আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা –আবনা-: বৃহস্পতিবার (১১ মে) ইমাম মাহদি (আ.) এর পবিত্র জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ইনকিলাব-এ-মাহদী মিশন, যশোর এবং আহলুল বাইত (আ.) ফাউন্ডেশন, খুলনা -এর যৌথ উদ্যোগে “সোনালী আলোর অপেক্ষায়” শীর্ষক সেমিনার আয়োজিত হয়েছে।
ইনকিলাব-এ-মাহদী মিশন এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ওস্তাদ মল্লিক আব্দুর রউফে’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ঐ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাওযা ইলমিয়া কোমে’র বিশিষ্ট গবেষক ও শিক্ষক হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন ড. মোহাম্মাদ শাহবাজিয়ান। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আঞ্জুমানে রূহানীর সেক্রেটারী হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা সৈয়দ হাবীব রেজা হুসাইনী এবং বিশিষ্ট মৎস গবেষক মোঃ মোস্তফা খান ফিরোজ।
ইনকিলাব-এ-মাহদী মিশনের পরিচিতি নিয়ে আলোচনা রাখেন সংগঠনটির পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম। এছাড়াইসলামি শিক্ষা কেন্দ্র, খুলনা এর শিক্ষকবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ সাজ্জাদ হুসাইন ও হুজ্জাতুল ইসলাম আনিসুর রহমান প্রমূখ।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সাহিদুল ইসলাম বাবু। অনুষ্ঠানের প্রথম অধিবেশনে হামদ-নাত ও কবিতা আবৃতি করেন সাদিকা ইসলাম সারা, সহিফা ইসলাম আচল, রওশন আরা রশ্নি ও তাহেরা খাতুন বর্ষা প্রমূখ।
সভায় মূলতঃ “প্রত্যেককেই তাঁর যুগের ইমামের সাথে ডাকা হবে”- পবিত্র কোরআনের এই আয়াত এবং “যে ব্যক্তি তার যুগের ইমামকে না চিনে মৃত্যুবরণ করবে তার মৃত্যু হবে জাহেলিয়াতের মৃত্যু” -এ হাদীসসহ ইমামতের বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোকপাত করা হয়।
আলোচনা সভার বক্তাদের বক্তৃতায় নিন্মোক্ত বিষয়াদি ফুটে উঠেছে:
মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মনোনীত পবিত্র ইসলাম ধর্মকে যারা সাম্প্রদায়িকতার জালে বন্দী রেখেছে তারাই শত শত বছর ধরে নিপীড়তের উপর জুলুম ও শোষণ করে আসছে। কোন সাম্প্রদায়িক জালে আবদ্ধ না হয়ে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত কোরআন এবং তাঁর প্রেরিত মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও তার পবিত্র আহলে বাইত (আঃ) গণের প্রদর্শিত ইসলাম ধর্মের অনুসরণ করতে হবে। যে ধর্মে রয়েছে মজলুমের অধিকার।যেখানে রয়েছে পরকালীন চির মুক্তি। হাশরের দিন “প্রত্যেককেই তার যুগের ইমামের সাথে ডাকা হবে” -কোরআনের এই আয়াতের বাস্তবতায় আমরা সকলেই যেন বলতে পারি আমাদের যুগের ইমাম বা অবিভাবক হচ্ছেন ইমাম মাহদী (আ.)। ইমাম মাহদী (আ.) এই পৃথিবীতে কোন ফেরকা বা মাজহাবের অনুসারীদেরকে মুক্তি দিতে আসবেন না। বরং তিনি বিশ্ব মানবজাতির সকলের জন্য হেদায়েতকারী ও মুক্তিদাতা হয়ে আসবেন। তিনি এ পৃথিবীতে সমগ্র মানবজাতির নেতা হিসাবে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আসবেন। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের সাক্ষ্যানুযায়ী প্রতিটি যুগে, বিশ্বের সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে হতে একাংশ সৎ, খোদাভীরু, জ্ঞানী ও পবিত্র আত্মার অধিকারী মানুষ আজও তাঁর জন্য অপেক্ষমান। আর এ বিষয়ে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। কেননাবিষয়টি বিশ্ববাসীর সামনে স্বচ্ছ ও স্পষ্ট যে, সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) শুধুমাত্র মুসলিম জাতির জন্য নয়, বরং গোটা মানবজাতির জন্য পথনির্দেশক হয়ে এসেছেন। আর নবী ও রাসূলগণ (আ.) এর শিরোমনি হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর এই মিশনকে পূর্ণতা দান করার জন্য তাঁরই পবিত্র বংশের ইমামতের ধারায় ১২তম বা শেষ হাদীকে (পথনির্দেশক) মহান আল্লাহ মনোনীত করেছেন; যিনি মুসলিম জাতির কাছে ইমাম মাহদী (আ.) নামে পরিচিত। সনাতন ধর্মে কলকি অবতার নামে পরিচিত, বৌদ্ধ ধর্মে গৌতম মহা বৌদ্ধ নামে পরিচিত। এরূপে বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন গ্রন্থে ভিন্ন নামে পরিচিত হলেও মহান স্রষ্টার পক্ষ থেকে শেষ যুগে মানবজাতির মুক্তির জন্য একজন ত্রাণকর্তা ও মুক্তিদাতা আসবেন। সচেতন ও জাগ্রত মানুষের মাঝে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
তাই গোটা মানবজাতির কাছে আহবান রাখছি সকল সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বকে পিছনে ফেলে মহান স্রষ্টার পক্ষ থেকে তাঁর নির্বাচিত প্রতিনিধি বা পয়গাম্বারদের অর্থাৎ আদম (আঃ) থেকে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) পর্যন্ত মহান আল্লাহর এই প্রতিনিধিদের সূত্র ধরে ইমাম মাহদী (আঃ)-এর মারেফাত বা পরিচয় জানার জন্য অধ্যবসায়ের সাথে একাগ্রচিত্তে সকলের উচিত গবেষণা করা। আর জুলুম শাসকদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানানো। আর পাশাপাশি মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করা যেন তিনি আমাদের মুক্তিদাতা ও প্রতিশ্রুত অবিভাবক ইমাম মাহদি (আ.) এর আবির্ভাবকে ত্বরান্বিত করেন।#