আবনা ডেস্ক: কেউ দুধ বেচে মদ খায়! আবার কেউ মদ বেচে দুধ খায়। নীতীশের রাজ্যে এমনটিই দেখা যায়।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেন, এবার মদ নয়, দুধ বেচেই দুধ খাওয়া আয়োজন করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, এ রাজ্যে এবার মদের দোকানে থরে থরে সাজানো থাকবে দুধের প্যাকেট।
বিহারবাসীর নেশা ছোটাতে মদের বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আগেই জারি করেছেন নীতীশ। এ বার মদের দোকানের কমর্চারীদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে মদ ব্যবসায়ীদের দুধ বিক্রির ব্যবসায় নামাতে চাইছেন তিনি।
গত মাসে ফের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পরেই রাজ্যে মদ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার কথা ঘোষণা করেছিলেন নীতীশ।
বিহার সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে গ্রামীণ এলাকার সব দেশি মদের দোকান বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তার পরের প্রথম এক বছর শহর এলাকায় সরকারের পক্ষ থেকে হুইস্কি, রাম বা বিয়ার বিক্রি করা হবে।
২০১৮ সালের মধ্যে তাও বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রশ্ন ছিল, তা হলে মদের ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের ভবিষ্যৎ কী হবে?
বিহার সরকারের পরিকল্পনা মদের দোকান রূপান্তরিত হবে দুধের দোকানে। দুধ ছাড়াও পাওয়া যাবে লস্যি, দই বা পনির। বিক্রি হবে আইসক্রিম বা মাখন।
দিল্লিতে জেডিইউয়ের সর্বভারতীয় বৈঠকে যোগ দিতে এসে নীতীশ আজ এই পরিকল্পনার কথা জানান।
গত কয়েক দশক ধরেই বিহার স্টেট মিল্ক সমবায় সংস্থা বা কমফেড সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে আসছে। বিহার সরকারের বক্তব্য, বতর্মানে কমফেড-এর অধীনে গোটা রাজ্যে ‘সুধা’ বলে যে দুধ বিক্রির দোকান রয়েছে তা রমরমিয়ে চলছে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জোগানের চেয়ে চাহিদা বেশি। সরকারের নতুন সিদ্ধান্তে বিহারে দুধ সমবায় গোষ্ঠীর ব্যবসায় আরও গতি আসবে। গ্রামীণ এলাকায় এই সমবায় ছড়িয়ে পড়লে কাজের সুযোগ বাড়বে।
ঘরে বসেই দুধ বিক্রি করে আয় করতে পারবেন গ্রামের মানুষ। আর যাদের মদের দোকান রয়েছে তারা যদি সেখানে কমফেডের অধীনে দুধের দোকান দেন, সে ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড়ের সুযোগ দেয়ার বিষয়েও ভাবছে সরকার।
দলমত-নির্বিশেষে অধিকাংশ মহিলাই নীতীশের মদ বিক্রির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিরোধী বিজেপির পক্ষেও প্রকাশ্যে এর বিরোধিতা করা সম্ভব হচ্ছে না।
তবে ঘনিষ্ঠ মহলে বিজেপি শিবিরের বক্তব্য, নীতীশের এই ‘মাস্ট্রার স্ট্রোক’-এর আসল লক্ষ্য হল ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন। সেই ভোটে মহিলাদের ভোট পাওয়া নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নীতীশ।
জেডিইউ নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, এর পিছনে কোনো রাজনীতি নেই।
জেডিইউ শিবিরের দাবি, মদ বিক্রি বন্ধ করে রাজ্যের আয় কমলেও, এই সিদ্ধান্তে আগামী দিনে সার্বিক ভাবে আর্থ-সামাজিক উন্নতি হবে বিহারবাসীর। তাই নীতীশের এই সিদ্ধান্তের পিছনে তার দলেরও পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
source : abna24