আবনা ডেস্ক : সৌদি আরবের পবিত্র মক্কায় মসজিদ আল হারামে নির্মাণকাজের ক্রেন ভেঙে ১০৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৩৮ জন।
শুক্রবার স্থানীয় সময় মাগরিবের নামাজের কিছুক্ষণ আগে পবিত্র কাবায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। পবিত্র হজের মাত্র দু’সপ্তাহ আগে এ ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল।
দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের কেউ নিহত হবার খবর পাওয়া যায়নি। তবে আহতদের মধ্যে ৪০ জন বাংলাদেশী রয়েছেন। তাদের মধ্যে থেকে ১৩ জন প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপতাল ছেড়েছেন। দুর্ঘটনার পর মসজিদ আল হারাম থেকে তাড়াহুড়ো করে বের হতে গিয়ে মূলত তারা আহত হয়েছেন।
সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আহতদের মধ্যে ছয়জনের বাড়ি শরীয়তপুর বলে জানা গেছে।
বিবিসি, এএফপি ও আলজাজিরাসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, বর্তমানে হজ পালনের জন্য বিশ্বের লাখ লাখ মুসল্লি মক্কা শরিফে অবস্থান করছেন। শুক্রবার জুমার দিনে মসজিদ আল হারাম ছিল লোকে লোকারণ্য। সম্প্রতি মসজিদটির চারপাশে প্রায় চার লাখ বর্গমিটার জায়গা সম্প্রসারণের কাজ চলছিল, যাতে প্রায় ২২ লাখ লোক নামাজ পড়তে পারবেন। বেশ কয়েকটি ক্রেন দিয়ে মসজিদটি বেষ্টিত ছিল।
আলজাজিরার প্রতিবেদক হাসান প্যাটেল জানান, প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে বলেছেন- স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ক্রেনটি মসজিদের তৃতীয় তলায় বিধ্বস্ত হয়।
মাগরিবের নামাজের আধা ঘণ্টা আগে ক্রেনটি ভেঙে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে কয়েক ডজন অ্যাম্বুলেন্স সেখানে আসে। উদ্ধারকর্মীরা হতাহতদের দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নেন।
টিভি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা ছবিতে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে আছে। উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত তাদের সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আহতদের নেয়া হচ্ছে হাসপাতালে। এ সময় সেখানে প্রচণ্ড বৃষ্টি থাকায় উদ্ধার কাজে ব্যাঘাত ঘটে।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, কাবা শরিফ কমপ্লেক্সের সম্প্রসারণ কাজে বড় বড় ক্রেন ব্যবহার করা হচ্ছিল। এ দিন একটি ক্রেনের সামনের অংশ মসজিদ আল হারামের ছাদের একটি অংশে ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনার সময় প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিল। সঙ্গে ছিল ঝড়ো হাওয়া। ঝড়ের কারণেই ক্রেনটি ছিঁড়ে পড়ে থাকতে পারে বলে অনেকের ধারণা।
সৌদি নিউজ এজেন্সি জানায়, শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ মানুষ হজ পালনের জন্য মক্কায় অবস্থান করছিলেন। প্রতি বছর প্রায় ৪০ লাখ মুসলমান হজ পালন করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এ মসজিদে সমবেত হন। যাদের মধ্যে এক লাখের মতো বাংলাদেশীও আছেন।
এদিকে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ জানান, নিহতদের মধ্যে কোনো বাংলাদেশী থাকার খবর আমাদের কাছে নেই। তবে ৪০ বাংলাদেশী আহত হয়েছেন, তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি জানান, আহতদের মধ্যে তিনজনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। আইসিইউতে রাখা তিনজনের মধ্যে একজনের নাম চান মিয়া বলে জানা গেছে। তবে বিস্তারিত পরিচয় জানাতে পারেননি গোলাম মসীহ।
এদিকে আহতদের মধ্যে ছয়জনের বাড়ি শরীয়তপুর বলে জানা গেছে। এ ছাড়া আহত ১৩ বাংলাদেশী প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
দুর্ঘটনার সময় মসজিদে উপস্থিত শামসুদ্দিন আহমেদ নামে এক বাংলাদেশী বলেন, মাগরিবের আগে প্রচণ্ড বালু ঝড় শুরু হয়। এ সময় হঠাৎ ক্রেনটি ভেঙে পড়ে। চোখের সামনে অসংখ্য মানুষকে হতাহত হতে দেখেছি।
source : abna