আবনা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানরা বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার হন। কিছুদিন আগেও প্রতি মাসে গড়ে ১২টির বেশি এমন অপরাধের কথা জানা যেত। একমাস আগে প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলা এবং পরে স্যান বার্নারডিনোতে বন্দুকধারীদের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই সংখ্যা তিন গুণ হয়েছে।
অর্থাৎ, ঘৃণা বা বিদ্বেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানদের হেনস্তা করার হার বেড়েছে ৩০০ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানদের ওপর হেনস্তা নিয়ে গবেষণা করেছে দেশটির ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির ‘সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব হেট অ্যান্ড এক্সট্রিমিজম বিভাগের একদল গবেষক।
এতে নেতৃত্ব দেন- ওই বিভাগের শিক্ষক ব্রায়ান লেভিন।
এ-সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদনটি ‘নিউইয়র্ক টাইমসে’ প্রকাশিত হয়েছে।
জানা গেছে, ২ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় স্যান বার্নারডিনোতে পাকিস্তানি দম্পতির গুলিতে ১৪ জন নিহত হন। ওই হামলার এক মাসও কাটেনি, এরই মধ্যে বিদ্বেষ থেকে দেশটির মুসলমানদের ওপর ১৮টি হামলার কথা জানা গেছে।
ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির একটি বিশ্লেষণ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানদের হেনস্তা করার ঘটনার মধ্যে আছে হিজাব পরিহিত শিক্ষার্থীদের নিপীড়ন, মসজিদে অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞ, মুসলমানদের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গুলি ও হত্যার হুমকি।
ক্যালিফোর্নিয়াসহ যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানদের ওপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
তবে বিশ্লেষণে বলা হয়, রাজনীতিবিদদের ইসলামবিদ্বেষী বিবৃতির মাধ্যমেই মুসলমানদের ওপর বিদ্বেষ ছড়ানোর শুরু।
গবেষক ব্রায়ান লেভিন বলেন, মানুষের মধ্যে মুসলমানবিদ্বেষী মনোভাব এবং অতঃপর সন্ত্রাসী হামলা- এগুলো সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও আশঙ্কার সৃষ্টি করেছে।
গবেষকদের মতে, গত কয়েক বছরে প্রতি মাসে গড়ে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানদের ওপর ঘৃণা থেকে হেনস্তার ঘটনা ঘটত ১২ দশমিক ৬টি। দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (এফবি আই) এমন তথ্য দিয়েছে। তবে সম্প্রতি এই হার তিন গুণ হয়েছে। যার কারণ হিসেবে ধরা হয় প্যারিস ও স্যান বার্নারডিনোতে হামলা। গত ১৩ নভেম্বরে প্যারিসে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলায় ১২৯ জন নিহত হন। আর ২ ডিসেম্বর স্যান বার্নারডিনো হামলায় নিহত হন ১৪ জন। আরো ৩৮ হামলায় জঙ্গি সংগঠনটি জড়িত বলে সন্দেহ করা হয়।
এর আগে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলা হয়। ৯/১১ বলে পরিচিত ওই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমান-বিদ্বেষ থেকে বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটে। এমনকি মুসলমান বলে ভুল করে শিখদের ওপরও হামলা হয়।
source : abna24