বাঙ্গালী
Sunday 1st of September 2024
0
نفر 0

খুতবা নিয়ন্ত্রণে খতিব কাউন্সিল গঠন হচ্ছে

আবনা ডেস্ক : জঙ্গিবাদ রোধে নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে ইসলামি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (ইফাবা)। এজন্য শুক্রবার জুমার নামাজের আগে মুসল্লিদের উদ্দেশে দেওয়া খতিবের বয়ান বা খুতবা দেয়ার পদ্ধতি এবং খুতবার ভাষা কী হবে, তার দিক নির্দেশনা দিবে ইফাবা। তবে ইসলামী ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগকে কোন কোন আলেম ‘খুতবা নিয়ন্ত্রণের’ উদ্যোগ হিসেবে মনে করছেন।
খুতবা নিয়ন্ত্রণে খতিব কাউন্সিল গঠন হচ্ছে

আবনা ডেস্ক : জঙ্গিবাদ রোধে নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে ইসলামি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (ইফাবা)। এজন্য শুক্রবার জুমার নামাজের আগে মুসল্লিদের উদ্দেশে দেওয়া খতিবের বয়ান বা খুতবা দেয়ার পদ্ধতি এবং খুতবার ভাষা কী হবে, তার দিক নির্দেশনা দিবে ইফাবা। তবে ইসলামী ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগকে কোন কোন আলেম ‘খুতবা নিয়ন্ত্রণের’ উদ্যোগ হিসেবে মনে করছেন।
অপরদিকে খতিবদের সংগঠিত করতে ইফাবা খতিব কাউন্সিল গঠনেরও উদ্যোগ নিচ্ছে। ইসলামী ফাউন্ডেশনের নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্রটি জানায়, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ রোধে সরকারের দিক নির্দেশনার অংশ হিসেবেই শুক্রবারের জুমার নামাজের আগে আরবি ভাষায় খুতবা দেওয়ার শর্ত আরোপ করা হচ্ছে। (!?) দেশে ২টি বিভাগীয় সম্মেলনের মাধ্যমে খতিবদের কাছে এ ধরণের দিক নির্দেশনা পৌঁছানো হয়েছে। আর বাকি ৫টি বিভাগীয় পর্যায়ে এবং জেলাপর্যায়ে ইমামদের কাছে এ নির্দেশনা দেওয়া হবে।
ইফাবার কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, এটা কোন নিয়ন্ত্রণ নয়। নিয়ন্ত্রণ বলা যাবে না। যেহেতু ইসলামিক ফাউন্ডেশন ইসলামের প্রচার ও প্রসারের কাজে প্রতিষ্ঠিত, সে কারণে জুমার নামাজের খুতবা যেন ইসলামি পদ্ধতিতে হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখছে ইফাবা। মূলত জঙ্গিবাদ নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতেই এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সূত্রটি আরো জানায়, গত ১৯ ডিসেম্বর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির উদ্যোগে একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ওই কর্মশালায় সাতটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। তার মধ্যে ‘খুতবার বিষয়বস্তু নির্ধারণ ও আলোচনা’ তৈরিরও সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তী সময়ে এ নিয়ে কোনও রূপরেখা সারাদেশে ইমামদের কাছে না গেলেও ইফাবার অনুষ্ঠানগুলোতে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বক্তব্য রাখছেন।
ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির পরিচালক মুহাম্মদ তাহের হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিভাগীয় পর্যায়ে এ বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে।
ইফাবার কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের বলেছেন, কোন লিখিত নির্দেশনা নয়, বরং খতিব সাহেবরা কিভাবে মানুষকে দ্বীনের পথে ডাকবেন, কিভাবে জঙ্গিবাদ বিষয়ে মুসল্লিদের সচেতন করবেন, সে বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে। সারাদেশের সম্মেলনগুলোতেও এ নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
ইফাবা মনে করছে, খুতবা আরবিতেই দিতে হবে। তাদের আরবিতে খুতবা লিখতে ও পড়তে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। মসজিদে কোনও রাজনৈতিক আলাপ করা যাবে না। এটা মেনডেটরি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের নিয়ম জেনে লাভ নেই, এই উপমহাদেশে ইসলামের শুরু থেকে আরবিতেই খুতবা দেওয়ার রেওয়াজ ছিল।
আর জুমার নামাজ দু-রাকাত কমিয়ে দেওয়া হয়েছে খুতবার মর্যাদার কারণে। এ কারণে সেটি কোরআন ও হাদিসের আলোকে আরবিতেই দিতে হবে। তবে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে খুতবার আগে এর সারমর্ম বাংলায় বলতে পারেন। সামাজিক সমস্যাবলিও থাকতে পারে। তবে অবশ্যই রাজনৈতিক কোনও কিছু থাকবে না।
কোন মসজিদে এই নিয়ম মানা না হলে ইফাবা কোন ব্যবস্থা নেবে কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়, ইফাবা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছে। প্রেসার দিয়ে নয়, আইন দিয়ে নয়। আমাদের কাজ তো প্রেসারক্রিয়েট করা নয়। আর ইফাবার খুতবা-বিষয়ক নির্দেশনা এখনও বিস্তার লাভ করেনি।
রাজধানীর অনেক মসজিদের কমিটির কাছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কোন নির্দেশনা এখনও যায়নি। আর না যাওয়ার কারণ হিসেবে ইফাবা কর্তৃপক্ষ বলেন, রাজধানীতে আমরা প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি। এখন সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি করছি। ধীরে-ধীরে সারাদেশে আহ্বান ছড়িয়ে যাবে।
ইফাবার অপর এক সূত্র জানায়, খুতবা আরবিতে দিতে আলেমদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে ইফাবা। গত বছরের শেষ মাসে এই প্রতিযোগিতায় আসা নির্বাচিত ৫২ টি খুতবা নিয়ে একটি খুতবাগ্রন্থ প্রকাশ করা হবে। গ্রন্থটি সারাদেশের মসজিদে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন সারাদেশের খতিবদের সাংগঠনিকভাবে এক মঞ্চে আনতে জাতীয়ভাবে খতিব কাউন্সিল গঠনের উদ্যোগ নিচ্ছে। এ কাউন্সিল আরবি ভাষায় খুতবা দেওয়াসহ নানা কাজে গতিশীলতা আনতেই তৎপরতা চালাবে বলে জানা গেছে।
ইফাবা মহাপরিচালক বলেছেন, খতিবরা তো মসজিদ নিয়ন্ত্রণ করেন। মুসল্লিদের প্রতি তাদের প্রভাব কাজ করে। এ কারণে খতিবদের আমরা সাংগঠনিক রূপ দিতে চাচ্ছি। খতিব কাউন্সিলের কাজ হবে সারাদেশের খতিবরা কাউন্সিলের অধীনে কোরআন ও হাদিসের আলোকে দ্বীনের খেদমত করবে। আর মসজিদে রাজনৈতিক বক্তৃতা বন্ধে এই কাউন্সিল অনেকটাই কার্যকরি হবে বলেও প্রত্যাশা করেন তিনি।
তবে, এখনি এই কাউন্সিল গঠনের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়নি। শিগগিরই নতুন এই কার্যক্রমটি শুরু হবে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
তবে শোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব ফরিদউদ্দিন মাসউদ মনে করেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নেওয়া খুতবা নিয়ন্ত্রণ ও খতিব কাউন্সিল গঠনের বিষয়টি আলেমদের মধ্যে আবেদন তৈরি করতে ব্যর্থ হবে বলে।
তিনি আরও বলেন, সাধারণত বাংলাদেশের আলেমরা আরবিতেই খুতবা দিয়ে থাকেন। এটা তো নিয়মের কিছু নয়। নিয়ন্ত্রণেরও কিছু নয়। আহনাফ ও আহলে সুন্নাত মতাদর্শীরা তো আরবিতেই খুতবা দেন। মাতৃভাষায়ও খুতবা দেওয়ার বিভিন্ন মাসআলা-মাসায়েল রয়েছে।
মাওলানা ফরিদউদ্দীন সাংবাদিকদের আরও বলেন, আরবিতেই দিতে হবে এমন শর্ত আরোপ করা ঠিক নয়। এটা নিয়ে সমস্যা তৈরি হবে। এখন কী মনে করে ইফাবার ডিজি এটাকে নিয়ম করতে গেলেন, জানি না। আমি তো কিছু বললেই মনে করেন প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমার চাহিদা আছে। কিন্তু এটা সত্য নয় বলেই এসব বিষয়ে আমি মাথা ঘামাই না। আলেমদের কাছে উনার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু, এটা উনি নিজেও জানেন।


source : abna24
0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

আমাকে এ নারীর হাত হতে মুক্তি দাও!: ...
ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘প্রত্যাশা’ ...
বাস্তবতার দর্পনে ওহাবি মতবাদ (১১ - ...
চাকরিতে বাধা হিজাব ; নিরাপত্তা ...
ইরান মুসলিম জাতিগুলোর জন্য আদর্শ ...
সূরা আ'রাফ;(২৬তম পর্ব)
ভারতে যে দাঙ্গা মুসলিম নারীদের ...
সুফীবাদ প্রসঙ্গে
মিয়ানমারে ইমাম হুসাইন (আ.) এর ...
পোপ ও ইয়েমেনের মানুষ হত্যাকারীরা

 
user comment