আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): সাম্প্রতিককালে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার প্রতিবাদে পারাচিনারের জনগণের অনশন ষষ্ঠ দিনে গড়িয়েছে।
গত সপ্তাহে পারাচিনার শহরে দু’টি বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ১০০ জন শহীদ এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যক্তি আহত হন। স্থানীয় সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানা গেছে যে, পারাচিনার শহরের কেন্দ্রীয় বাজারে পৃথক পৃথক স্থানে বোমা দু’টির বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ১৫০ জনের অধিক ব্যক্তি শহীদ হন।
স্থানীয় ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিগণ এবং সরকারি ও বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ বিপুল সংখ্যক জনগণ এ অনশনে অংশ নিচ্ছেন।
অনশনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সেনবাহিনী প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খান নিজেই পারাচিনার সফর না করছেন ততক্ষণ এ অনশন অব্যাহত থাকবে।
তাদের ভাষ্য: পাকিস্তানে শিয়া হত্যা বিশেষতঃ পারাচিনারের জনগণ হত্যা পরিকল্পিত। শিয়া হত্যা ইস্যুতে সরকার বৈষম্যপূর্ণ নীতি অবলম্বন করেছে।
অনশনে অংশগ্রহণকারী বক্তারা বলেন: গত এক দশক ধরে পাকিস্তান সরকার পারাচিনারের জনগণকে অবহেলার দৃষ্টিতে দেখেছে। এ সময় বিভিন্নভাবে তাদের অধিকার পদদলিত হয়েছে। প্রথমে পারাচিনার এলাকাটি জঙ্গীগোষ্ঠী তালেবান ঘেরাও করে এ শহরের দিকে আসা সকল রুট বন্ধ করে দেয় তারা। কিন্তু এ অঞ্চলের জনগণ আত্মরক্ষা ও ভূখণ্ড রক্ষায় তালেবানের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
অনশনে বক্তৃতাকালে, পারাচিনারের জনগণের ক্ষুন্ন অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি সাম্প্রতিককালের ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের প্রতি আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্য পাক সরকারের প্রতি আহবান জানান বক্তরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্ট আহমাদপুর এলাকা সফর এবং ট্যাংকার বিস্ফোরণ ট্রাজেডিতে ক্ষতিগ্রস্থদের পরিবারের সাথে তার সাক্ষাতের প্রতি ইঙ্গিত করে বক্তারা বলেন: পারাচিনারের জনগণের জীবন কি এতটাই মূল্যহীন যে, এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটা সত্ত্বেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একাবারের জন্যও পারাচিনার সফরে আসতে চান না।
আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকেও জনগণ সমবেদনা জানাতে জড়ো হয়েছে পারাচিনারে এবং তাদের অনেকেই ঐ অনশনে অংশগ্রহণ করছেন। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে পারাচিনারের ঐ অনশনে ৬৫ হাজার লোক অংশগ্রহণ করছেন।
এদিকে, পারাচিনারের শিয়াদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন ও সমর্থন জানাতে পাকিস্তানের করাচী, লাহোর, ইসলামাবাদ, কুয়েত্তা, সাখার, স্কার্দু ও হায়দ্রাবাদসহ বিভিন্ন শহরের শিয়ারা অনশন ও বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে।#