আবনা ডেস্ক : দীর্ঘদিন ধরেই ভারতে একটি বিতর্কিত ইস্যু ‘তিন তালাক’। মুখে মুখে স্বামী স্ত্রীকে তিন বার তালাক বলে দিলেই চিরদিনের জন্য শেষ হয়ে যায় দাম্পত্য সম্পর্ক। মুখে মুখে এ ধরনের তালাককে ‘কোরানসম্মত নয়’ বলে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন ভারতীয় মুসলিম নারীরা।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে ভারতে খোলা হয়েছে একটি অনলাইন পিটিশন। এতে স্বাক্ষর করেছেন ৫০ হাজার নারী। ভারতীয় মুসলিম মহিলা আন্দোলনের নেতৃত্বে ওই পিটিশনে তারা উল্লেখ করেছেন, এভাবে তালাক বা বিচ্ছেদ ধর্মীয় বিধান সম্মত নয়। সংস্থাটির সাম্প্রতিক হিসেব মতে, ভারতের ৯২ শতাংশ মুসলিম নারীই চান মৌখিকভাবে দেয়া তালাক ব্যবস্থার অবসান ঘটুক।
এদিকে মুসলিম মহিলা আন্দোলনের ওই দাবিকে সমর্থন দিয়েছেন ভারতের উত্তরপ্রদেশের প্রথম নারী কাজি হিনা জহির নদভি। এ ধরনের তালাককে তিনি কোরানের আয়াতের ‘ভুল ব্যাখ্যা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। প্রথাটি নিষিদ্ধ করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছেও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ভারতীয় মুসলিম মহিলা আন্দোলনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জাকিয়া সোমান জানান, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা, উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, কেরল ও উত্তরপ্রদেশে চলছে পিটিশনে স্বাক্ষর গ্রহণ। শুধু মুখে নয়, ইমেল, ফোন এবং টেক্সট মেসেজের মাধ্যমেও ক্রমাগত বেড়ে চলেছে তিন তালাক দিয়ে সম্পর্ক শেষ করার প্রক্রিয়া।
এর আগে ভারতীয় নারী সায়েরা বানুর এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছিল, পরপর তিন বার তালাক শব্দ উচ্চারণ করলেই বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে কিনা- এ বিষয়ে অনুসন্ধান করবেন তারা। তবে এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ভারতের মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড। তারা তিন তালাক যাতে রহিত না হয় সেজন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
১৯৮৫ সালে তালাক সম্পর্কিত বিষয়ে পাঁচ সন্তানের মা ৬২ বছর বয়সী শাহবানুর প্রশ্ন নিয়ে বেকায়দায় পড়েছিল তৎকালীন রাজীব গান্ধী সরকার। তখন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত শাহবানুকে দেয়া তার স্বামীর তালাক বহাল রেখেছিল। আবার ত্রিশ বছর পর মাথাচাড়া দিল সেই বিতর্ক।
source : abna24