১৩ মে (রেডিও তেহরান): নিখোঁজের দুই মাস পর ভারতের মেঘালয়ে সন্ধান পাওয়া বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ দাবি করেছেন, দুই মাস আগে ঢাকার উত্তরা থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল। অপহরণের পর থেকে আর কিছু মনে করতে পারছেন না বলেও দাবি করেন তিনি।
সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শিলংয়ের গলফ লিংক এলাকায় উদভ্রান্তের মতো ঘুরছিলেন সালাহ উদ্দিন। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা খবর দিলে স্থানীয় পুলিশ গিয়ে আটক করে তাঁকে। সেখান থেকে পুলিশ তাকে মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টারল হেলথ অ্যান্ড নিউরো সয়েন্স (এমআইএমএইচএএনএস) হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসকরা মানসিক কোনো সমস্যা না থাকার কথা জানালে সালাহ উদ্দিনকে অন্য একটি সরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়।
মেঘালয়ের শিলং টাইমস ও নর্থ ওয়েস্ট টুডের অনলাইন সংস্করণে এ খবর প্রকাশ করা হয়েছে। দ্য নর্থ-ইস্ট টুডে পত্রিকায় হাসপাতালে পুলিশের সঙ্গে দাঁড়ানো অবস্থায় সালাহ উদ্দিন আহমেদের একটি ছবিও প্রকাশিত হয়েছে।
ছবিতে দেখা যায়, সাদা পোশাক পরিহিত সালাহ উদ্দিনের গায়ে জড়ানো রয়েছে একটি খয়েরি-সাদা চেক চাদর। তাঁর হাত ধরে রেখেছেন একজন পুলিশ সদস্য। পেছনে দেখা যায় হাসপাতালের একজন নার্সকে।
হাসপাতাল স্থানান্তরের সময় সালাহ উদ্দিন নিজেই বলেন, “হ্যাঁ, আমিই বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন। আমাকে উত্তরা থেকে অচেনা একদল লোক তুলে নিয়েছিল। আমি জানি না, আমি কিভাবে এখানে এলাম। অপহরণের পর থেকে আর কিছুই মনে করতে পারছি না।”
খবরে আরও বলা হয়, সালাহ উদ্দিন আহমেদের শরীর ভালো না থাকায় মেঘালয়ের পুলিশ এখনও তাঁকে ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেনি।
এ ব্যাপারে মেঘালয়ের পূর্ব খাসী পাহাড় পুলিশের সুপারান্টেন্ড এম খারক্রাং নর্থইস্ট টুডেকে বলেন, আমরা তাঁকে আদালতে পাঠিয়ে দিতাম, কিন্তু তার শরীর অসুস্থ হওয়ার কারণে প্রক্রিয়াটি পিছিয়ে দিতে হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে সালাহউদ্দিনের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ।
গত ১০ মার্চ থেকে ‘নিখোঁজ ছিলেন’ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তাঁর পরিবার ও দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে।
তবে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করা হয়নি বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান চেয়ে ১১ মার্চ রাতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গুলশান ও উত্তরা পশ্চিম থানায় যান তাঁর স্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ। তবে কোনো থানাই তাঁর জিডি গ্রহণ করেনি।
সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপি দেন তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদ।
রাজধানীর উত্তরার একটি বাড়ি থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়- এমন অভিযোগ করে থানা পুলিশের পাশাপাশি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন সালাহ উদ্দিনের পরিবার।
১২ মার্চ হাসিনা আহমেদের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে কেন খুঁজে বের করা হবে না এবং রোববার তাঁকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত ২০ এপ্রিল হাইকোর্ট আগামী ছয় মাস সালাহ উদ্দিন আহমদের খোঁজ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেন।#
source : irib.ir