আবনা ডেস্ক : সম্প্রতি বাংলাদেশে শিশুহত্যা বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। সেইসঙ্গে বেড়েছে হত্যা করার কৌশল। পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করা হয়েছে সিলেটের শিশু রাজনকে, খুলনার গ্যারেজ কর্মী শিশু রাজিবকে। চাঁদপুরে জিন তাড়ানোর নামে নির্যাতন করে শিশু হত্যার ঘটনা ঘটেছে, বরগুনায় চোখে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে শিশু রবিউলকে। আর হত্যার পর সুটকেসে ভরে শিশুর লাশ ফেলে যাওয়া হয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এলাকায়। তাছাড়া মাগুরাতে মায়ের পেটেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এক শিশু।
দেশের একটি জাতীয় বাংলা দৈনিক বলছে, গত সাড়ে তিন বছরে ৯৬৮ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত হত্যা করা হয়েছে ১৯১ জনকে। সেইসঙ্গে শিশুহত্যার প্রক্রিয়াও বীভৎস থেকে বীভৎসতর হচ্ছে। এ ধরনের নৃশংস ঘটনার শিকার হচ্ছে মূলত দরিদ্র পরিবারের শিশুরা। আর নির্যাতনকারীরা হচ্ছে প্রভাবশালী।
মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নীতি নৈতিকতার অভাবেই এমন ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, মনোবিজ্ঞানী ড.নজরুল ইসলাম। রেডিও তেহরানকে তিনি বলেন, মানুষের নীতি নৈতিকতার জায়গাগুলোকে আমরা নষ্ঠ করেছি। এ নৈতিকতার শিক্ষা আসে ধর্ম থেকে। ধর্মের মূল বাণী থেকে আমরা দূরে সরে এসেছি। এটাই বর্তমান পরিস্থিতির মূল কারণ। কেননা মানুষকে আইন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা। নিয়ন্ত্রণ করে ধর্মীয় মূল্যবোধ। পরিবারের মাধ্যমে সে মূল্যবোধ গড়ে ওঠে। পরিবার প্রথা ভেঙ্গে যাওয়ায় আস্তে আস্তে সে মূল্যবোধ আমরা হারিয়ে ফেলেছি। আর এতেই বাড়ছে পৈশাচিক কায়দায় শিশু হত্যার ঘটনা।
তিনি আরও বলেন, মানুষের জীবনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙখলা বাহিনীর পদক্ষেপ এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ তৈরি হয়। কিন্তু সে প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমরা নষ্ট করেছি। একদিকে মানবিক মূল্যবোধ, নীতি নৈতিকতা, অপরাধবোধ হারিয়ে ফেলেছে মানুষ। অন্যদিকে, আইনশৃঙখলাবাহিনী বা বিচারবিভাগকেও আমরা নষ্ঠ করেছি। অপরাধ করলে যে শাস্তি পেতেই হবে, এমনটা আর সত্য নয়। আর তাতেই একের পর এক অপরাধ বাড়ছে।
তার মতে, জন্মের পর মানুষকে মানুষ বানাতে হয়। সে কাজটি করে ধর্ম, সমাজ, পরিবার। কিন্তু বর্তমান সে উপাদানগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মানুষ অমানুষ হবেই। আর তাতেই রাজনীতি, অর্থনীতি, বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন সবকিছুতেই এ নীতি নৈতিকতার বড়ই অভাব বলে মনে করেন এ মনোবিজ্ঞানী।#
source : abna