আবনা : লেবাননের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব বেসাম হাশিম পশ্চিমা তরুণ সমাজের কাছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার পাঠানো সাম্প্রতিক বাণীর প্রশংসা করে বলেছেন, এই বাণী বিশ্বের কাছে খাঁটি ইসলামী সভ্যতা তুলে ধরেছে।
লেবাননের জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় এই নেতা বলেছেন, বিশ্ব এখন সন্ত্রাসবাদ ও তাকফিরি চিন্তাধারার সম্মুখীন; এ অবস্থায় আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী আসল বা খাঁটি ইসলামকে জানার জন্য যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বলে আমাদের উচিত তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া।
বেসাম হাশিম আরো বলেছেন, ইরান ইসলামের যে আদর্শ তুলে ধরেছে তা পছন্দনীয় এবং ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ইসলামকে মানুষের প্রিয় ধর্ম হিসেবে তুলে ধরেছেন।
লেবাননের এই ব্যক্তিত্ব বলেন, আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী মুসলিম ও খ্রিস্টান ধর্ম নির্বিশেষে বিশ্বের যুব সমাজের সবার প্রতি আস্থাশীল এবং তিনি (বাস্তবতা ও ইসলাম সম্পর্কে জানতে) খ্রিস্টান যুব সমাজকে উৎসাহ দিয়েছেন যাতে তারা ওই বাণীকে মনে-প্রাণে তথা আন্তরিক-চিত্তে বরণ করে নেয়।
তিনি ফিলিস্তিনি জাতির আদর্শ ও বিশ্বের মজলুমদের প্রতি সমর্থনের নীতিসহ ইরানের মধ্যপ্রাচ্য নীতির এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার নীতিকে নজিরবিহীন বলে প্রশংসা করেছেন।
গত ২১ জানুয়ারি (২০১৫) বিশ্বের সংবাদ ও গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হয় পশ্চিমা যুব সমাজের কাছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ঐতিহাসিক বাণী। অনন্য এই বাণী বিশ্বব্যাপী যুক্তিবাদী ও চিন্তাশীল মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। প্যারিসে শার্লি এবদো নামের একটি রম্য-পত্রিকার অফিসে রহস্যজনক হামলার অজুহাতে ওই পত্রিকায় মহানবী (সা.)'র প্রতি একটি অবমাননাকর কার্টুন প্রকাশের পটভূমিতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা এই বাণী পাঠান।
তিনি বলেছেন, 'ইসলাম আতঙ্ক' থেকে পালিয়ে না গিয়ে এ ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা উচিত। তিনি আরো বলেছেন, মুসলমানদের ব্যাপারে আতঙ্ক তৈরি করে তা থেকে রাজনৈতিক সুবিধা আদায় পাশ্চাত্যের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য।
ওই বাণীর একাংশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, 'ইউরোপ ও আমেরিকার ইতিহাস দাসপ্রথার জন্য লজ্জিত, তার মাথা হেট হয়ে আছে ঔপনিবেশিক যুগের জন্য। যারা অশ্বেতাঙ্গ ও যারা খ্রিস্টান নয় তাদের ওপর অত্যাচারের জন্য লজ্জিত এই ইতিহাস। ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্টদের মাঝে ধর্মের নামে অথবা প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাতীয়তার নাম করে ঘটানো রক্তপাত নিয়ে তোমাদের গবেষক ও ইতিহাসবিদদের মাথা নত হয়ে আছে।
(লজ্জিত হওয়ার) এই ধারা প্রশংসার যোগ্য বিষয়। এ সংক্রান্ত দীর্ঘ ফিরিস্তির অংশ-বিশেষ পর্যালোচনা করে ইতিহাসের নিন্দা করাও আমার লক্ষ্য নয়। বরং আমি চাই তোমরা তোমাদের বুদ্ধিজীবীদের কাছে এ প্রশ্ন করো যে, কেনো পশ্চিমের জনগণের বিবেক জেগে উঠতে ও সচেতন হতে কয়েক দশক বা কয়েক'শ বছর সময় লাগে? কেনো গণ-বিবেক বা সামষ্টিক বিবেকের পুনর্বিবেচনা কেবল সুদূর অতীতের ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা হয়, কেনো তা বর্তমান যুগের বিষয়গুলো নিয়ে করা হয় না? কেনো ইসলামী চিন্তাধারা ও সংস্কৃতির সঙ্গে আচরণের পদ্ধতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ব্যাপারে গণ-সচেতনতা সৃষ্টিতে বাধা দেয়া হচ্ছে?'
পশ্চিমা প্রচার মাধ্যমগুলো ও ইহুদিবাদীদের নিয়ন্ত্রিত সংবাদ এবং প্রচারযন্ত্রগুলো ইরানের সর্বোচ্চ নেতার এই ঐতিহাসিক বাণীকে নিজেদের ইচ্ছেমত কাটছাঁট করে বা কম গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা এই ঐতিহাসিক বাণীর ব্যাপক প্রচার রুখতে ব্যর্থ হয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতার এই বাণী প্রকাশিত হওয়ার পর মাত্র এক সপ্তাহ'র মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে তা এক কোটি ষাট লাখ বার শেয়ার হয়েছে।#
source : www.abna.ir