আবনা ডেস্ক: ইরাকের পপুলার মোবিলাইজেশন ইউনিটের শীর্ষ পর্যায়ের কমান্ডার আবু মাহাদি আল-মুহান্দিস বলেছেন, বাগদাদ সরকারের অনুরোধেই উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসআইএল বা দায়েশের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামরিক উপদেষ্টা পাঠিয়েছে ইরান।
তিনি বলেন, “মসুলের পতনের পর ইরাকের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকি আনুষ্ঠানিকভাবে তার দেশে সেনা পাঠানোর জন্য আমেরিকাকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। একই অনুরোধ জানিয়েছিলেন ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানকে। আমেরিকা সে অনুরোধে সাড়া দেয় নি কিন্তু ইরান তাৎক্ষণিকভাবে সামরিক উপদেষ্টা পাঠায়। সেই থেকে ইরানের সামরিক উপদেষ্টারা ইরাকি সেনা ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে সহায়তা করছে।”
কমান্ডার মুহান্দিস জানান, ইরাকে সরকার পরিবর্তন হওয়া এবং হায়দার আল-এবাদি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়া পর্যন্ত আমেরিকা কোনো ধরনের সহায়তা করে নি। ফালুজা শহর থেকে গতকাল (মঙ্গলবার) ইরানের প্রেস টিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন কমান্ডার মুহান্দিস।
তিনি জানান, ইরাকি বাহিনীকে সহায়তা না করে বরং আব্রামস ব্যাটেল ট্যাংক রক্ষণাবেক্ষণের কাজে নিয়োজিত মার্কিন কোম্পানিকে সরিয়ে নেয় আমেরিকা। পাশাপাশি ট্যাংক ও কামানের গোলা সরবরাহ ব্যাপকভাবে কমিয়ে দেয়।
কমান্ডার মুহান্দিস আবারো জোর দিয়ে বলেন, “আমেরিকা কোনা ধরনের সহায়তা করে নি বরং ইরান যথেষ্ট দ্রুত সাড়া দিয়েছিল এবং জেনারেল কাসেম সোলায়মানিকে ইরাকে পাঠায়। সে সময় আমাদের অস্ত্রের খুব বেশি প্রয়োজন ছিল এবং আমাদের কাছে কালাশনিকভ রাইফেল পর্যন্ত ছিল না। ইরান থেকে সামরিক বিশেষজ্ঞ ও উপদেষ্টা আসার ফলে আমাদের শক্তি অনেক বেড়ে গেল। তারা আমাদেরকে সামরিক দিক-নির্দেশনা দিতে লাগলেন; এমনকি ইরাকি কুর্দিস্তানের রাজধানী ইরবিলের পতন ঠেকালেন। ইরবিলের পতন ঠেকাতে মেজর জেনারেল কাসেম সোলায়মানি ইরবিলে গিয়েছিলেন।”
কমান্ডার মুহান্দিস বলেন, জেনারেল সোলায়মানি ইরবিলে গিয়েছিলেন ইরাক সরকার ও কুর্দিস্তানের আঞ্চলিক সরকারের প্রেসিডেন্ট মাসুদ বারজানির অনুরোধে। পুরো দুই মাস ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিংবা মার্কিন সরকার কেউই কুর্দিস্তানের আঞ্চলিক সরকারকে সহায়তা করে নি।
পপুলার মোবিলাইজেশন ইউনিটের কমান্ডার বলেন, ইরান থেকে সামরিক উপদেষ্টা না পাঠালে এতদিন রাজধানী বাগদাদ দায়েশের নিয়ন্ত্রণে চলে যেত।
তিনি ফালুজা শহরের লড়াই সম্পর্কে জানান, ইরাকের সামরিক বাহিনীর পাশাপাশি মোবিলাইজেশন ইউনিট ও সরকারপন্থি সুন্নি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়েশ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং আশা করা যায় কয়েকদিনের মধ্যে কৌশলগত ফালুজা শহর পুরোপুরি মুক্ত হবে। তিনি জানান, তারা সবাই কম ক্ষতির বিনিময়ে ফালুজা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইছে।
কমান্ডার মুহান্দিস স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, মার্কিন বাহিনীর কাছে বিমান হামলার জন্য সহায়তা চাইবেন না কারণ তারা ব্যাপকমাত্রায় ভবন ও অবকাঠামোর ক্ষতি করে। তিনি বলেন, সাহায্যের নাামে আনবার প্রদেশের রাজধানী রামাদির শতকরা ৮৫ ভাগ ভবন ধ্বংস করেছে মার্কিন বাহিনী।#
source : abna24