বাঙ্গালী
Tuesday 26th of November 2024
0
نفر 0

হাসান শাহাতা হত্যার প্রধান আসামীর ১৪ বছর জেল

চাঞ্চল্যকর শেইখ হাসান শাহাতা হত্যা মামলার প্রধান আসামী এবং এর সাথে জড়িত অপর ৩ জনকে ১৪ বছর কারাদণ্ড প্রদান করেছে মিসরের ‘আল-জিজাহ’ প্রদেশের ফৌজদারী আদালত।
হাসান শাহাতা হত্যার প্রধান আসামীর ১৪ বছর জেল
চাঞ্চল্যকর শেইখ হাসান শাহাতা হত্যা মামলার প্রধান আসামী এবং এর সাথে জড়িত অপর ৩ জনকে ১৪ বছর কারাদণ্ড প্রদান করেছে মিসরের ‘আল-জিজাহ’ প্রদেশের ফৌজদারী আদালত।

হলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা –আবনা-: জিজাহ অঞ্চলের ফৌজদারী আদালত মিশরের বিশিষ্ট শিয়া ব্যক্তিত্ব ‘আল্লামা শেইখ হাসান শাহাতা’র হত্যাকারী ‘আহমাদ আল-আখরোস’কে ১৪ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছেন।

আদালত, এ মামলায় ২৩ অভিযুক্তকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড এবং অপর ৮ জনকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছেন।

শেইখ হাসান মুহাম্মাদ শাহাতা, তার ভাই এবং অপর ২ জনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা মামলায় ৩১ জনকে অভিযুক্ত করেছিল মিসরের এটোর্নি জেনারেল।

মামলার এজহারে বলা হয়, ২০১৩ সালের ২৩ জুন, কায়রোর পশ্চিমে অবস্থিত আল-জিজাহ প্রদেশের যাভিয়া আবু মুসলিম গ্রামের শত শত উগ্র যুবক বিশিষ্ট শিয়া আলেম শেইখ হাসান শাহাতা (৫৫), তার ভাই (৩৫) এবং আহলে বাইত (আ.) এর অপর দুই অনুসারীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে তাদের লাশ টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে আসে।

নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা থেকে ধারণকৃত ভিডিওতে দেখা গেছে, মিসরীয় ঐ শিয়া আলেমের হত্যাকাণ্ডে জড়িত উগ্র ব্যক্তিরা অমানবিকভাবে শেইখ হাসান শাহাতা ও তার সাথীদেরকে হত্যার পর চরম বর্বরতার সাথে পায়ে রশি বেধে লাশগুলোকে নিয়ে রাস্তায় টেনে বেড়ায়।

এ ঘটনায় ঐ সময় মিসরের অভ্যন্তর ও বহির্বিশ্বে তুমুল সমালোচনার ঝড় ওঠে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাও এর নিন্দা জানিয়েছিল।

শেইখ হাসান শাহাতা ১৯৪৬ সালে মিসরের আশ-শারকিয়া প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবারের সদস্যরা ছিলেন হানাফি মাযহাবের অনুসারী। ১৯৯৬ সালে ৫০ বছর বয়েস তিনি মহানবি (স.) এর আহলে বাইতের (আ.) মাযহাবকে নিজের অনুকরণীয় মাযহাব হিসেবে বেছে নেন। তিনি মারকাযুল কারায়াত থেকে সায়েন্স অব কুরআন বিষয়ে স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

মাত্র ১৩ বছর বয়সে নিজ গ্রামের মসজিদে সর্বপ্রথম জুমআর খোতবা প্রদানকারী শেইখ শাহাতা সশস্ত্র বাহিনীতে বাধ্যতামূলক সেবা প্রদানের সময়ও এ দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখেন। এছাড়া মিসর সেনাবাহিনী’র প্রকৌশলী ইউনিটের মনোবল বৃদ্ধির দায়িত্বেও তিনি নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৭৩ সালে তিনি রেডিও ও টেলিভিশনে নিয়মিত সক্রিয় ছিলেন।

শেইখ শাহাতার ভাষ্যানুযায়ী, আমিরুল মু’মিনীন (আ.) এর ব্যক্তিত্বের প্রশংসায় তার পিতা তাকে বলেছিলেন, হে আমার পুত্র! আমিরুল মু’মিনীন (আ.) ছিলেন ইসলামের প্রধান সমর্থক ও সাহায্যকারী। যখন আলী (আ.) মহানবি (স.) এর পাশে থাকতেন, তখন তাঁকে কষ্ট দেয়ার সাহস কেউই দেখাত না।

তার সংযোজন: দীর্ঘ ২০ বছর সুফিদের সাথে থেকে এ ফলাফলে পৌঁছাই যে, তারা বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত। ওয়াহাবিরা ঐ শাখার অন্যতম; যারা ইসলাম ধর্মের ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করছে। তারা নিজেদের আকিদাকে এ বাতিল ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করেছে যে, কোন ইমামকেই তারা স্বীকার করে না। তারা শুধু ‘ইবনে তাইমিয়া’কে মানে। এমনকি সম্মান প্রদানের ক্ষেত্রে তারা ইবনে তাইমিয়াকে মহানবি (স.) এর চেয়েও এগিয়ে রাখে।

তিনি মিসরের ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শাসক হোসনি মোবারকের শাসনামলে (৩ দশক) ৩ বছর কারাভোগ করেন। এ সময় তার বিদেশ ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল।

মিসরের সনামধন্য শেইখদের অন্তর্ভুক্ত করে তাকে আল্লামা (স্যার) উপাধি দান করেছিল দেশটির গণমাধ্যম। এছাড়া তিনি আল-আযহারের শেইখ ও আলেমদের একজন এবং কায়রোর সর্ববৃহত মসজিদগুলোর একটির পেশ ইমাম। ‘রেডিও, টিভি ও বিভিন্ন মসজিদে আয়োজিত ‘আল-ইলম’ অনুষ্ঠানমালার পরিচালকও ছিলেন তিনি।

মিসরের জনগণ তাকে এমন একটি মসজিদের পেশ ইমাম হিসেবে চেনে, যা ইসরাইলি দূতাবাসের পাশে অবস্থিত। মুসল্লিরা জুমআর দিন তার খোতবা শুনতে ঐ মসজিদে ভীড় জমাতো। তারা আহলে বাইত (আ.) এর সত্যতা এবং বেলায়েতের সমর্থনে প্রদত্ত তার খোতবাগুলো শুনতে ঐ মসজিদে সমবেত হত। শেইখ শাহাতাকে সর্বদা সত্যের প্রতি আহবানকারী হিসেবে জানতো মিসরের জনগণ। কারণ তিনি সবসময় জায়নবাদীদের সমালোচনা করতেন এবং তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতেন। তার জুমআর নামাযগুলো সবসময়ই বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হত।

অনেক গন্যমান্য ব্যক্তিত্বই শেইখ শাহাতার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছেন, যাদের মধ্যে শেইখ তানতাভি’র নাম উল্লেখযোগ্য।

বলা হয় যে, তিনি মহানবি (স.) কে স্বপ্নে দেখেছিলেন। আর তিনি (স.) তাকে আলী (আ.) এর বেলায়েত এবং আহলে বাইত (আ.) এর সমর্থনে মেম্বর ও গণমাধ্যমে কথা বলার বিষয়ে তাগিদ দিয়েছিলেন। আর তাই বলা হয়, যেহেতু শেইখ তার কথাগুলোকে অন্তর থেকে বলতেন তাই সেগুলো মানুষের অন্তরে স্থান করে নিত এবং জনগণকে তার বক্তৃতার প্রতি আকৃষ্ট করতো।#

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইন্তিফাদার ...
আবনা : ইয়েমেন আগ্রাসীদের ...
সিরিয়া- লেবানন অভিন্ন সীমান্তে ...
বাহরাইনে ইমাম হোসাইন (আ.)এর ...
পশ্চিমবঙ্গে প্রবীণ খ্রিস্টান ...
মোরায় কক্সবাজারে দুই শতাধিক ...
ক্যান্সার দিবস : যে লক্ষণগুলো ...
আনসারুল্লাহ'র দখলে সৌদি আরবের ...
২৮০ জন শরণার্থীকে সমুদ্রে ...
সন্ত্রাসবাদ রুখতে ঐক্যবদ্ধ ...

 
user comment