আহলে বাইত বার্তা সংস্থা (আবনা) : ইয়েমেনের জনগণের উপর স্বৈরাচারী আলে সৌদের নৃশংস বিমান হামলার প্রতিবাদে লন্ডনে অবস্থিত সৌদি দূতাবাসের সামনে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে লন্ডনে বসবাসরত ইয়েমেনিরা এবং স্থানীয় জনতা।
মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা প্রথমে ‘হাইড পার্কে’র কাছাকাছি ‘মার্বেল আর্চ’-এ সমবেত হয়। এরপর তারা তাদের দাবী পাঠ করার পর লন্ডনে অবস্থিত সৌদি দূতাবাসের দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় তারা স্বৈরাচারী আলে সৌদ ও তাদের পশ্চিমা মিত্রদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান প্রদানের মাধ্যমে ইয়েমেনের অসহায় জনগণের উপর নৃশংস বোমাবর্ষণের তীব্র নিন্দা জানায়। ‘আলে সৌদ ধ্বংস হোক’, ‘বাদশা সালমান ধ্বংস হোক’, ‘সৌদি সৌদি, শরম কর শরম কর’ ইত্যাদি শ্লোগানের মাধ্যমে ইয়েমেনে সামরিক হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবী জানায় বিক্ষোভকারী। এ সময় স্বৈরাচারী আলে সৌদের উদ্দেশ্যে তারা বলেন, ইয়েমেনের কঠোর জবাবের জন্য প্রস্তুত থাকো। ইয়েমেনের সন্তানেরা তাদের নারী, শিশু ও অসহায় মানুষ হত্যার প্রতিশোধ নেবেই নেবে।
বক্তাগণ এ সমাবেশে, সৌদি বিমান হামলার ফলে সৃষ্ট সংকট এবং ইয়েমেনের জনগণের দুর্দশাপূর্ণ অবস্থার বিবরণ তুলে ধরেন।
ইয়েমেনের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে যে, কে তাদের প্রেসিডেন্ট হবে –এ কথা উল্লেখ করে বক্তাদের একজন বলেন : সৌদি আরব দাবী করছে যে, তারা ইয়েমেন সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে সামরিক হস্তক্ষেপ করেছে এবং শুধুমাত্র সামরিক ঘাঁটিগুলো ও সশস্ত্র ব্যক্তিদের উপর হামলা চালাচ্ছে। তাদের কাছে আমাদের প্রশ্ন কোন বৈধ সরকার তোমাদের কাছে এমন আবেদন করেছে?! ইয়েমেন বর্তমানে বৈধ সরকার বিহীন অবস্থায় রয়েছে এবং পূর্বোক্ত প্রেসিডেন্টও পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তোমাদের দাবীর বিপরীতে সকল আন্তর্জাতিক ও মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, সৌদি আরব বেসামরিক টার্গেটে বোমাবর্ষণ করছে। এতে শত শত শিশু, নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ ও যুবক স্কুলে, হাসপাতালে, শরণার্থী শিবিরে ও গণস্থানসমূহে নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে হাজার হাজার লোক। আমরা ইয়েমেনের জনগণ সন্ধি ও শান্তি চাই, যুদ্ধ ও রক্তপাত নয়। আমরা চাই ইয়েমেনের জনগণ নিজেরাই -কারো হস্তক্ষেপ ছাড়া- নিজেদের ভবিষ্যতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
আন্তর্জাতিক সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এক বক্তা বলেন : এটা বিশ্ব সমাজের জন্য সত্যিই লজ্জাজনক যে, ইয়েমেনের নিরীহ মানুষ হত্যাকে তারা নিরবে দর্শকের ভূমিকায় শুধু দেখে যাবে। হাতে হাত রেখে বসে থাকবে এবং যুদ্ধ বন্ধ ও ইয়েমেনের নিরাপরাধ জনগণ রক্ষায় কোন পদক্ষেপ নেবে না।
যতদিন আন্তর্জাতিক সমাজ সৌদি আরবকে এ অত্যাচার ও আগ্রাসন থেকে বিরত রাখতে সচেষ্ট এবং কার্যকরী পদক্ষেপ না নিচ্ছে ততদিন আমরা আমাদের বিক্ষোভ ও সমাবেশ অব্যাহত রাখবো।#