ভূমিকা:
মুখস্থ করা সহজ কিন্তু উপলদ্ধির সাথে অনুধাবন করে অর্জিত জ্ঞানের ওপর আমল করা কঠিন হলেও এর মধ্যে রয়েছে জীবনের সত্যিকার অর্জন ও প্রশান্তি। এমন একটি প্রশান্তির বাণী নিয়ে এসেছে বিশ্ববাসীর কাছে আল-কুরআন। তাই আল কুরআনেই ঘোষণা হয়েছে। “ওয়ামাহুয়া ইল্লা যিকরুল লিল আলামীন” অর্থ- ‘অথচ এই কিতাব কুরআন সারা জাহানের জন্য উপদেশ বাণী’। আল কুরআন শুধু মুখস্ত করে, তেলাওয়াতের সওয়াব হাসিলের জন্য অবতীর্ণ হয়নি। একদিকে ‘কুরআন উপদেশবাণী’ অন্যদিকে ‘কুরআন বিজ্ঞানময়’ সর্বোপরি- আল কুরআন নিজেই একটি মু’জিযা।
মু’জিযা কী :
মু'জিযার শাব্দিক অর্থ- “অভিভূতকারী”। অলৌকিক কর্মের পারিভাষিক শব্দরূপে ‘মু’জিযা’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। মক্কার অবিশ্বাসীরা হযরত মুহাম্মদ (সা.) নিকট বিশ্বাস স্থাপনের শর্তস্বরূপ কয়েকটি অলৌকিক কার্য সম্পাদনের দাবি করে। সূরা বনী ইসরাইলের ৯০ নং আয়াতে উল্লেখ আছে- তাদের দাবিগুলো ছিল:
১. কখনও আমরা তোমার ওপর ঈমান আনব না, যতক্ষণ না তুমি আমাদের জন্য এ জমীন থেকে এক প্রস্রবন (বারা) প্রবাহিত না করবে।
২. খেজুরের অথবা আঙ্গুরের একটা বাগান তৈরি, তাতে অসংখ্যা নদী-নালা বইয়ে দিবে।
৩. কিয়ামতের আলামত স্বরূপ আসমানকে টুকরো টুকরো করে ফেলা এবং তাদের (কাফেরদের) সমানে স্বয়ং আল্লাহ ও ফেরেশতাদের এনে দাঁড় করানো।”
কাফেরদের দাবির বিষয়ে বনী ইসরাইল ৯৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে- “কিংবা থাকবে তোমার স্বর্ণ নির্মিত ঘর; অথবা তুমি আরোহন করবে আসমানে- এর উত্তরে মহান আল্লাহতায়ালা হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে আদেশ করেন, “বল! মহান পবিত্র আমার মালিক (আল্লাহ তায়ালা) আমিতো কেবল (তার পক্ষ থেকে) একজন মানুষ, একজন রাসূল বৈ কিছুই নই।”
ওয়ালীদের দ্বারা অলৌকিক কার্য সম্পাদন হলে তাকে কারামাত বলে। মু'জিযা সম্পর্কে তাক্তাযানী এভাবে এর ব্যাখ্যা করেছেন- মু’জিযা প্রচলিত সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম, এটা একজন নবুওয়াতের দাবিদারের দ্বারা প্রকাশ পায়, নবুওয়াত অস্বীকারকারীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি এটা সম্পাদন করেন এবং কার্যটির প্রকৃতি এমন যে, অস্বীকারকারীদের পক্ষে সেরূপ কার্য করা অসম্ভব। এটা আল্লাহ রাসূলের সত্যতা প্রমাণের জন্য আল্লাহর সাক্ষ্য। আল্-ঈজীর মাওয়াকি’ফে মু’জিযার পরিপূর্ণ ও সুসংঘবদ্ধ সংজ্ঞা দিয়েছেন। তিনি বলেন- যিনি আল্লাহর নবী বলে দাবি করেন, তাঁর সত্যতা প্রমাণ করাই মু’জিযার উদ্দেশ্য। তাছাড়া তিনি এ সব শর্ত উল্লেখ করেন-
১. আল্লাহর কার্য হতে হবে।
২. প্রচলিত সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম হতে হবে।
৩. অনুরূপ কার্য সম্পাদন অন্যের পক্ষে অসম্ভব হতে হবে।
৪. এমন ব্যক্তির দ্বারা সম্পূর্ণ হতে হবে যিনি নিজেকে নবী বলে দাবি করেন।
৫. তাঁর ঘোষণার সমর্থন জ্ঞাপন হবে।
৬. মু’জিযা: তার দাবির পরিপন্থী হবে না।
৭. দাবির পরে সংঘটিত হতে হবে।
সুতরাং- মু’জিযা শব্দের অভিধানিক অর্থ হল- অপরাগ ও ক্ষমতাহীন করে দেয়া, মোকাবেলায় কাবু করে ফেলা, আর পারিভাষিক অর্থ- নবী রাসূলদের নিজস্ব দাবির সমর্থনে এমন অলৌকিক ও আশ্চর্য ঘটনা ঘটিয়ে দেখানো যা পয়গম্বর ব্যতীত অন্য কারও পক্ষে ঘটানো আদৌ সম্ভব নয়।
নবী-রাসূলদের মু’জিযা :
সাধারণ মু’জিযার বাইরে আল্লাহ তার কোনো কোনো রাসূলকে বিশেষ মু’জিযা দান করেছেন। যেমন- মুসার (আ.) আসা (লাঠি) ও ইয়াদে বায়যা (উজ্জ্বল হাত)। হযরত মূসা (আ.) যখন লাঠিখানা মাটিতে নিক্ষেপ করতেন, তখন তা ভয়াবহ প্রকাণ্ড অজগরের রূপ ধারণ করত। আবার যখন তিনি সেটি ধরতেন, তখন তা লাঠিতে রূপান্তরিত হতো। অনুরূপভাবে তিনি তার ডান হাত বগলে দাবিয়ে যখন বের করতেন, তখন উক্ত হাত এক বিশেষ ধরণের আলো-রশ্মি বের হয়ে চারিদিক আলোকিত করে ফেলত। এটাই ছিল মূসা (আ.) এর মু’জিযা। এছাড়াও অন্যান্য মু’জিযা গুলো হলো :-
১. মাঠির আঘাতে লোহিত সাগরের পানিকে বিভক্ত করে ইসরাইলীদের জন্য রাস্তা তৈরি করে দেয়া।
২. পাথর খণ্ডের মধ্যে হতে বনি ইসরাইলের বারটি গোত্রের জন্য বারটি ঝর্ণা প্রবাহিত করা।
৩. আসমান হতে মান্না সালওয়া (আসমানী খাদ্য) নাযিল হওয়া প্রভৃতি অন্যতম।
হযরত ঈসা (আ.) এর মু’জিযা বা আলৌকিক ঘটনা হল-
১. দূরারোগ্য ব্যাধি আরোগ্য করা।
২. মৃতকে জীবিত করা।
৩. মাটি দিয়ে পাখি তৈরি করে উড়িয়ে দেয়া।
৪. অন্ধকে দৃষ্টিদান।
৫. বোবাকে বাকশক্তি দান।
৬. কুষ্ঠকে আরোগ্য করা।
৭. পানির উপরে হাটা ইত্যাদি।
আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় হাবীব হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে বহু আলৌকিক ঘটনার ছাড়াও যে সর্বশ্রেষ্ঠ মু’জিযাটি দান করেছিলেন সেটা আরবী ভাষায় নাযিলকৃত আল-কুরআন। দুনিয়ার সর্বপ্রধান ভাষাগুলোর মধ্যে আরবী ভাষা ছিল বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এবং রাসূলের আর্বিভাবকালে কাব্য ও সাহিত্য চর্চার দিক থেকে আরবরা ছিল শীর্ষস্থানীয়। আল্লাহ একজন নিরেট নিরক্ষর লোকের কাছে এমন উচ্চাঙ্গের কালাম নাযিল করলেন যার ভাষা ও ভাবের সুউচ্চ মান দর্শনে সমস্ত আরব হতচকিত হয়ে গিয়েছিলে। ভাষার দিক থেকে কুরআনের মোকাবেলা করা যেমন আরবের জন্য অসম্ভব ছিল, তেমনি ভাব ও বিষয়াবলীর দিক দিয়েও কুরআনের অনুরূপ কালাম তৈরি করা তাদের জন্য সম্ভব ছিল না। ফলে ভাষা ও ভাব উভয় দিক হতেই কুরআন মহানবীর এক অত্যাশ্চর্য মু’জিযারূপে কিয়ামত পর্যন্ত বিরাজ করবে।
বিভিন্ন মনীষীর মতামত :
দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে নাযিলকৃত বিভিন্ন ঘটনা, সমস্যাকেন্দ্রিক ও পথপ্রদর্শক নির্দেশনাভিত্তিক গ্রন্থ আল কুরআন যা অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যত বিশ্লেষণে বিশ্বের সকল গ্রন্থের চেয়ে পৃথক এবং যা অলৌকিত্বের দাবি রাখে।
ডর্জসেল বলেন- “নিঃসন্দেহে কুরআন আরবী ভাষার সর্বোত্তম এবং দুনিয়ার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ। কোনো মানুষের পক্ষেই এ ধরণের একটি অলৌকিক গ্রন্থ রচনা করা কিছুতেই সম্ভব নয়। কুরআন মৃতকে জীবিত করার চেয়েও শ্রেষ্ঠ মু’জিযা। একজন অশিক্ষিত লোক কী করে এ ধরণের ত্রুটিমুক্ত ও নজিরবিহীন বাক্যাবলী রচনা করতে পারে; তা ভাবতেও আশ্চর্য লাগে।
মি. বোরথ সমুখ এর মন্তব্য- “মুহাম্মদের এ দাবি আমি সর্বান্তকরণে স্বীকার করি যে, কুরআন মুহাম্মদের (সা.) একটি সর্বকালীন শ্রেষ্ঠ মোজেযা।”
কোন্ট হেনরী বলেন- “কুরআনের অধ্যয়নে বিবেক হয়রান হয়ে যায় যে, একজন অশিক্ষিত লোকের মুখ হতে এ ধরণের কালাম (ভাষা) কি করে বের হল!”
হিন্দু ধর্মাবলম্বী মি. ভূপেন্দ্র নাথ বোস বলেছেন- “তেরশত বছর পরেও কুরআনের শিক্ষাসমূহ এতই জীবন্ত যে আজও একজন ঝাড়ুদার মুসলমান হয়ে (কুরআনের প্রতি ঈমান এনে) যে কোন খান্দানী মুসলিমের সাথে সমতার দাবি করতে পারে।”
আমরা মুসলিমরা আল কুরআনকে ভালোবাসি, তেলাওয়াত করি, আমাদের ঘরের সব থেকে উঁচু জায়গায় যত্নের সাথে, শ্রদ্ধাভরে রেখে দেই, অথচ কুরআনের নির্দেশমত জীবন গঠন করার ব্যাপারে উদাসীন, এবং প্রয়োজনে কুরআনের বিরুদ্ধাচারণ করি, বিরূপ মনোভাব পোষণ করি- অথচ অনেক অমুসলিম মনীষী কুরআন সম্পর্কে অলৌকিক মন্তব্য করেছেন- যা সত্যিই আশ্চর্য লাগে।
মিষ্টার গান্ধী মন্তব্য- ‘আমি কুরআনের শিক্ষাসমূহের ওপর গবেষণা করে এই সিদ্ধান্তে পৌছেছি যে, কুরআন নাযিলকৃত আসমানী কিতাব এবং উহার শিক্ষাসমূহ মানব স্বভাবের সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যসীল।’
মু’জিযার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ:
বিজ্ঞানের যত আবিষ্কার আজ আমাদের জীবনকে গতিশীল করেছে, বিজ্ঞানীদের আবিষ্কারের শত শত, হাজার হাজার বছর পূর্বে এ সব তথ্য আল্লাহ্ ওহীর মাধ্যমে তার নবীকে জানিয়ে দিয়েছিলেন। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে নিউটনের মধ্যাকর্ষণ থিওরী আবিষ্কার হওয়ার আগে আল্লাহ আল-কুরআনে বলেছেন- “আর সমস্ত নক্ষত্ররাজি তারই 'আমর’ দ্বারা বাঁধা (নিয়ন্ত্রিত) নিশ্চয় এর ভেতরে, বিজ্ঞ লোকদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।” (সূরা নহল-১২)
উপরোক্ত আয়াতে ‘আমর’ দ্বারা সেই মহা আকর্ষণ শক্তিকে বুঝানো হয়েছে, যার আকর্ষণ শক্তি বলে মহাশূন্য নক্ষত্ররাজি বিক্ষিপ্ত হয়ে ছুটে পড়ছে না।
ফরাসি পদার্থ বিজ্ঞানী- দ্য ব্রগলি ১৯১৫ সনে বিশ্বের সর্বত্রই যে আল্লাহতায়ালা দ্বৈত ও জোড়া পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন, এই আশ্চার্য দ্বৈতরূপের প্রতি ইঙ্গিত করেন। তার মতে, প্রকৃতির সর্বত্র যে দ্বৈতধর্ম তারই একটি দিক মাত্র। অথচ দ্য ব্রগলির তেরশত বছর পূর্বে এই দ্বৈত ভাবের কথা কুরআনের মাধ্যমে মানুষকে জানানো হয়েছে। আল্লাহ বলেন- “বড়ই মহিমান্বিত সেই সত্ত্বা যিনি দ্বৈতরূপে সবকিছুকে সৃষ্টি করেছেন। যা কিছু ভূমি হতে ও তাদের (মানুষের) ভেতর হতে জন্মে এবং এমন বস্তু হতে জন্মে যার খবর তারা রাখে না।’
(সূরা ইয়াসিন-৩৬) আল্লাহ বলেন- “আমি তোমাদেরকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি”- (সূরা নাবা, আয়াত নং- ০৮) আল্লাহ আরো বলেন- “আর প্রত্যেকটা জিনিয়েরই আমরা জোড়া সৃষ্টি করেছি। সম্ভবত: তোমরা ইহা হতে শিক্ষা গ্রহণ করবে।” (সূরা আয-যারিয়াত- ৫৮)
এই আয়াত গুলোর তাৎপর্য এই যে, সমগ্র বিশ্বলোকের জোড়ায় জোড়ায় নির্মিত হওয়া এবং দুনিয়ার প্রত্যেকটি জিনিসের জোড়া জোড়া হওয়া এমন এক মহাসত্য ও একান্তই বাস্তব যে বিজ্ঞানীরা এটা আবিষ্কার করে আশ্চর্য হয়েছেন, অনেকে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। এটাই কুরআনের অলৌকিকত্ব ও অন্যতম মু’জিযা।
গবেষণায় উদ্ঘাটিত প্রমাণ:
‘আল-কুরআন’ সৃষ্টির সেবা মানব সমাজে মহাজ্ঞান সমৃদ্ধ এক মহাবিস্ময়ের বিস্ময় হয়ে বিরাজ করছে। জ্ঞানের সকল শাখাকে একত্রিত করে অবতীর্ণ হয়েছে এই কিতাব। অপরকে সাহায্য সহযোগিতা করুক না কেন! (১৭:৪৪), তা এখন মানবজ্ঞানে একটু একটু করে উপলদ্ধি করা সম্ভব হবে। অতি সম্প্রতি একজন আরবী ভাষী পণ্ডিত ও গবেষক (Scholar) ‘আল্-কুরআনের’ ওপর তাঁর আধুনিক চিন্তাধারার আলোকে কতকগুলো ব্যবহৃত শব্দের ওপর গবেষণা করে এদের বিস্ময়কার যে পরিসংখ্যানগত উপাত্ত (Statistical data) লাভ করেন, তা খুবই আগ্রহ করে (Highly interestingly) শুধু মুসলিম জ্ঞানী ব্যক্তিবর্গই অবলোকন করে ধন্য হননি, সাথে সাথে বিশ্বব্যাপী এক বিরাট সংখ্যক অমুসলিম জ্ঞানী সমাজও জ্ঞানপূর্ণ দৃষ্টি দিয়ে রীতি মতো স্তম্ভিত হয়ে যান। বিশেষ করে বিজ্ঞান (Science) এবং (statistics) পরিসংখ্যান এর উপর দক্ষ ব্যক্তিত্ব সম্পন্নরা ‘কুরআনের’ উক্ত বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ গ্রন্থ বুননে কতিপয় শব্দের আশ্চার্য করার মত কৌশল স্থাপনে তারা অভিভূত হয়ে যান।
ড. তারিক আল্-সুওয়াইদান (Dr. Tarik Al-Suwaidan) তাঁর গবেষণালদ্ধ বিস্ময়কর ও নজিরবিহীন প্রাপ্তিকে ইন্টারনেটের (Internet) মাধ্যম বিশ্বব্যাপী ওয়েব সাইট (WebSite) গুলোতে ছাড়িয়ে দিয়েছেন। ফলে সৃষ্টির সেবা মানুষের জ্ঞানের রাজ্যকে আরেকবার নাড়া দিয়ে প্রমাণ করল- ‘কুরআন’ সত্যগন্থ, ‘কুরআন’ অবতীর্ণকারী মহান স্রষ্টা ‘আল্লাহ’ সত্য এবং ‘আল্লাহর’ জ্ঞান, মহাবিশ্বে শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানবীয় জ্ঞানের বহু বহু উর্ধ্বে, যা কল্পনা করাও এক দুরূহ ব্যাপার বৈকি।
এবার ড. তারিক আল সুওয়াইদানের গবেষণায় উদঘাটিত বিষয়গুলো লক্ষ্য করুন:
শব্দ (Word) অর্থ (Meaning) শব্দটি যতবার কুরআনের ব্যবহৃত হয়েছে (Number of times accound in the Quran)
Al-Dunya ইহজগত-This World ১১৫ (115)বার
Al-Akhira পরজগত- Here After ১১৫ (115) বার
Al-Malaika ফিরিশতাগণ- Angles ৮৮ (88) বার
Al-Shayateen শয়তান- Satans ৮৮ (88) বার
Al-Hayat জীবন- Life ১৪৫ (145) বার
Al- Maout মৃত্যু- Death ১৪৫ (145) বার
Al-Nafa উপকারি- The Useful ৫০ (50) বার
Al-Fasad ক্ষতিকর- The Harmful ৫০ (50) বার
Al-Naas জনগণ- The Peoples ৩৬৮ (368) বার
Al-Rasul রাসূল- The Messengers ৩৬৮ (368) বার
Al-Iblees ইবলিশ- Iblees ১১ (11) বার
Al-Esta Ajat পরিত্রাণ- Seeking Refuse in Allah From Iblees ১১ (11) বার
Al-Mousibah পরীক্ষা- Test ৭৫ (75) বার
Al-Sukran আল্লাহকে ধন্যবাদ- Thanking to Allah ৭৫ (75) বার
Al-Enfaq দান- Speding ৭৩ (73) বার
Al-Rada সন্তুষ্টি- Pleased ৭৩ (73) বার
Al-Daloon ধ্বংস- Those Astray ১৭ (17) বার
Al-Mouty মৃত- Those Dead ১৭ (17) বার
Al-Muslemeen মুসলিম- The Moslem ৪১ (41) বার
Al-Jehad জিহাদ- The Struggle ৪১ (41) বার
Al-Jahab স্বর্ণ- Gold ৮ (8) বার
Al-Taref অতিরিক্ত ব্যয়- Over Spending ৮ (8) বার
Al-Eftnah জাদু- Magic ৬০ (60) বার
Al-Jakah ধ্বংসের পথে- Some thing Thalleeds Astray ৬০ (60) বার
Al-Jakal যাকাত- Alms ৩২ (32) বার
Al-Barakah বরকত- Blessing ৩২ (32) বার
Al-Akal জ্ঞান- Brain ৪৯ (49) বার
Al-Noor আলো- Light ৪৯ (49) বার
Al-Lesan জিহ্বা- Tongue ২৫ (25) বার
Al-Mauejah উত্তম বাক্য- Good Talk ২৫ (25) বার
Al-Ragibah ইচ্ছা- Desire ৮ (8) বার
Al-Rahebah দুষ্কৃতিকারীকে ভয়-
Fear Terror ৮ (8) বার
Al-Jahor উচ্চকণ্ঠে- Loud ১৬ (16) বার
Al-Elaniah প্রকাশিত- Publicaly ১৬ (16) বার
Al-Saddah শক্ত- Hard ১১৪ (114) বার
Al-Sabar ধৈর্য- Patience ১১৪ (114) বার
Mohammad (Saws) মুহাম্মদ (সা.)-Mohammad (Saw) ৪ (4) বার
al-Sariah শরীয়া বিধান- Allah’s Law ৪ (4) বার
Al-Rajul পুরুষ- Man ২৪ (24) বার
Al-Marrah মহিলা- Woman ২৪ (24) বার
Al-Shahr মাস- Month ১২ (12) বার
Al-Yaom দিন- Day ৩৬৫ (365) বার
Al-Bahar সমুদ্র- Sea ৩২ (32) বার
Al-Bar ভূমি- Land ১৩ (13) বার
বর্তমান বিজ্ঞানসমৃদ্ধ বিশ্বে যেহেতু পৃথিবীর পানিময় অংশ এবং শুকনো ভূমি পারসেনপেজেই (Percentage) প্রকাশ করা হয়ে থাকে এবং এটাই সঠিক পদ্ধতি, তাই ‘সমুদ্র’ এবং ভূমির কুরআনি হিসেবকে আমরাও পারসেনটেজে নিয়ে যেতে চাই, তাহলে দাঁড়ায়"
৩২+১৩=৪৫
সুতরাং, ৩২/৪৫x১০০০%=৭১‘১১১১১১১% পানি,
আবার, ১৩/৪৫x১০০০%=২৮‘৮৮৮৮৮৮৮৮% ভূমি।
বর্তমান বিজ্ঞান উক্ত হিসাবকেই সঠিক বলে রায় প্রদান করেছে, যা আমরা সবাই ইতোমধ্যেই অবগত হয়েছি।
উপসংহার:
‘কুরআন’ যদি সত্যই একজন মহাজ্ঞানী সত্ত্বর নিকট থেকে অবতীর্ণ না হয়ে থাকে, তাহলে জ্ঞান- বিজ্ঞানের চূড়ান্ত মোড়কে সাজিয়ে গুছিয়ে পরিপাটি করে এরূপ শতশত আশ্চর্য করার মত অনন্য বৈশিষ্ট্য ধারণ করে কিভাবে কুরআন বিশ্ব মানব সমাজকে অভিভূত করে দিতে পারে? কোন মানুষের পক্ষে কি এমনি ধরণের কোন গ্রন্থ রচনা করা আদৌ সম্ভব? বর্তমান পৃথিবীতে তো গ্রন্থ, কিতাব ও পুস্তকের অভাব নেই, কিন্তু ‘কুরআনের’ মতো অকল্পনীয় বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন সত্য কিতাব বা গ্রন্থ কি আর একখানাও পাওয়া যাবে কোথাও?
উপরের ‘ডাটা’র পুরো ব্যাখ্যায় না গিয়ে শুধু চিহ্নস্বরূপে কয়েকটি শব্দের কথাই আলোচনায় আনা যেতে পারে। যেমন: ‘ইহ্জগত’ শব্দটি ‘পরজগত’ শব্দের সংখ্যার সাথে সংগতি রেখেই সমসংখ্যায় ‘কুরআনে’ স্থান পেয়েছে। একই ভাবে ‘ফিরিশতা’ শব্দটি এর বিপরীতে ‘শয়তান’ শব্দের সাথে সমতা রক্ষা করেছে। ‘জীবন’ নামক শব্দ ও ‘মহিলা’ শব্দদ্বয়ও সমসংখ্যায় আবির্ভূত হয়ে সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে।
পৃথিবীতে বারমাসে পূর্ণ একটি বছর গণনা করা হয়, আর সে কারণেই মিল রেখে ‘মাস’ শব্দটি সর্বমোট ১২ বার ‘কুরআনে’ উল্লেখিত হয়েছে, আবার পৃথিবীতে ৩৬৫ দিনে পূর্ণ একটি বৎসর হিসেব করা হয় বিধায় এর সাথে সমতা রেখেই ‘দিন’ শব্দটি ৩৬৫ বার ব্যবহৃত হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় নয় কি? এভাবে অসংখ্য শব্দই ‘মহান স্রষ্টার’ সৃষ্টি নৈপুণ্যতার জ্বলন্ত স্বাক্ষর হয়ে ‘কুরআনে’ স্থান পেয়েছে, যা আমরা ডাটা- তে উল্লেখ করেছি।
ড. তারিক তাঁর গবেষণায় ‘কুরআনের’ মু’জিযা বা অলৌকিক যে উপস্থাপনার সর্বশেষ নিদের্শন আমাদের সামনে উপস্থাপন করছেন তা জ্ঞানবান সমাজকে রীতিমতো চমকে দিয়েছে। তারা ভাবছেন কত নিখুঁত ও সুক্ষ্মতার শতকরা হিসাবেই (Percentage) না কুরআন পৃথিবীর পানি ও ভূমির পরিমাণ উপস্থাপন করেছে, যা বিজ্ঞতার চূড়ান্ত অবস্থানকেও হার মানিয়ে দেয়। প্রায় ১৪০০ বৎসর পূর্বের ‘কুরআন’ বর্তমান (Modern) যুগের শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক চিন্তা-ধারা এবং প্রাপ্তিকেও তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
সুতরাং ‘আল্-কুরআন’ যে সঠিক বিজ্ঞানের পথ প্রদর্শন ও অলৌকিক মু’জিযার স্বাক্ষর তা নতুনভাবে প্রমাণিত হয়ে বিশ্ব মানব সমাজকে সত্যের পানে আবারও আহ্বান জানাচ্ছে। (রেডিও তেহরান)
source : alhassanain