয়ে নেয়, তাহলে নিজেরদের স্ত্রী ও বাচ্চাদের মেরে ফেলবেন তারা। আলজাজিরা
গত দুই মাস ধরে ওই শহরটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে কথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএসের সদস্যরা। শনিবার ইরাকি সেনা ও শিয়া যোদ্ধারা যৌথভাবে এ অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি।
ওই শহরের এক বাসিন্দা আলজাজিরাকে জানান, আইএসের হাতে ধরা পড়ার চেয়ে তারা আত্মহত্যা করবেন।
মেহেদী (ছদ্মনাম) নামে এক সরকারি চাকরিজীবী বলেন, আমরা তিন-চার বাড়ি মিলে একেকটি কবর খুড়ে রেখেছি। যদি আইএস শহরে ঢুকে পড়ে তাহলে আমরা স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করে নিজেরা আত্মহত্যা করবো।
মেহেদী আরো বলেন- আমাদের স্ত্রীরাও এ বিষয়ে রাজি হয়েছেন। কারণ তারা আইএসের হাতে মরতে চান না।
ফাতিমা কাসিম নামে এক বিউটি পার্লারের মালিক জানান, সেখানকার সব নারীরা আত্মহত্যা করবেন।
ফাতিমা জানান তার ভাই শহরটি রক্ষার্থে আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। তিনি তার স্ত্রী ও ৬ সন্তানকে নিজের কাছে রেখেছেন। এছাড়া রাইফেলে ৮টি গুলি ভরে রাখা হয়েছে। যদি আইএস শহরের দখল নিয়ে নেয়, তাহলে সন্তানদেরকে একেরপর এক হত্যা করবেন তিনি। তারপর স্ত্রীকে মেরে আত্মহত্যা করবেন।
হেলিকপ্টারে ইরাকি আর্মির উদ্ধার অভিযানের পরও আমেরলিতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ দুই মাস ধরে অবরুদ্ধ আছেন। সেখানে খাদ্য ও পানীয়ের সংকট দেখা দিয়েছে।
জাতিসঙ্ঘ বলছে আমেরলির পরিস্থিতি ভয়াবহ। সেখানকার প্রায় ৪০টি গ্রাম আইএস দখল করে নিয়েছে। শহরটি রক্ষায় পরিখা খনন করে অস্ত্র হাতে পাহারা দিচ্ছেন সেখানকার অধিবাসীরা। এখনই কোনো ব্যবস্থা নেয়া না হলে সেখানে ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা ঘটতে পারে।
এদিকে আমেরলির অধিবাসীদের উদ্ধারে আইএসের অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে মার্কিন জেট বিমান। এছাড়া আটকে পড়াদের জন্য খাদ্য ও পানীয়সহ মানবিক সাহায্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে বিমানযোগে।