আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা –আবনা-: লেবাননের হিজবুল্লাহ বাহিনী প্রধান সৈয়দ হাসান নাসরুল্লাহ্, হিজবুল্লাহ’র শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার হাতেম হাম্মাদাহ ওরফে আলহাজ্ব আলা’র শাহাদতের ৭ম দিনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছেন।
নাসরুল্লাহ তার ভাষণে বলেন: আমি শহীদ আলহাজ্ব হাতেম আল-হাম্মাদী’র পরিবার ও শুভাকাঙ্খীদের প্রতি (তার শাহাদাত প্রাপ্তিতে) অভিনন্দন জানাচ্ছি। তিনি ছিলেন লেবানন ও ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলনের সন্তান। ২০০০ সালের যুদ্ধে দক্ষিন অঞ্চলের এয়ার ডিফেন্সে’র দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন তিনি। এছাড়া তিনি ২০০৬ সালের যুদ্ধে সমগ্র লেবাননের এয়ার ডিফেন্সের দায়িত্বে ছিলেন।
হিজবুল্লাহ প্রধান আরো বলেন: শহীদ আলা ছিলেন ঐ সকল কমান্ডারদের একজন যারা তাকফিরিদের আবির্ভাবের পর তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য রণক্ষেত্রে উপস্থিত হয়েছিলেন। আল-কালামুন মুক্তকরণে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন আলহাজ্ব আলা।
তিনি বলেন: আজ আমরা লেবাননে যে নিরাপত্তা ভোগ করছি তা শহীদদের রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে। অতএব, শহীদদের মর্যাদাকে উপলব্ধি করতে হবে। এ আত্মত্যাগের জন্য তাদের পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো আমাদের কর্তব্য।
সৈয়দ হাসান নাসরুল্লাহ তার ভাষণে সিরিয়ার বিষয় উল্লেখ করে বলেন: আলেপ্পোর যুদ্ধ কৌশলগত ও রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এ যুদ্ধ গোটা মধ্যপ্রাচ্যের জন্য নিষ্পত্তিমূলক যুদ্ধ হিসেবে বিবেচিত। একইভাবে মসুলে’র অভিযানও অত্যন্ত গুরুত্ববহ।
হিজবুল্লাহ প্রধানের সংযোজন: সিরিয় সেনাবাহিনী ও প্রতিরোধ আন্দোলন কর্তৃক সিরিয়ার সশস্ত্র ব্যক্তিদেরকে ঘেরাওয়ের কারণে তারা সিরিয়া থেকে লেবাননে গাড়ীবোমা পাঠাতে ব্যর্থ হচ্ছে। আমরা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ইস্যুগুলো পর্যালোচনার পর সিরিয়ায় উপস্থিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আলেপ্পো’র সংঘর্ষে আলহাজ্ব আলা’সহ হিজবুল্লাহ’র বেশ কয়েকজন যোদ্ধা শহীদ হয়েছেন।
তিনি ইয়েমেনের উপর সৌদি আগ্রাসন প্রসঙ্গে বলেন: ইয়েমেনে প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি মানুষ অবরুদ্ধ হয়ে আছে। ইয়েমেনে আযাদারীর অনুষ্ঠানে (সৌদি বিমান) হামলায় শত শত ব্যক্তির শাহাদাতের বিষয়ে (জাতিসংঘের) নিরাপত্তা পরিষদ, আন্তর্জাতিক সমাজ এবং ইসলামি ও আরব দেশগুলোর অবস্থান কোথায়?
সিরিয়া ও ইরাকের বিষয়ে তুরস্কের হস্তক্ষেপের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন: আনকারা আগামীকাল বলবে, আলেপ্পোও তুরস্কে’র, সিরিয়দের নয়; যেভাবে মসুলের বিষয়ে তারা আজ দাবী করছে। আত্মরক্ষার (উদ্ভট) বাহানায় তুরস্ক মসুলে যুদ্ধ করতে চায়। কিন্তু ইরাকের স্বেচ্ছাসেবী গণবাহিনী’র (পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্স) দায়েশ বিরোধী প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধকে তারা অবৈধ জ্ঞান করে।
তার সংযোজন: ক্লিন্টন এ কথা স্বীকার করেছেন যে, সৌদি আরবসহ বেশ কয়েকটি দেশ দায়েশের (আইএসআইএল) জন্মদাতা। কেউ কি তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে? বিশ্বের কেউ কি দায়েশের পৃষ্ঠপোষক দেশগুলো এবং সন্ত্রাসী এ গোষ্ঠীর অপরাধকর্মের বিষয়ে তদন্তের দাবী জানিয়েছে?
তিনি বলেন: যারাই মনে করেন যে, আমরা বা আমাদের পরিবারের সদস্যরা একসময় ক্লান্ত হয়ে উঠবো, তারা ভুল করছেন। কেননা আমরা ১৯৮২ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ইসরাইলের সাথে যুদ্ধ এবং দক্ষিন লেবাননকে মুক্ত করার পর পরবর্তী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। সিরিয়াতে আমাদের শহীদদের বিষয়ে আমরা গর্বিত, এ বিষয়ে আমরা লজ্জিত নই।
সৈয়দ হাসান নাসরুল্লাহ বলেন: (দায়েশের বিরুদ্ধে) বিজয়ের পর সিরিয়াতে অবস্থানের কোন কারণ নেই আমাদের। বিজয় নিশ্চিত হলেই আমরা লেবাননে ফিরে আসবো। অতএব, সিরিয়াতে বিজয়ী হলে তবেই লেবাননে ফিরবো আমরা। তাকফিরীদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে আমরা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছি এবং তাদেরকে পরাজিত করেছি।#
source : abna24